পুরো ইন্টারনেটজুড়েই মানুষকে বোকা বানানোর এই জালিয়াতির প্রবণতা রয়েছে। বিবিসির এক অনুসন্ধানে এমনটাই জানা গেছে। এমনকি অনেক বৃটিশ কোম্পানি প্রকাশেই মিথ্যা পর্যালোচনার জন্যে টাকা প্রস্তাব করছে। ভুয়া পর্যালোচনা লেখার জন্য অনেক লেখক ইন্টারনেটে বিজ্ঞাপনও দিচ্ছেন।
এমন প্রমাণও পাওয়া গেছে যে, অনেক প্রতিষ্ঠান যেমন টাকার বিনিময়ে এসব রিভিউ কিনছে, আবার অনেকে শুধুমাত্র রিভিউ লেখার কাজটি পেশাদারি ভাবে শুরু করেছেন।
গবেষকরা বলছেন, এ ধরনের ওয়েবসাইটগুলোর কমেন্টের অন্তত কুড়ি শতাংশই সাজানো হয়ে থাকে।
সবচেয়ে বেশি যেসব সাইটে রিভিউ দেখা যায়, তার একটি ভ্রমণ বিষয়ক ইন্টারনেট সাইট ট্রিপএ্যাডভাইজার। কিন্তু সব রিভিউ কি বিশ্বাসযোগ্য?
ফ্রান্সের মোনাকোর ঋণ বিষয়ক একটি ওয়েবসাইট বিজি লোনস। এই সাইটটির সব পর্যালোচনাই পাঁচ তারকা সমৃদ্ধ।
ইন্টারনেট গবেষক ক্রিস এমিনিস বলছেন, এর বেশিরভাগ পর্যালোচনাই ভুয়া।
তিনি বলেন, “আমি মনে করি না এসব রিভিউ বা পর্যালোচনা সত্যি। এই কোম্পানির নাম বাড়ানোর জন্যে, হয়তো কেউ নিজের পরিচয় লুকিয়ে, বা অন্য কারো পরিচয়ে এসব মিথ্যা রিভিউ পোস্ট করছে।”
যাদের নামের এসব রিভিউ পোস্ট হয়েছে, তাদের একজন অ্যাশলে গ্রিফিন।
বিবিসির অনুসন্ধানে জানা যায়, মিস অ্যাশলে ৭ বছর আগেই এক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।
অ্যাশলের বাবা গ্রেগ বোথ বলেন, “এটা সত্যিই তাকে অসম্মান করার মতো একটি ব্যাপার। সোজা কথা, তারা মানুষকে প্রতারণা করতেই এসব করছে, সস্তা জালিয়াতি করছে।”
বিজি লোনস এর কর্ণধার একজন ব্রিটিশ নিল গ্রিফিথ। তিনি এই ভুয়া পর্যালোচনার সঙ্গে জড়িত কিনা, সেটি জানার জন্য তাকে ফোন করেন বিবিসির প্রতিবেদক।
কিন্তু তিনি বিবিসির পরিচয় পাওয়ার পর, টেলিফোন লাইন কেটে দেন।
বাংলাদেশের ঢাকায় এমন একজন ফ্রিল্যান্স পর্যালোচনাকারী মোঃ. রাফসান, যিনি পড়াশোনার পাশাপাশি অর্থ আয়ের জন্য ইন্টারনেটে কাজ করেন।
তিনি বলেন, “প্রতিটি রিভিউ লেখার জন্য আমি পাঁচ ডলার করে পাই। বাংলাদেশে আউটসোর্সিং এর কাজের জন্য এটা একটি বিশাল ক্ষেত্র, আমার মতো অনেকেই এই খাতে কাজ করেন।”
সুতরাং এক্ষেত্রে বিশ্লেষকদের সহজ পরামর্শ, অনলাইনে প্রত্যেক গ্রাহকের বর্ণনাই বিশ্বাস করা ঠিক হবে না, বিশেষ করে কোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য যদি সেটা খুব বেশি বেশি প্রশংসা হয়ে যায়।