অবশেষে জমল কেনাকাটা

SHARE

এত দিন বিপণিবিতান ও শপিং মলগুলোতে ক্রেতা ঘুরঘুর করলেও আজ থেকে মূলত কেনাকাটা শুরু হয়েছে। ক্রেতাখরা ঘুচেছে। প্রায় প্রতিটি মার্কেটেই বেশ ভিড়। বিক্রেতারা বলছেন, ১৩ রোজায় গিয়ে বাজার জমেছে, সামনে আরও বাড়বে।

রোজা শুরু হওয়ার পর আজ ছিল দ্বিতীয় শুক্রবার। প্রথম শুক্রবার অলস সময় কাটালেও আজ বিক্রেতাদের কথা বলারও ফুরসত নেই। রাজধানীর আজিজ কো-অপারেটিভ সুপার মার্কেট, নিউমার্কেট, চাঁদনী চক, গাউছিয়া, এলিফ্যান্ট রোড ও বসুন্ধরা ঘুরে লোকজনের ব্যস্ততা দেখা গেল।
ছেলেদের পোশাকের দোকান ‘ইজি’তে বিক্রয়কর্মীরা ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে ব্যস্ত। শাহবাগের আজিজ কো-অপারেটিভ সুপার মার্কেটের এই আউটলেটের ব্যবস্থাপক হৃদয় ঢালী প্রথম আলোকে বলেন, ‘এত দিন লোকজন এসে নেড়েচেড়ে দেখেছে, কেনেনি। টুকটাক বেচেছি। কিন্তু আজ সকাল থেকেই ভালো ভিড়। জুমার নামাজের পর আরও বাড়বে।’
ছুটির দিন হওয়ায় ভিড়টাও ছিল বেশ।

জায়েদুর রহমান স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে এসেছেন। সম্ভব হলে আজই কেনাকাটা শেষ করবেন। তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রী এসে একদিন ঘুরে গিয়েছিল। কী কী উঠেছে তাই দেখেছে। আমি আজকে সময় পেলাম। সবার জন্যই কিনে ফিরব।’ আজিজ মার্কেটের প্রায় প্রতিটি দোকানেই ক্রেতা-বিক্রেতাদের ব্যস্ততা চোখে পড়ার মতো।
নিউমার্কেট এলাকায় ঠেলেঠুলে ঢুকতে হলো। নূর ম্যানশনে গিয়ে দেখ গেল মেয়ে অভিমান করে গাল ফুলিয়ে আছে। মা আয়েশা আক্তার বললেন, ‘ও একটা গাউন পছন্দ করেছে, কিন্তু ওইটা পরলে চুলকাবে। কাপড়টা খসখসে। না করেছি বলে রাগ করেছে।’ এ মার্কেটে ‘সারারা’ ‘গাউন’ ও অনেক ঘেরওয়ালা পোশাকের আধিক্য। বৈশাখী ফ্যাশনের বিক্রেতা লাভলু জমাদ্দার বলেন, ‘এবার ঈদে একটু দেরিতেই বেচাকেনা শুরু হইছে। দুই দিন আগেও বইসা ছিলাম, কাস্টমার ছিল না।’ তবে আজকে ক্রেতা বাড়ায় তিনি বেশ খুশি।
পরিবার-পরিজন নিয়েও পছন্দের পোশাকটি কিনতে বের হয়েছেন অনেকে।

গাউছিয়ার শাড়ির দোকানগুলোও জমজমাট। শাশুড়িকে নিয়ে শাড়ি কিনতে এসেছেন লিমা হোসেন। এরই মধ্যে আরও দুবার ঘুরে গেছেন, কিন্তু নতুন নকশার আশায় আজ এসেছেন। লিমা বলেন, ‘আরেকটু দেখি দেখি করে আজকেই ডিসিশন নিলাম কিনে ফেলার। ১৫ রোজা পার হলে মার্কেটে হাঁটার জায়গা থাকবে না।’
জুমার নামাজের পর বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে ঢুকতে প্রতিটি অংশেই লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হয়েছে। ভেতরেও সমান ভিড়। ব্র্যান্ডের দোকানগুলোতে ঢুকতেও করতে হচ্ছে ধাক্কাধাক্কি। পোশাকের ব্র্যান্ড ‘ইয়েলো’তে ক্রেতাদের পাঞ্জাবির প্রতি আগ্রহ বেশি। বিক্রয়কর্মী তসলিম রহমান বলেন, ‘১০ রোজা থেকে ভিড় একটু বাড়তে শুরু করেছে। তবে আজকে অনেক বেশি। দেখতেই পাচ্ছেন আমরা হিমশিম খাচ্ছি। আমাদের ক্যাজুয়াল ড্রেস আর পাঞ্জাবি বেশি চলছে এবার।’
ছবিটিই বলে দিচ্ছে জমে উঠেছে ঈদ বাজার।

স্মার্টেক্স, দেশীদশ, আড়ং, ইউনিক্লোসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ড ছাড়া নন-ব্র্যান্ডের দোকানেও আজ উপচে পড়া ভিড়। গতকাল বৃহস্পতিবারও ছিল এর উল্টো চিত্র। কিন্তু ছুটির দিন ও নতুন নকশা আসার অপেক্ষা শেষে ক্রেতারা আজ ভিড়তে শুরু করেছে।
ঈদবাজারের কোনো দোকানই বলা যায় ক্রেতা শূন্য নেই। জমে ওঠা কেনাবেচা রাস্তার দিকে তাকালেও কিছুটা আন্দাজ করা যায়। শুক্রবার হিসেবে রাস্তার যানজটও ছিল চোখে পড়ার মতো।

নিজের হোক বা প্রিয়জনের জন্য—একটু যাচাই-বাছাই করে কিনছেন সবাই।