পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

SHARE

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মোবাইল চুরির অভিযোগে এজাহার মিয়া (২৭) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার ও স্থানীয় এলাকবাসী পুলিশ কর্মকর্তাসহ হত্যায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করেছে।

আজ মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকালে উপজেলার ভাটিয়ারী ইউনিয়নের বালুর রাস্তা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তিনি উপজেলার ভাটিয়ারী ইউনিয়নের অলিকাজির বাড়ির মোহাম্মদ মুফিজের ছেলে। লামিয়া নামে তার দেড় বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে।

এদিকে এ ঘটনার পর অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা রায়হান ও তার ভগ্নিপতি মিজানুর রহমানকে আটক করার সত্যতা নিশ্চিত করেছে চট্টগ্রাম জেলা এসপি নুর আলম মিনা। অন্যদিকে এজাহারের মৃত্যুতে তার স্ত্রী ও পরিবারের লোকজনের বুকফাটা আহাজারিতে শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।

নিহত এজাহার মিয়ার শাশুড়ি মরিয়ম বেগম বলেন, মোবাইল চুরির মিথ্যা অভিযোগে সোমবার রাত সাড়ে নয়টায় চট্টগ্রাম পুলিশ লাইনে কর্মরত এসআই রায়হান মোবাইল ফোনে ডেকে এজাহারকে তার নিজ বসতবাড়ি ভাটিয়ারী কলেজপাড়ায় নিয়ে যায়। এ সময় পুলিশ কর্মকর্তা রায়হান, তার বোন, শ্যালক ও তার স্ত্রী মিলে এজাহারের হাত পা রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক পিটুনি দেয়। এক পর্যায়ে আমি তার প্রতিবাদ করলে তারা আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে গালমন্দ করেন। এ সময় তারা মোবাইল ফোন ফেরত না দিলে এজাহারকে ছাড়া হবে না বলে জানান।

এরই মধ্যে মঙ্গলবার ভোররাত ৫ টার সময় একটি সাদা মাইক্রো করে এজাহারকে মুমূর্ষুআবস্থায় ভাটিয়ারী-হাটহাজারী লিংক রোড়ে নিয়ে ব্রিজ এলাকায় একটি ব্যাটারিচালিত রিকশায় করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। এ সময় তার অবস্থার অবনতি দেখে স্ত্রী পপি ও শাশুড়ি তাকে স্থানীয় বিএসবি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় তার মৃত্যু হয়।

নিহত এজাহার মিয়ার স্ত্রী পপি আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, আমার স্বামীকে তারা মোবাইল চুরির মিথ্যা অপবাদে নির্মম প্রহার করে হত্যা করেছে। সে যদি সত্যিকারের অপরাধী হয় তাহলে তাকে পুলিশে দিতে পারতো।

তিনি আরো বলেন, মোবাইল চুরির মিথ্যা নাটক সাজিয়ে যারা আমার স্বামীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমার মাসুম কন্যাকে পিতৃহারা করেছে তাদের যেন কঠোর শাস্তি হয়।

সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি (তদন্ত) শামীম শেখ জানান, নিহত যুবকের মৃতদেহ ভাটিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে রেখে পরিবার ও এলাকাবাসীর বিক্ষোভ করার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রায়হান ও তার ভগ্নিপতি মিজানুর রহমানকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তের পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।