৭ খুন মামলা : চার্জ গঠনের শুনানি ২৭ জানুয়ারি

SHARE

1644নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের দুটি মামলার চার্জ গঠনের শুনানি আগামী ২৭ জানুয়ারি ধার্য করেছে আদালত। কঠোর নিরাপত্তায় সাত খুনের প্রধান আসামি নূর হোসেন ও চাকরিচ্যুত র‌্যাব কর্মকর্তাসহ ২২ আসামিকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে হাজির করা হয়েছে।

সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ ১নং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মিয়াজী মোহাম্মদ শহীদুল ইসলামের আদালত এ আদেশ দেন।

সাত খুনের ঘটনায় ২৩ জন গ্রেফতার হলেও অসুস্থ থাকায় সোমবার চাকরিচ্যুত র‌্যাব কর্মকর্তা তারেক সাঈদকে আদালতে হাজির করা হয়নি। শুনানির সময় তারেক সাঈদের পক্ষে সময় প্রার্থনা করেন তার আইনজীবীরা।

এদিকে জজকোর্টে দুপুরে সাত খুনের শুনানির আগে সকালে নূর হোসেন ও তার ভাতিজা সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর শাহজালাল বাদলের বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি চাঁদাবাজি মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয় নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কেএম মহিউদ্দিনের আদালতে। শুনানির সময় আদালতে এ আপোষের কথা ও নথি উপস্থাপন করেন আইনজীবীরা।

বাদী পক্ষের আইনজীবী সাখায়াত হোসেন খান বলেন, সাত খুনের আসামি পক্ষের প্রায় ১৫/২০জন আইনজীবীর ভূমিকা দেখে হতভম্ভ হয়ে যাই। তাদের জন্য আদালত অবস্থান করতে সমস্যা হয়েছে। আর নূর হোসেনের ক্যাডার বাহিনীরা আদালতের চার পাশে অবস্থান করে। তাদের অবস্থান দেখে বাদীপক্ষসহ আমরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।

এদিকে জজকোর্টে সাত খুনের দুটি মামলায় আদালতে নূর হোসেনের ৫ সহযোগী চার্চিল, আলী মাহমুদ, রহম আলী, মিজানুর রহমান ও আবুল বশর নিজেদের নির্দোষ দাবি করে জামিন আবেদন করলে আদালত সেটা নামঞ্জুর করেন।

মামলার বাদী নিহত নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, সাত খুনের সময় নূর হোসেনের যে ধরনের দাপট ছিল এখন আবারও সেই ধরনের দাপট দেখাচ্ছে। আদালতের ভিতর এবং বাইরে নূর হোসেনের ক্যাডার বাহিনীরা অবস্থান করায় আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আদালতে নূর হোসেনের ক্যাডার বাহিনীর দাপট দেখে বিস্মিত এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আর আদালতে নূর হোসেনের লোকদের দৃশ্য দেখে সাত খুনের মামলার সঠিক বিচার পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা প্রকাশ করেন তিনি।

এদিন ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী ছরোয়ার মিয়ার নেতৃত্বে ৫ জনের একটি আইনজীবী দল তারেক সাঈদের পক্ষে শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন। আর তারেক সাঈদের আইনজীবী ছরোয়ার মিয়া বলেন, সাত খুনের দুটি মামলার চার্জ গঠনের ধার্য তারিখে তারেক সাঈদ অসুস্থ থাকায় আদালতে হাজির হতে না পাড়ায় বিজ্ঞ পিপির আবেদনের পরিপেক্ষিতে আসামির পক্ষে শুনানিতে অংশগ্রহণ করি। পরবর্তী ধার্য তারিখে তারেক সাঈদ আদালতে হাজির হবে।

নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের এসআই গোলাম হোসেন এর সত্যতা স্বীকার করে বলেন, শুনানি শেষে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি দিন ধার্য করেছে। এছাড়া সেদিন সাত খুনের দুই মামলা ছাড়া অপর ৬ মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

গত বছর ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার লামাপাড়া থেকে কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৭ জনকে অপহরণ করা হয়। তিনদিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহত নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল দুটি মামলা করেন। হত্যাকাণ্ডের প্রায় এক বছর পর গত ৮ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মামনুর রশিদ মন্ডল। এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামিকে অব্যাহতির সুপারিশ করায় নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি গত ১১ মে নারাজি আবেদন করেন। গত ৯ নভেম্বর নারাজি আবেদন খারিজ হয়। পরে তিনি হাইকোর্টে অধিকতর তদন্তের জন্য আবেদন করলে আদালত আবেদনটি আমলে নিয়েছেন।