রণকৌশল ঠিক করতে মমতা-চন্দ্রবাবুর বৈঠক

SHARE

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু। আজ সোমবার কলকাতায় মোদিবিরোধী জোট গঠনে তৎপর এই দুই নেতার বৈঠক হয় ।

ভারতের লোকসভার ৫৪৩ আসনের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ গতকাল রোববার সম্পন্ন হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার এই নির্বাচনের ফলাফল গণনা করা হবে। এর আগে অবশ্য গতকাল রাতেই ভারতের বিভিন্ন টিভি চ্যানেল বুথফেরত সমীক্ষায় ইঙ্গিত দিয়েছে, দিল্লিতে ফের সরকার গড়তে চলেছে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ। আর প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন নরেন্দ্র মোদিই। পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের লোকসভার ৪২ আসেনে বুথফেরত সমীক্ষায় ইঙ্গিত দেওয়া হয়, বিজেপির এবার উত্থান ঘটবে পশ্চিমবঙ্গে। ৪২ আসনের মধ্যে বিজেপি এবার দুই অঙ্কের সংখ্যার আসনে জিততে চলেছে। তবে বুথফেরত সমীক্ষাকে প্রত্যাখ্যান করে মমতা। বলেছেন, এবার বিজেপি ইভিএম বা ভোটযন্ত্রকে কারচুপি করে জয়ের পাঁয়তারা করতে পারে। এমনকি স্ট্রং রুমে থাকা ইভিএমকে পাল্টিয়ে নতুন ইভিএম ঢুকিয়ে জেতার ষড়যন্ত্র করতে পারে। তাই মমতা ইভিএম পাহারার জন্য সজাগ থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন।

ইভিএম কারচুপির অভিযোগকে উড়িয়ে না দিয়ে বরং মমতার আশঙ্কাকে মেনে নিয়েছেন চন্দ্রবাবু। তিনি আজ বিকেলে কলকাতায় আসেন। এসেই তিনি সোজা চলে যান মমতার কালীঘাটের বাসভবনে। সেখানেই এই দুই মুখ্যমন্ত্রী একান্তে কথা বলেন। রণকৌশল নিয়ে বিভিন্নমুখী আলোচনা করেন। আলোচনা চলে ৪৫ মিনিট। তবে তিনি বৈঠক থেকে বেরিয়ে এবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি।

মমতা-চন্দ্রবাবু নাইডুর গড়া ইউনাইটেড ইন্ডিয়া জোটে রয়েছে ২৮টি রাজনৈতিক দল। চন্দ্রবাবু নাইডু ইতিমধ্যে কথা বলেছেন কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী, সোনিয়া গান্ধী, সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব, বহুজন সমাজপার্টির নেত্রী মায়াবতী, সিপিএমের নেতা সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গে। এবার কথা বলতে এসেছেন মমতার সঙ্গে। উত্তর প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব চন্দ্রবাবু নাইডুকে জানিয়ে দিয়েছেন, বুথফেরত সমীক্ষা যাই দিক না কেন, তাঁদের এসপি-বিএসপি জোট উত্তর প্রদেশে ৫০টি আসনে জিততে চলেছে।

এদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, বুথফেরত সমীক্ষায় যা বলেছে, তা-ই ঘটতে চলেছে এবার। দিল্লিতে সরকার গড়বেন মোদি। পশ্চিমবঙ্গে ২৩ আসন পাবে বিজেপি। তিনি এ কথাও বলেছেন, বিভিন্ন দল থেকে ইতিমধ্যে শতাধিক নেতা বিজেপিতে যোগদানের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। আর প্রধানমন্ত্রী মোদিও প্রচারে গিয়ে বলেছিলেন, ৪০ জন সাংসদ, বিধায়ক বিজেপিতে যোগদানের আগ্রহের কথা প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন।

এদিকে গতকালের নির্বাচনের পর আজ পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু এলাকায় তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ হয়েছে। এই সংঘর্ষে বিজেপির বেশ কজন কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছেন। তাঁদের বাড়িঘর ভেঙে দিয়েছেন তৃণমূলের সমর্থকেরা। কলকাতার উপশহরের জগদ্দল থানায় বিজেপির সমর্থকেরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। অবরোধ করেছেন সড়ক, মহাসড়ক এবং যানবাহন চলাচল। সংঘর্ষ হয়েছে মথুরাপুর, দক্ষিণ দমদম, জয়নগর, মানিকতলা, হাবড়াসহ আরও কয়েকটি স্থানে। হাবড়ায় গাড়ি ভাঙচুরও হয়েছে।