আইএস-এর এক বছর: দমনে নেই তেমন অগ্রগতি

SHARE

isইরাক ও সিরিয়ায় স্বঘোষিত খেলাফত প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকারকারী জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের আত্মপ্রকাশের এক বছর পার হতে চললো। কিন্তু তাদের প্রতিহত করার ক্ষেত্রে তেমন কোন অগ্রগতি দেখছেন না বিশ্লেষকরা। অস্ত্রে সজ্জিত আইএস এখনো অত্যন্ত অর্থপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন।

বিশ্লেষকরা আরো বলছেন, আগামী দীর্ঘ সময় ধরে আইএস-এর রাজত্ব চলবে।

তবে খেলাফত ঘোষণার পর সাম্প্রতিক সময়ে সমর্থকদের কাছে খলিল ইব্রাহিম নামে পরিচিত আইএস প্রধান আবু বকর আল বাগদাদিকে দুর্দশার মধ্য দিয়েই যেতে হচ্ছে। কারণ মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী আইএস নিয়ন্ত্রিত এলাকায় একের পর এক বিমান হামলা চালিয়ে আসছে।

চলতি সপ্তাহে আইএস গুরুত্বপূর্ণ সিরীয় সীমান্ত শহর তাল আবিয়াদের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। তবে একদিকে তারা নিয়ন্ত্রণ হারালেও অন্যদিকে তারা তাদের দখল অব্যাহত রাখতে সক্ষম হচ্ছে। এর মধ্যে সিরিয়ার প্রাচীন নগরী পালমিরা অন্যতম।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইএস ও তার খেলাফত আগামী অনেকগুলো বছর তাদের নিয়ন্ত্রণ অব্যাহত রাখতে সক্ষম হবে।

মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা বিষয়ক থিংকট্যাংক চাথান হাউসের অ্যাসোসিয়েট ফেলো হাসান হাসান বলেন, আইএস বিদ্রোহীদের মতো তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। একদিকে তারা নিয়ন্ত্রণ হারালেও অন্যদিকে দখলের বিস্তার ঘটাচ্ছে। ভবিষ্যতেও তারা আমাদের সঙ্গেই থাকবে। তিনি বলেন, আমি মনে করি আইএস আছে এবং অন্তত আগামী এক দশক সক্রিয় থাকবে।

আইএস-এর সফলতার পেছনে বিশ্লেষকরা নানা কারণের
কথা উল্লেখ করেছেন। এর অন্যতম বিষয় অর্থ, অস্ত্র এবং ইরাক ও সিরিয়ার স্থানীয় জনগণের ওপর তাদের প্রভাব বিস্তারের সক্ষমতা।
র্যান্ড কর্পোরেশন থিংকট্যাংকের রাজনৈতিক বিজ্ঞানী প্যাট্রিক জনসন বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে ধনী গ্রুপ আইএস। তাদের সাপ্তাহিক আয় ২০ লাখ মার্কিন ডলার।

গ্রুপটির তেল অবকাঠামোয় মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিমান হামলায় তাদের তহবিল যোগান বাধাপ্রাপ্ত হলেও তারা কোনো না কোনোভাবে সে ক্ষতি পুষিয়ে নিচ্ছে। এসবের মধ্যে রয়েছে- চাঁদাবাজি, কর এবং লুণ্ঠিত দ্রব্য বিক্রি বাবদ অর্থ। উল্লেখ করার মত বিষয় আইএস-এর কার্যক্রম খরচ তুলনামূলক অনেক কম।

আইএস বিষয়ক বইয়ের লেখক হাসান আরো বলেন, আইএস-এর রয়েছে অস্ত্র, রয়েছে প্রশিক্ষণ। তারা যেন ছোটখাটো এক সামরিক বাহিনী।

মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট আইএস দমনে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু তাদের সাফল্য সামান্য। এর কারণ হিসেবে তারা বিশ্বস্ত স্থলবাহিনীর অভাব এবং দুর্বল গোয়েন্দা তৎপরতাকে দায়ী করেন।

আইএস সাধারণত যেসব এলাকায় স্থানীয় সরকার ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল সেখানেই তাদের বিস্তার ঘটাচ্ছে। কোনো এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পরপরই তারা সেখানে তাদের শাসন জারি করছে। এদিকে ওইসব এলাকায় তেমন কোনে বিকল্প নেই বলেও আইএস সফলতা পেয়ে যাচ্ছে।

সিরিয়া ও ইরাকে সুন্নি মুসলিমরা নিজেদের অবহেলিত মনে করছে। সেখানে আইএস সুযোগ নিয়ে জনগণের ওপর তাদের প্রভাব বিস্তার করছে।

ব্রুকিংস দোহা সেন্টারের ফেলো চার্ল লিস্টার বলেন, মূলত আইএস সমস্যা সমাধানের উপায় হলো সামাজিক বিভাজন কমিয়ে এনে রাজনৈতিক ব্যর্থতা মোকাবেলা করা। কারণ এসবের সুযোগ নিয়েই আইএস তার খেলাফত রাজত্ব কায়েম করে চলেছে।