শুরুটা হয়েছিল আর্জেন্টিনীয় জাতীয় সঙ্গীত বাজানোর সময় বিদ্রুপ করে। মাঠে বল পড়ার পর সেটা বদলে যায় অশ্লীল গালিগালাজে।
কিন্তু ৯০ মিনিটের পর চিলির জঙ্গি সমর্থকেরাও স্তব্ধ হয়ে গেলেন। স্তব্ধ হয়ে গেলেন এক জাদুকরের সম্মোহনী শক্তির সামনে। ম্যাচ শুরুর আগে যাদের মুখে গালিগালাজ ছাড়া কিছু শোনা যাচ্ছিল না, ম্যাচ শেষে তাদের হাততালিই তখন থামছে না। কারণ ওই একটাই। লিওনেল মেসি।
এবারের কোপায় পেনাল্টিতে একটি মাত্র গোল করা ছাড়া তেকাঠিতে বল পাঠাতে পারেননি। কিন্তু তার জন্য কোনো সমালোচনা নয়, বরং মেসি সমর্থকেরা কাপ দেখছেন, তাদের অধিনায়কের দুরন্ত ফর্ম দেখে। কোচ জেরার্দো মার্টিনোরও বোধহয় একই অবস্থা। তাই মেসি ভক্তদের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও বলে দিচ্ছেন গোল নয়, আসল কথা হলো মেসির ছন্দে থাকা। মেসি ছন্দে থাকলেই টিম জিতবে। ‘‘মেসিকে আনন্দে থাকার জন্য গোল করতে হয় না। ওর পাস থেকে গোল হলেই হলো। সবচেয়ে বড় কথা হলো, ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী যেটা প্রয়োজন ঠিক সেই ভূমিকাটাই নিতে পারে ও। মেসি যে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, সেটা অসাধারণ ভাবে সামলাচ্ছে।’’
আর টুর্নামেন্টে গোল করার ব্যাপারটা ফাইনালে দূর হতে পারে বলে তো আগাম জানিয়ে দিলেন স্বয়ং আর্জেন্টিনীয় অধিনায়কই। ‘‘গোল না আসা নিয়ে আমি চিন্তিত নই। আশা করছি, ঈশ্বর আমার আর আমার সতীর্থদের জন্য কিছু গোল বাঁচিয়ে রাখছেন। যেটা ফাইনালে আসতে পারে।’’ এর পরেই যোগ করছেন, ‘‘আমরা প্রথম লক্ষ্যটা পেরিয়েছি ফাইনালে উঠে। এবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার একটা সুযোগ এসেছে।’’
তবে যতই অপ্রতিরোধ্য লাগুক মেসিদের, ফাইনালে কিন্তু চিলির চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। ঘরের মাঠে আলেক্সি সাঞ্চেজদের সামনে আবার একশো বছরের অভিশাপ কাটানোর চ্যালেঞ্জ। তার উপর রয়েছে সেমিফাইনালে রেফারির বিতর্কিত সিদ্ধান্তে জয়ের কলঙ্কও। ফাইনালেও আয়োজক দেশের বিরুদ্ধে তাই লড়াইটা কঠিন বলে দিচ্ছেন মেসিও। ‘‘ফাইনাল নিয়ে আশাবাদী। তবে ম্যাচটা কঠিন হবে। কোপা জেতাটা অসাধারণ একটা ব্যাপার হবে। জাতীয় দলের হয়ে ট্রফি জেতার জন্য আমি মরিয়া।’’
চিলির মতো না হলেও ফাইনালে নামার আগে আর্জেন্টিনাকেও ২২ বছর কোপা না জেতার রেকর্ড তাড়া করছে। মেসির দেশের শেষ কোপা জয় ১৯৯৩-এ ইকুয়েডরকে ২-১ হারিয়ে। তার উপর ফাইনালে উঠে হারার নজির তো আছেই। আট বছর আগে ফাইনালে ব্রাজিলের কাছে ০-৩ হেরেছিল সাদা-নীল জার্সির দল।