যুদ্ধবিরতি বজায় রাখতে সম্মত পাকিস্তান-আফগানিস্তান

SHARE

অবশেষে যুদ্ধবিরতি চালিয়ে যেতে রাজি হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তুরস্কে ৫ দিনের বৈঠকের পর দুই দেশ এই সিদ্ধান্তে পৌঁছাল। গতকাল বৃহস্পতিবার ইস্তাম্বুলে আলোচনার সময় পাকিস্তান ও আফগানিস্তান যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর বিষয়ে সম্মত হয়েছে।
গত ১৯ অক্টোবর থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়।

গত ১৮ অক্টোবর থেকে দোহায় পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সরকারি প্রতিনিধিদের বৈঠক শুরু হয়েছিল। পরে তা তুরস্কের ইস্তাম্বুলে স্থানান্তর হয়। সেখানে ২৫ অক্টোবর থেকে বৈঠক শুরু করেন দুই দেশের প্রতিনিধিরা।
বৈঠকে মধ্যস্থতার ভূমিকা নেয় কাতার এবং তুরস্ক। মাঝে বৈঠক নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিলেও পরে ২৯ অক্টোবর থেকে ফের শুরু হয় বৈঠক এবং ৩০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায় দুই দেশ।

তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২৫-৩০ অক্টোবরের আলোচনা সম্পর্কে জানিয়েছে, ‘সব পক্ষই শান্তি বজায় রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করবে এবং চুক্তি লঙ্ঘনকারী পক্ষের ওপর শাস্তি আরোপ করা হবে। এমন ব্যবস্থায় সম্মত হয়েছে দুই দেশ।

এতে আরো বলা হয়েছে, ‘এই ব্যবস্থা কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে তা নির্ধারণের জন্য ৬ নভেম্বর ইস্তাম্বুলে একটি পরবর্তী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তুরস্ক ও কাতার স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য উভয় পক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে প্রস্তুত।’

তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ মধ্যরাতের কিছু আগে ইস্তাম্বুলে একটি পৃথক বিবৃতি জারি করে আলোচনার সমাপ্তি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, উভয় পক্ষই ভবিষ্যতের বৈঠকে আলোচনা চালিয়ে যেতে সম্মত হয়েছে।

২০২১ সালে তালেবানরা কাবুল দখল করার পর থেকে দেশ দুটি সীমান্তে গুরুতর সামরিক সংঘর্ষের মুখোমুখি হয়েছে।
গত ৯ অক্টোবর আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বিমান হামলা চালায় পাকিস্তান। পাকিস্তান আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্বে আঘাত হেনেছে— অভিযোগ তুলে এর দুই দিন পর সীমান্তে পাকিস্তানের সেনাচৌকিগুলো লক্ষ্য করে হামলা চালায় আফগান সেনাবাহিনী। পাল্টা জবাব দেওয়া শুরু করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীও।

যুদ্ধবিরতির আগ পর্যন্ত সংঘাতে নিহত হয়েছেন ২ শতাধিক আফগান সেনা এবং ২৩ জন পাকিস্তানি সেনা। মারাত্মক সংঘর্ষের ফলে বাণিজ্য ও পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ণ ক্রসিংগুলো বন্ধ হয়ে যায়। হামলায় টিটিপির শীর্ষ নেতা নূর ওয়ালি মেহসুদ, দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা ক্বারি সাইফুল্লাহ মেহসুদসহ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা নিহত হন।

পাকিস্তানের উত্তর‐পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়া টিটিপির ঘাঁটি এলাকা। আফগানিস্তানে তালেবান সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে পাকিস্তান অভিযোগ করে যাচ্ছে, টিটিপিকে আশ্রয় দিচ্ছে আফগান তালেবানরা। তবে আফগানিস্তান বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। সহিংসতা ও বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতার বেশ কয়েক বছর আগে এই গোষ্ঠীটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে পাকিস্তানের সরকার। তারপরও গোষ্ঠীটি তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এ নিয়েই শুরু হয় সংঘর্ষ। ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত সংঘাতের পর ১৫ অক্টোবর ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে পাকিস্তান-আফগানিস্তান।

সূত্র : রয়টার্স, জিও নিউজ