কাচ্চি বিরিয়ানি

SHARE

kacci-biryani-online-dhaka-comপুরনো ঢাকা মানেই যেন জিভে জল এসে যাওয়ার মতো সব খাবার-দাবার। স্বাদে, গন্ধে ও গুণগতমানে কোনটিই কোনটির চেয়ে কম নয়। এমন ধরনের একটি খাবার হচ্ছে কাচ্চি বিরিয়ানী। পুরনো ঢাকার কাজী আলাউদ্দিন রোড, নাজিমুদ্দিন রোড, উর্দ্দু রোড, বংশাল, সিদ্দিকবাজার, চকবাজার, নবাবপুর, ইসলামপুর, ওয়ারী, মালিটোলা এবং মৌলভীবাজার এলাকায় কাচ্চি বিরিয়ানীর দোকানগুলো গড়ে উঠেছে। ভাল মান এবং ভাল স্বাদের জন্য কাজী আলাউদ্দিন রোডের হাজীর বিরিয়ানী, হানিফ বিরিয়ানী, মৌলভীবাজার রোডের নান্না মিয়ার বিরিয়ানী, উর্দ্দু রোডের রয়েল বিরিয়ানী, নারিন্দার ঝুনার কাচ্চি বিরিয়ানী, মালিটোলার ভুলুর বিরিয়ানী, নবাবপুরের ষ্টার হোটেলের কাচ্চি বিরিয়ানী, সুরিটোলার রহিম বিরিয়ানী এবং নাজিমুদ্দন রোডের মামুন বিরিয়ানী ঢাকায় বিখ্যাত। এখানে প্রস্তুতকৃত কাচ্চি বিরিয়ানির অতুলনীয় স্বাদ এবং গন্ধের কারনে ঢাকার বিভিন্ন প্রান্তের লোকজন ছুটে আসেন এই পুরনো ঢাকায়। দোকানগুলোর পাশ দিয়ে হেঁটে গেলেই সুস্বাদু কাচ্চি বিরিয়ানির সুঘ্রাণ পাওয়া যায়।

১৯৩৯ সালে এক ডেকচি বিরিয়ানি নিয়ে হাজি মোহাম্মদ হোসেন বিরিয়ানির দোকান দিয়েছিলেন পুরনো ঢাকার কাজী আলাউদ্দিন রোডে । তারপর তাঁর ছেলে হাজি গোলাম হোসেন বাবার ব্যবসার হাল ধরেন। ধীরে ধীরে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে হাজির বিরিয়ানির নামডাক। সেই হাজির বিরিয়ানি এখন পুরান ঢাকা, মতিঝিল বিমানঅফিস ও বসুন্ধরায় আবাসিক এলাকায় তিনটি দোকান নিয়ে সাফল্যের সাথে ব্যবসা করে যাচ্ছে। এখানে শুধু কাচ্চি বিরিয়ানী বিক্রি হয়। হাজীর বিরিয়ানিতে বিরিয়ানি রান্নায় ঘি/বাটার অয়েল এর পরিবর্তে শুধু সরিষার তেলের ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

কা্চ্চি বিরিয়ানীর জন্য কাজী আলাউদ্দিন রোডে হানিফ বিরিয়ানীর যথেষ্ট নামডাক রয়েছে। এখানে কাচ্চি বিরিয়ানীর পাশে রয়েছে শাহী মোড়গ পোলাই, খাসির রেজালা, লাবাং।

১৯৬২-৬৩ সালের দিকে পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারে বিরিয়ানি দিয়েই এখানকার মানুষের দৃষ্টি কাড়েন বাবুর্চি নান্না মিয়া। এখানে কাচ্চি বিরিয়ানীর পাশে রয়েছে শাহী মোড়গ পোলাও, খাসির রেজালা, লাবাং।

পুরনো ঢাকার নবাবপুরে স্টার হোটেলে সব ধরনের খাবার বিক্রির পাশাপাশি এখানে তৈরী বিরিয়ানী আইটেমের মধ্যে কাচ্চি বিরিয়ানী প্রচুর বিক্রি হয়।

লালবাগের উর্দ্দু রোডের রয়েল বিরিয়ানীর কাচ্চি বিরিয়ানী খুবই সুস্বাদু। এখানে প্যাকেটজাত কাচ্চি বিরিয়ানী বিক্রির পাশাপাশি ৩জনের জন্য এক বোল হিসেবে বিক্রি করা হয়।

নর্থসাউথ রোডের আল-রাজ্জাক হোটেলের কাচ্চি বিরিয়ানীর যথেষ্ট নামডাক রয়েছে।

কাচ্চি বিরিয়ানীর আয়োজন শুরু হয় বেলা ১২ টা থেকে। পূর্বে হাজীর বিরিয়ানী বিক্রি শুরু হতো সন্ধ্যা ৬ টা থেকে। সন্ধ্যা ৬টা থেকে কাজী আলাউদ্দিন রোডে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যায়। বর্তমানে সকাল বেলা, দুপুর এবং রাত, এই তিন বেলা কাচ্চি বিরিয়ানী পাওয়া যায়। নান্না মিয়া এবং রয়েলের বিরিয়ানীও ঠিক একই সময় বেলা ১২ টা থেকে পাওয়া যায়। ঠিক একইভাবে অন্যান্য বিরিয়ানী দোকানগুলো সেই সময় কাচ্চি বিরিয়ানী বিক্রয় করে থাকে।

পুরাতন ঢাকায় প্রচুর বিরিয়ানির দোকান রয়েছে। এখানে স্বল্পমূল্যে সুস্বাদু মুখরোচক খাবার কাচ্চি বিরিয়ানি পাওয়া যায়।