ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানের সাজার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দেয়ায় আদালত অবমাননার মামলায় ট্রাইব্যুনালের ঘোষিত এক ঘণ্টার সাজা খাটলেন গণস্বাস্থ্য ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
রায় ঘোষণার দেড় ঘণ্টা পর দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে আদালতের কাঠগড়ায় গিয়ে দাঁড়ান জাফরুল্লাহ। একটা ৫০ মিনিট পর্য ন্ত সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে দণ্ড ভোগ করেন তিনি।
বুধবার সকালে বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-২ এক ঘণ্টার দণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করে আদেশ দেন। ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানের সাজার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দেয়ায় আদালত অবমাননার মামলায় তাকে এই সাজা দেয়া হয়।
এই ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম।
রায় অনুযায়ী, জাফরুল্লাহকে এক ঘণ্টা আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
তবে আদেশ দিয়ে ট্রাইব্যুনাল উঠে যাওয়ার পর আসামির কাঠগড়ায় যেতে রাজি হননি জাফরুল্লাহ। উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা জাফরুল্লাহকে আসামির কাঠগড়ায় উঠতে বললেও তিনি তাতে রাজি হননি। পরে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার গিয়ে তাকে আদালতের আদেশের কথা জানালে তিনি ওই আদেশ পড়ে তারপর তা পালন করবেন বলে জানান। বেলা ১২টা ৪০ মিনিটে জাফরুল্লাহকে আদেশের লিখিত অনুলিপি পড়তে দেয়া হয়। আদেশের প্রায় দেড় ঘণ্টা পর তিনি ১২টা ৪৯ মিনিটে কাঠগড়ায় গিয়ে অবস্থান নেন। ট্রাইব্যুনালের আদেশ অনুসারে, ওই সময় থেকে এক ঘণ্টা পর তার এ-সংক্রান্ত দণ্ডের মেয়াদ শেষ হয়।
বিবৃতিদাতা অপর ২২ জন বিশিষ্ট নাগরিককে আদালত অবমাননার এই অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। আদেশে ট্রাইব্যুনাল বলেন, অন্য ২২ অভিযুক্ত ব্যক্তির বিবৃতি আদালতের জন্য অবমাননাকর হলেও প্রথমবার বিবেচনায় তাদের ক্ষমা করা হলো। তবে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে আগেও আদালত অবমাননার অভিযোগে কার্যক্রম চলেছে। তাই তাকে দণ্ড দেয়া হলো।
বাংলাদেশে বসবাসরত ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানের সাজায় উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দেয়ায় ২৩ বিবৃতিদাতার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়। এই অভিযোগের বিষয়ে গত ১৪ মে শুনানি শেষ হয়। বুধবার আদেশ দিলেন ট্রাইব্যুনাল।
আদালত অবমাননার দায়ে সাজাপ্রাপ্ত নিউ এজ পত্রিকার বিশেষ প্রতিবেদনের সম্পাদক বার্গম্যানের সাজায় উদ্বেগ জানিয়ে দেশের ৫০ নাগরিক গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর বিবৃতি দেন। মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির পরে বিবৃতি থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেন। ১৪ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনাল ৪৯ বিবৃতিদাতার কাছে তাদের বিবৃতির বিষয়ে ব্যাখ্যা চান। পরে বিবৃতির জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ায় ২৬ বিবৃতিদাতাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন ট্রাইব্যুনাল।
বাকি ২৩ জনের বিরুদ্ধে গত ১ এপ্রিল ট্রাইব্যুনাল আদালত অবমাননার রুল দেন।