জিয়াউর রহমান মারা না গেলে তাকেও বঙ্গবন্ধু হত্যার আসামি করা হতো’ প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ বলেছেন, ‘ডেপুটি স্পিকার হত্যার জন্যও তো বিচার হতে পারে। সংসদে দাঁড়িয়ে সিরাজ সিকদারকে হত্যার কথা নিজ মুখে স্বীকারোক্তি করার দায়েও তো বিচার হতে পারে।’
মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ‘বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকারের মন্ত্রীদের কটূক্তি ও লাগামহীন অশালীন বক্তব্যের প্রতিবাদে’ আয়োজিত এক প্রতিবাদসভায় তিনি এ কথা বলেন।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ড্রয়িং রুমে বসে যেসব কথাবার্তা বলেন, সেসব কথাবার্তা যাচাই-বাছাই না করেই বিভিন্ন মিটিংয়ে তা বলেন। আসলে প্রধানমন্ত্রী বেয়াকুবি কথা বলেন।’
এসময় আওয়ামী লীগের সকল মন্ত্রীকে ভাল করে বাংলাভাষা শিখে বক্তব্য দেয়ার পরামর্শ দেন হান্নান শাহ। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া তারেক রহমানকে নিয়ে মন্ত্রীরা সেসব অশালীন বক্তব্য দেন এবং মিথ্যাচার করেন এর জন্য তাদের ভাল করে বাংলাভাষা শিখে বক্তব্য দেয়া উচিত।’
তিনি আওয়ামী লীগের মন্ত্রীদের বেলাজ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘এদের জন্মের সময় কোনো দাদী নানী চোখ ধুইয়ে দেয়নি। এজন্য তাদের চোখে লজ্জা নেই। এজন্য তারা বেলাজের মতো কথা বলে।’
স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে তারেকের বক্তব্য সম্পর্কে আওয়ামী লীগ নেতাদের চ্যালেঞ্জ করে তিনি বলেন, ‘জিয়ার বক্তব্য টেলিভিশন এবং রেডিওতে প্রচার করা হোক। জিয়ার ঘোষণা রেডিওতে প্রচার করা হোক। তখন দেখবেন তারেক রহমান সত্য বলেছেন কিনা। কিন্তু আপনারা তা করবেন না। কারণ আপনারা সত্য বলতে ভয় পান।’
এসময় তিনি দাবি করে বলেন, ‘স্বাধীনতার ঘোষণা যে জিয়া দিয়েছেন, সে বিষয়টি তাজউদ্দিনের মেয়ের বইয়ে উঠে এসেছে। তাজউদ্দিন আহমেদ নিজ কানে স্বাধীনতার ঘোষণা শুনেছেন একথা তার মেয়ে তার বইয়ে লিখেছেন। তাকে তো আওয়ামী লীগ রাজাকার বলতে পারবে না।’
আওয়ামী লীগ নেতারা তারেক রহমানকে উন্মাদ বলার জবাবে তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান যে তথ্য দিয়েছেন তা শোনার পর তাদের মাথা গোলমাল হয়েছে। তারাই উন্মাদ ও পাগল হয়ে গেছে।’
মায়ানমারের সীমান্ত রক্ষিবাহিনী বিজিপির গুলিতে বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশে (বিজিবি) এর নায়েক মিজানুর রহমান নিহত হওয়ার ঘটনায় হান্নান শাহ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তো বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় বলেছিলেন একটি লাশ পড়লে দশটি লাশ ফেলে দাও। তাহলে এখন তিনি কেন কোনো নির্দেশনা দেননি। বিজিবি সদস্যরা কোনো নির্দেশনা না পাওয়ার কারণে তারা গুলি চালাতে পারেনি।’
তিনি বলেন, ‘নির্দেশনা ও পরিচালনার অভাবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।’ আওয়ামী লীগ নেতাদের দুর্নীতির ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘মনে রাখবেন, আপনাদের ছেলেমেয়েদের দুর্নীতির কথা একদিন প্রকাশ পাবে, জনগণ জানতে পারবে, তখন আপনারা রাজনীতি করতে পারবেন কিনা সন্দেহ।’
প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রতন। বক্তব্য দেন যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শাম্মী আক্তার, হেলেন জেরিন খান প্রমুখ।