টিউলিপকে ঠেকাতে সব চেষ্টা করেছে তারেক: প্রধানমন্ত্রী

SHARE

hasina7বৃটিশ পার্লামেন্টের নির্বাচনে শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকী যাতে জিততে না পারে সে জন্য সব ধরনের চেষ্টা করেছেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান্- এমন অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশনে এক ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ অভিযোগ করেন।

বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তিন নারী বৃটিশ পার্লামেন্টে এমপি নির্বাচিত হওয়ায় তাদের ধন্যবাদ জানানোর প্রস্তাব তোলেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য দীপু মনি।

ভাগ্নি টিউলিপের জন্য দোয়া চেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যার পর আমাকে আর রেহানাকে অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে চলতে হয়েছে। রেহানা রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে লন্ডনে থেকেছিলেন বলেই আজ টিউলিপ নির্বাচিত হতে পেরেছে। এর মাধ্যমে তার যাত্রা শুরু হলো।  সকলের কাছে, দেশবাসীর দোয়া চাইব যেন সে আরো সাফল্য অর্জন করতে পারে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তাকে (টিউলিপ) সেখানে অনেক কষ্ট পেতে হয়েছে।  আপনারা জানেন, রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে খালেদা জিয়ার ছেলে ওখানে সব রকমের চেষ্টা করেছে টিউলিপ যেন জিততে না পারে।  এমনকি ভোটারদের ওপর লোক পাঠিয়ে হামলা পর্যন্ত করিয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এত জঘন্য কাজ করেছে, নানা ধরনের অপপ্রচার, অনেক কিছু অনেক বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। বাংলাদেশের একটি মেয়ে নির্বাচন করছে, অথচ এরা তো আসলে বাংলাদেশ বা স্বাধীন বাংলাদেশে বিশ্বাস করে না।”

এর আগে দীপু মনির ধন্যবাদ প্রস্তাবটি ছিল, “সংসদের অভিমত এই যে, বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তিনজন নারী বৃটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্সের সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে বিশেষ আলোচনার মাধ্যমে বৃটিশ পার্লামেন্টের মাননীয় সদস্যবৃন্দ রুশনারা আলী, রূপা হক ও টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিককে ধন্যবাদ জানানো হোক।”

প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “শুধু ইংল্যান্ড নয়, ইউরোপের সব প্রবাসী বাংলাদেশী টিউলিপের পাশে দাঁড়িয়েছে, তাকে সমর্থন জানিয়েছে। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। কৃতজ্ঞতা জানাই বাংলাদেশের জনগণের প্রতি।”

সংসদনেতা বলেন, “টিউলিপকে আমি দেখেছি, তার এলাকায় প্রতিটি ঘরে গেছে। প্রতিটি মানুষের কাছে গেছে। ভোট চেয়েছে। তার এই যে আন্তরিকতা, নিষ্ঠা, কর্মদক্ষতা, এটা সত্যিই বিস্মিত হতে হয়।”

টিউলিপের খালা শেখ হাসিনা বলেন, “খুবই অবাক লাগে সেই ছোট্ট টিউলিপ আজ বৃটিশ পার্লামেন্টে। সেখানে বক্তৃতা দিয়েছে, এত সাবলীলভাবে, চমৎকারভাবে কথাগুলো বলেছে।  গর্বে আমাদের বুক ভরে গেছে। জয়-পুতুল-ববি আমরা সবাই উপস্থিত ছিলাম।  এটা বিরল সম্মাননা সেখানে বসে দেখেছি।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “৮২ সালে টিউলিপের জন্ম হয়। সেসময় আমি ওর পাশে ছিলাম।  ছোট্ট টিউলিপ লেখাপড়া শিখেছে।  নিজে চাকরি করেছে।  অতটুকু একটা ছোট মানুষ কী যে কষ্ট করতে পারে ভাবলে অবাক লাগে।”

ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, “বাংলাদেশী তিন কন্যা বাংলাদেশ ছাড়িয়ে বৃটিশ পার্লামেন্টে নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশের মানুষের মুখ উজ্জ্বল করেছেন।  যে বৃটিশ ২০০ বছর এ দেশকে শাসন করেছে, বাঙালিরা সেই দেশে নির্বাচিত হয়ে গৌরব এনেছে।  রূপা হকের বাড়ি পাবনা, রুশনারা আলীর বাড়ি সিলেট, টিউলিপ কিন্তু মূলত ঢাকার মেয়ে।  তিন কন্যার জন্য আমি দোয়া করি, তারা বাংলাদেশের জন্য গৌরব এনেছে, বাংলাদেশের মানুষের মুখ উজ্জ্বল করেছে।”

দীপু মনির আনা প্রস্তাবের ওপর আরো আলোচনা করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, তথ্য-যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ, আবু জাহির, আব্দুল মান্নান, সাগুফতা ইয়াসমিন, ফজিলাতুন নেসা বাপ্পী, স্বতন্ত্র সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী, জাতীয় পার্টির পীর ফজলুল রহমান। আলোচনা শেষে ধন্যবাদ প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে সংসদে গ্রহণ করা হয়।