যুদ্ধবিরতির পরও ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি তাণ্ডব বন্ধ হয়নি। নানা অজুহাতে গাজায় নির্বিচারে রক্তক্ষয়ী হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। যুদ্ধবিরতির এই অব্যাহত লঙ্ঘনে গাজাবাসীর সব আশা ম্লান হয়ে যাচ্ছে। খবর আল জাজিরার।
গতকাল বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েল মারাত্মকভাবে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। এতে অন্তত শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু।
অবশ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুদ্ধবিরতি এখনো দৃঢ়ভাবেই কার্যকর রয়েছে।
যদিও দুই পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী কাতার হতাশা ব্যক্ত করে বলেছে, মধ্যস্থতাকারীরা যুদ্ধবিরতির পরবর্তী পর্যায়ের জন্য অধীরভাবে অপেক্ষা করছে।
এদিকে ইসরায়েলের সর্বশেষ হামলার পর গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৮ হাজার ৫২৭ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছে এক লাখ ৭০ হাজার ৩৯৫ জন ফিলিস্তিনি।
অন্যদিকে ইসরায়েলি সেনারা গতকাল লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের ব্লিদা শহরে হামলা চালিয়ে পৌরসভার এক কর্মীকে হত্যা করেছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে।
লেবাননের সরকারি সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সৈন্যরা বেশ কয়েকটি সামরিক ব্লিদা শহরে প্রবেশ করে পৌর ভবনে হামলা চালায়। এসময় ইসরায়েলি হামলায় ইব্রাহিম সালামেহ নামে এক কর্মী নিহত হন। ইসরায়েলি বাহিনী এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি বলে টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। তবে হিজবুল্লাহ এই হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে।
এদিকে, হামাস নিরস্ত্র হোক—চায় না ৭০ শতাংশ ফিলিস্তিনি।
গত ২২ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত প্যালেস্টাইন সেন্টার ফর পলিসি অ্যান্ড সার্ভে রিসার্চের (পিসিপিএসআর) চালানো জরিপে এ তথ্য দেখা গেছে।
জরিপে অংশ নেওয়াদের ৭০ শতাংশ মনে করে, হামাসের হাতে অস্ত্র থাকলে যদি ইসরায়েল আবার হামলা শুরু করে তবু হামাস যেন অস্ত্র না ছাড়ে। হামাসের নিরস্ত্রীকরণের বিরোধিতা ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিমতীরে বেশি। সেখানে প্রায় ৮০ শতাংশ উত্তরদাতা হামাসের হাতে অস্ত্র দেখতে চাওয়ার কথা বলেছে। অথচ পশ্চিমতীর শাসন করছে হামাসের প্রতিদ্বন্দ্বী সংগঠন ফাতাহ। ইসরায়েলি গণহত্যার শিকার গাজা উপত্যকার ৫৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি হামাসের নিরস্ত্রীকরণের বিরোধিতা করেছেন।
এ ছাড়া ৬২ শতাংশ ফিলিস্তিনি মনে করে না ট্রাম্পের পরিকল্পনা সফল হবে। এই পরিকল্পনা যুদ্ধ বন্ধ করতে পারবে না বলে মনে করে তারা। পশ্চিমতীরের ৬৭ শতাংশ ও গাজার ৫৪ শতাংশ ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেছে। এক হাজার ২০০ জনের ওপর জরিপটি পরিচালিত হয়। তাদের ৭৬০ জন পশ্চিমতীর ও ৪৪০ জন গাজার বাসিন্দা।




