ক্ষোভে ফুঁসছে ভারত

SHARE

জম্মু-কাশ্মীরে ভারতের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠার পর, ক্রমেই অবনতি হচ্ছে দিল্লী-ইসলামাবাদ কুটনৈতিক সম্পর্কের। পাল্টাপাল্টি রাষ্ট্রদূত তলবের পর, পাকিস্তান থেকে নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে ভারত।

এদিকে নিরাপত্তা বাহিনীর ৪৪ সদস্য নিহত হওয়ায় শোকের পর এবার ক্ষোভে ফুঁসছে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর। কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীর সহিংস প্রতিবাদের পর জম্মুতে কারফিউ জারি করা হয়েছে।

পাকিস্তান নিপাত যাক, ইমরান খান নিপাত যাক- শুক্রবার দিনভর এই স্লোগানে মুখর ছিল ভারতের জম্মু-কাশ্মীর। সন্ত্রাসী হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় অর্ধশত সদস্য নিহত হওয়ার পর, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা। পাকিস্তানের পতাকা পোড়ানোর পাশাপাশি, তারা ভাঙচুর করে বেশ কয়েকটি গাড়ি।

এ হামলার সঙ্গে পাকিস্তান সরাসরি জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রতিনিয়ত আমাদের সেনারা মারা যাচ্ছে। এ অবস্থা আর চলতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী মোদিকে অনুরোধ করবো সার্জিকাল স্ট্রাইক না, পাকিস্তানকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার পদক্ষেপ নিন।

কাশ্মীরে এমন প্রতিবাদ-বিক্ষোভের মধ্যেই নিহত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মরদেহ রাজধানী দিল্লীতে নেওয়া হয়। পালাম বিমানবন্দরে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এসময় প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধীসহ দেশের শীর্ষ রাজনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে কাশ্মীরের শ্রীনগরে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। নিজ কাঁধে বহন করেন নিহতদের কফিন। এছাড়াও হামলায় আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান তিনি।

ভারত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী এই হামলার শক্ত জবাব দেবে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য তাদের আহ্বান জানাবো। আমরা জানি এই যুদ্ধে আমাদেরই জয় হবে।

আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী এ-হামলার শক্ত জবাব দেবে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য তাদের আহ্বান জানাবো। আমরা জানি, এ যুদ্ধে আমাদেরই জয় হবে। আর শান্ত থাকার জন্য আমি জম্মু কাশ্মীরের সাধারণ মানুষদের প্রতি আহ্বান জানাবো।

গত বৃহস্পতিবার কাশ্মীরের অবন্তীপুরে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর থেকেই, প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের শুরু হয়েছে শীতল যুদ্ধ। হামলার পেছনে ইসলামাবাদের ইন্ধন রয়েছে এমন অভিযাগ করে, দেশটিকে একঘরে করার হুমকি দেয় ভারত। নয়াদিল্লীর এমন হুমকির পর শুক্রবার রাতে ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত অজয় বিসারিয়াকে তলব করে পাকিস্তান।

এর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে, শনিবার সকালে ভারতে নিযুক্ত পাকিস্তানি দূত সোহেল মাহমুদকে তলব করে কড়া বার্তা দেয় নয়াদিল্লী। নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলাকারী জইশ ই মোহাম্মদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তাকে তাগিদ দেয় ভারত। একইসঙ্গে পাকিস্তান থেকে নিজেদের দূত প্রত্যাহারেরও ঘোষণা দেওয়া হয়।

এদিকে একাধিক ভারতীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার কারণে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালাতে পারে ভারতীয় সেনাবাহিনী।