অনলাইনে ভারতীয় ভিসার টোকেনের নামে প্রতারণা

SHARE

ভারতীয় ভিসার জন্য ই-টোকেন মিলছে এক দিনেই- এমন  বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে অনলাইনে প্রতারণা থামছে না। ভারতীয় হাইকমিশন থেকে এ বিষয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও জানানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কয়েকজনকে আটকও করছে। তবে পুরোপুরি বন্ধ হচ্ছে না এ প্রতারণা।image_109053_0

ভারতীয় দূতাবাসের নিয়ম অনুযায়ী, ভিসাপ্রার্থীরা অনলাইনে ফরম পূরণ করলে ওয়েবসাইট থেকে একটি ‘ই-টোকেন’ ও সাক্ষাৎকারের তারিখ পাবেন। নির্ধারিত তারিখে ওই টোকেন ও পূরণ করা ফরমের প্রিন্টেড কপিসহ আবেদনকারীকে সাক্ষাৎকারের জন্য দূতাবাসে উপস্থিত থাকতে হবে।

নিয়ম মেনে ওয়েবসাইটে গিয়ে ফরম পূরণ করা হলেও সাক্ষাৎকারের তারিখ ও ই-টোকেন পাওয়া যায় না বলে আবেদনকারীদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ। ওয়েবসাইটে তারিখ পাওয়া না গেলেও একটি চক্র অর্থের বিনিময়ে ই-টোকেনের ব্যবস্থা করে দেয় বিভিন্ন দোকানে। আবার টোকেন করার কথা বলে অনলাইনে বিজ্ঞাপন দিয়ে একটি চক্র প্রতারণা করে যাচ্ছে।

দালালদের কিছু দোকানে এক থেকে দুই হাজার টাকায় ভারতীয় ভিসার সাক্ষাৎকারের তারিখ পাচ্ছেন অনেকে। অভিযোগ রয়েছে ভারতীয় হাইকমিশনের কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে এসব দালালের সম্পর্ক আছে।

গত ৩ আগস্ট প্রতারকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে ভারতীয় দূতাবাস। এরপর বিষয়টি তদন্তের জন্য পুলিশ সদর দফতর হয়ে অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) যায়।

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (অরগানাইজড ক্রাইম) মো. আশরাফুল ইসলাম নতুন বার্তা ডটকমকে জানান, সিআইডির সাইবার ক্রাইম স্কোয়াড গত বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর খিলগাঁও থেকে একজনকে গ্রেফতার করেছে।

তিনি জানান, গ্রেফতার হওয়া শফিকুল ইসলাম বনি (২৩) গোপলগঞ্জের কাশিয়ানি উপজেলার চাপ্তা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ‘ইন্ডিয়ান ভিসা সাপোর্ট’-নামে ফেসবুকের মাধ্যমে প্রতারণা করে আসছিলেন। তার বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা দিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। পরে সিআইডির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

অনলাইনের বিজ্ঞাপনে সাড়া দিয়ে অনেকে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। এমন একজন ভুক্তভোগী একটি ট্যুর ফার্মের মালিক। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, তার গ্রাহকদের ভারতীয় ভিসার জন্য ই-টোকেন করতে সমস্যা হওয়ায় তিনি একটি ফার্মকে ২০ জনের কাগজপত্র দিয়েছেন। তাদের মধ্যে পাঁচজন ব্যক্তি আছেন খুবই সম্মানিত। পরে ওই ফার্ম থেকে দেয়া ই-টোকেন নিয়ে ভিসা আবেদনকারীরা ভারতীয় দূতাবাসে গিয়ে অপমানিত হয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগ সাইট ফেসবুক ও অনলাইনে বেচাকেনার বিভিন্ন ওয়েবসাইটে গিয়ে ভারতীয় ভিসার ই-টোকেনের বিজ্ঞাপন দেখা গেছে। এসব বিজ্ঞাপনে প্রতি আবেদনের জন্য এক থেকে দুই হাজার টাকা উল্লেখ করা হয়েছে।

ধানমন্ডি থেকে বাঁধন নামে 01954879515 নম্বর দিয়ে একটি বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে বিক্রয় ডটকমে। তাতে বলা হয়েছে, ই-টোকেন অ্যাপয়েন্টমেন্ট ডেট পেতে জরুরি হলে দুই হাজার টাকা, স্বাভাবিক হলে ১৫০০ টাকা। ওই নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তিনি ধানমন্ডি গিয়ে তাকে কাগজপত্র দিয়ে আসতে বলেন। এক দিনের মধ্যেই তিনি তারিখ এনে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। তবে কীভাবে তিনি এটি করবেন তা বলতে অনীহা প্রকাশ করেন।