মন্ত্রী-এমপিদের সতর্ক করলেন প্রধানমন্ত্রী

SHARE

শিগগিরই দলে শুদ্ধি অভিযান চালানোর ইঙ্গিত দিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় নেতা ও এমপি-মন্ত্রীদের কড়া সতর্ক করে দিয়েছেন।image_94054_0

তিনি বলেন, ‘বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী যেই হোক তাকে রক্ষা করা হবে না। অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দায়ভার আওয়ামী লীগ নেবে না। অনৈতিক কর্মকাণ্ডে যেই জড়িত হবে কোনোদিক না তাকিয়ে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। কেউ তাদের রক্ষা করতে পারবে না।’

সোমবার রাতে গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এবং দলের সংসদীয় কমিটির সদস্যদের সঙ্গে যৌথ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এমন হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।

দলীয় সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এলাকায় নিজস্ব বলয় সৃষ্টি না করে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করুন। দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকুন।’

তবে বৈঠকে দুই আলোচিত এমপি শামীম ওসমান ও নিজাম উদ্দিন হাজারী উপস্থিত থাকলেও নারায়ণগঞ্জ, ফেনী ও লক্ষ্মীপুরের ঘটনা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলেও সূত্রে জানা যায়।

সূত্র জানায়, বিভিন্ন দল থেকে আওয়ামী লীগের অনুপ্রবেশকারী সুযোগসন্ধানীদের ব্যাপারেও সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এককভাবেই শক্তিশালী রাজনৈতিক দল। আমাদের কোটি কোটি নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ী রয়েছে। দল ক্ষমতায় থাকার সুবাদে বিএনপি-জামায়াত জোট ও তাদের সমর্থক সুযোগসন্ধানীরা আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে নানারকম অপকর্ম চালিয়ে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে। এদেরকে দলে রাখার কোনো প্রয়োজন নেই।’

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘কিছু লোক আছে যারা যে দলের সরকার ক্ষমতায় থাকে, সেই দলের লোক হয়ে যায়। এরা মূলত স্থায়ী গভর্নেন্ট পার্টির (সরকার পার্টি) লোক হিসেবে পরিচিত। এদের ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।’

সংসদ সদস্য তারানা হালিমের গ্রামের নিরক্ষর নারীদেরকে ধর্মের দোহাই দিয়ে জামায়াত বিভ্রান্ত করছে এমন প্রশ্ন উঠলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জামায়াতের নারী সদস্যরা গ্রামের নারীদের কাছে গিয়ে ভুল বোঝাচ্ছে।’ এতে জনগণ যেন বিভ্রান্তিতে না পড়ে সেজন্য আওয়ামী লীগের নারী এমপিদের সক্রিয় ভূমিকা রাখার নির্দেশ দেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘নারী এমপিদের সারাদেশের নারীসমাজকে ঐক্যবদ্ধ ও দলের নারী সংগঠনগুলোকে চাঙ্গা করার কাজ করতে হবে।’

এসময় তারানা হালিম দলের মধ্যে বিদ্যমান অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘সম্প্রতি অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকতাম, তবে আরো অনেক উপজেলাতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা বিজয়ী হতো। সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও তাই হতো। শুধুমাত্র দলীয় কোন্দলের কারণে আমাদের অনেক কিছু হারাতে হয়েছে।’ তিনি এ ব্যাপারে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

ঢাকার-১৬ আসনের এমপি কামাল আহমেদ মজুমদার দ্রুত নগর কমিটি গঠনের তাগিদ দিয়ে বলেন, ‘ঢাকা মহানগরীর ওয়ার্ড, থানা, ইউনিয়ন ও মূল নগরের কাউন্সিল হয়েছে। কিন্তু এখনো কমিটি গঠন হয়নি।’ তিনি দলের সৎ, ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের সমন্বয়ে নগর কমিটি গঠনের দাবি জানান বৈঠকে।

এছাড়া বৈঠকে দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সংসদের বাজেট অধিবেশনে সরকার এমপিদের ভাষণের ধরন এবং সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড কীভাবে তুলে ধরতে হবে সে ব্যাপারে ব্যাখ্যা দেন।