প্রথম আলো মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে কী অর্জন করতে চায়!

SHARE

motiya5পাওয়ার টিলার বিক্রি নিয়ে দৈনিক প্রথম আলোর প্রকাশিত সংবাদ সত্যি নয়। এ নিয়ে চলতি অধিবেশনে তিনবার ৩০০ বিধিতে বিবৃতি দিলেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী।

তিনি জানতে চান, প্রথম আলো মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে কী অর্জন করতে চায়? আমি মন্ত্রী বলে এবং সংসদ চলছে বলে দেশবাসীর কাছে তুলে ধরতে পারছি। কিন্তু সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করলে তাদের কী অবস্থা দাঁড়ায়!

তিনি বলেন, এর নাম সৎ-সাংবাদিকতা নয়। এর নাম সৎ-সাংবাদিকতা নয়।

রোববার দুপুরে জাতীয় সংসদে ৩০০ বিধিতে বিবৃতি প্রদানকালে কৃষিমন্ত্রী এ সব কথা বলেন।

এর আগে ১৬ জুন একই বিষয়ে বিবৃতি দেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। এরপরেও আরেকবার বিবৃতি দেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে ১৩টি পাওয়ার টিলার বিক্রি নিয়ে প্রথম আলো’তে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। আজাদ রহমান প্রতিবেদন প্রকাশে মেসার্স রাখী এন্টারপ্রাইজের কাছে নিজেকে এসসিআইস-এর লোক পরিচয় দিয়ে কথা বলেন।

বানোয়াট খবর প্রকাশ করে পাঠকদের বিভ্রান্ত করে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকা সৎ-সাংবাদিকতা করছে না বলে সংসদে বলেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী।

তিনি বলেন, যতই বানোয়াট নিউজ ছাপান না কেন, এতে যে আমি খুব একটা উত্তেজিত হবো, এমন না। তারা তাদের ইচ্ছামতো নিউজ করে এবং সেইভাবে পাঠকদের বিভ্রান্ত করে।

মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, আমি মন্ত্রী বলে সংসদে বিবৃতি দিয়ে প্রকৃত ঘটনা জানাতে পারছি। কিন্তু সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে অসত্য খবর প্রকাশিত হলে তার প্রতিকার কীভাবে পাবে? প্রতিবাদ দিলেও তারা তিন/চার লাইন দেন অথবা দেন না।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, প্রথম দিন সংবাদ প্রকাশের পরেই মন্ত্রণালয় থেকে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি কোর্টচাঁদপুর এলাকায় বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের কাছে বিভিন্ন তথ্য যাচাই করে। এ সময় সাংবাদিক আজাদ রহমানকে ডাকা হলেও তিনি যাননি। আমরা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিলে সেটা ছাপে না। কখনো আংশিক ছাপে।

মন্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, দৈনিক প্রথম আলো যে রিপোর্ট করেছে, তা সত্য নয়। পাওয়ার টিলার বিক্রিকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক আসাদুল ইসলামের জবানবন্দিতে তা প্রমাণিত হয়েছে। তদন্ত কমিটির কাছে আসাদুল ইসলাম বলেছেন, দৈনিক প্রথম আলো যা লিখেছে, তার কোনো সত্যতা নেই। আমি পুরনো পাওয়ার টিলার বিক্রি করিনি।

এ সময় মন্ত্রী বলেন, কৃষকদের কাছ থেকে ৭৫ শতাংশ টাকা প্রাপ্তির পরেই কেবল কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে এ সব পাওয়ার টিলার দেওয়া হয়, যা পরবর্তীতে কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধ করার সুযোগ থাকে। কিন্তু যা হয়নি, তাই নিয়ে তারা (প্রথম আলো) বার বার মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করছে।

প্রসঙ্গত, গত ২৭ মে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় ‘কলের লাঙলের ভর্তুকির বড় ভাগ সরকারি দলের নেতাকর্মীদের পকেটে’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৬ জুন সংসদে বিবৃতি দেন মতিয়া চৌধুরী। পরে আবারও সংবাদ প্রকাশ করে মন্ত্রী বিবৃতি দেন।

সর্বশেষ, গত ২ জুলাই আবারও ‘প্রথম আলোর খবর অসত্য নয়, এখনো পাঁচজন লাঙল কেনেননি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করা হয় বলে জানান মন্ত্রী।

দৈনিক প্রথম আলোর সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩ জুলাই মন্ত্রণালয় আবারও তদন্ত করেছে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী। ওই তদন্তে দৈনিক প্রথম আলোর সংবাদ ‘অসত্য’ বলেও জানান মতিয়া চৌধুরী।

দৈনিক প্রথম আলোর প্রতিবেদক সম্পর্কে তিনি বলেন, জনাব আজাদ রহমান ৯১-৯৬ সালে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সম্পাদক ছিলেন।  ৯৮-২০০০ মেয়াদে যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এছাড়াও তিনি প্রাক্তন মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের ‘লোকসমাজ’ পত্রিকার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।

ভর্তুকি দেওয়া প্রসঙ্গে মতিয়া বলেন, একজন কৃষক ৭৫ ভাগ টাকা জমা দিলে পরে কিনতে পারেন। তাও কাগজপত্র নিশ্চিত হওয়ার পর সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে ভর্তুকির টাকা দেওয়া হয়। কোনো ব্যক্তিকে এই টাকা দেওয়া হয় না।

তিনি বলেন, মূলত এই বিষয়টি হয়ত প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ বোঝে না। অথবা বুঝেও না বোঝার চেষ্টা করছে… অথবা এর পেছনে কোনো উদ্দেশ্য নিহিত আছে।