স্বপ্নে ভেসে বেড়াচ্ছেন মেঘের মধ্যে! অথবা জিতে নিচ্ছেন মস্ত বড় কোনো পুরস্কার! সেই সময় ঘুমটা আচমকা ভেঙে গেল সঙ্গীর নাক ডাকার বিরক্তিকর আওয়াজে। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে ‘সাইলেন্ট পার্টনার’ নামের বিশেষ যন্ত্র বানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের একদল প্রযুক্তিবিদ। এটি নাক ডাকার শব্দের তীব্রতা কমিয়ে দেবে। ফলে আশপাশে কারও সুনিদ্রায় বিঘ্ন ঘটবে না।
সাইলেন্ট পার্টনার প্রকল্পের গবেষক নেটানেল আইয়াল বলেন, নতুন যন্ত্রটি নাকের ওপরে লাগিয়ে ঘুমালে সুফল পাওয়া যাবে। এটি নাকের আওয়াজের তীব্রতা কমাবে। হালকা সংবেদিযুক্ত (সেন্সর) যন্ত্রটি নাকের দুই পাশে লাগানো থাকবে, শোয়ার সব রকমের ভঙ্গির জন্য এটি নিরাপদ।
কান ও গলার রোগবিষয়ক প্রতিষ্ঠান আমেরিকান একাডেমি অব অটোল্যারিংগোলজি বলছে, পূর্ণবয়স্ক সুস্থ মানুষের প্রায় ৪৫ শতাংশই কোনো না কোনো সময় ঘুমন্ত অবস্থায় নাক ডাকে। আর ২৫ শতাংশ ব্যক্তির নিয়মিত এ সমস্যা হয়। মানুষ নানা কারণে এ সমস্যায় আক্রান্ত হয়। এসবের মধ্যে রয়েছে জিব ও গলায় মাংসপেশির দুর্বলতা, শ্লেষ্মা এবং শ্বাস-প্রশ্বাস চলাচলে বাধা ইত্যাদি।
আইয়াল বলেন, সাইলেন্ট পার্টনার শোয়ার ঘরে শান্তি আনবে। এটি মানুষের পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নতিতেও সাহায্য করতে পারে। নাকের আওয়াজ বন্ধ করার জন্য যন্ত্রটিতে যুক্ত করা হয়েছে শব্দ দূর করার সক্রিয় প্রযুক্তি, যা পদার্থবিদ্যার শব্দতরঙ্গের ওপর নির্ভরশীল। প্রতিটি শব্দের বৈশিষ্ট্য নির্ধারিত হয় চাপ-তরঙ্গের মাধ্যমে, যার নির্দিষ্ট বিস্তার ও কম্পাঙ্ক রয়েছে। সাইলেন্ট পার্টনারের মতো শব্দরোধী যন্ত্র মূল আওয়াজের সমান বিস্তারের এবং বিপরীত পর্যায়ের শব্দ তৈরি করে। ফলে নাক ডাকার আওয়াজ এবং যন্ত্রের বিপরীত আওয়াজ সমন্বিতভাবে একটি নতুন শব্দতরঙ্গ তৈরি করে। এতে নাক ডাকার মূল আওয়াজ আড়ালে পড়ে যায়।
আইয়াল আরও বলেন, ঘুমন্ত মানুষের নাকের আওয়াজের নির্দিষ্ট কম্পাঙ্ক এবং ধরন রয়েছে, যা কথাবার্তা বা অন্যান্য আওয়াজের চেয়ে ভিন্ন। তিনি ও তাঁর সহযোগী গবেষকেরা এ যন্ত্রের ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছেন। ঘুমের মধ্যে শ্বাসকষ্টের রোগীদের কথা বিবেচনা করে এখন তাঁরা যন্ত্রটির আরও উন্নত সংস্করণ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন। এ লক্ষ্যে অনলাইনে তহবিল সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। তাঁরা আশা করছেন, আগামী নভেম্বরের মধ্যে সাইলেন্ট পার্টনার বাজারে ছাড়া সম্ভব হবে।