গাড়ি চাপা দিয়ে পথচারী হত্যার দায়ে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড পাওয়া সালমান খানকে দুই দিনের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছে মুম্বাই উচ্চ আদালত। এর মেয়াদকাল ৮ মে পর্যন্ত। তবে তার এই জামিন বাতিলের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করা হয়েছে।
সালমানের জামিনের ব্যাপারে মুম্বাই উচ্চ আদালত তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নিয়ে বলে অভিযোগ করা হয়েছে বিশেষ লিভ পিটিশনে। তবে মুম্বাই উচ্চ আদালত জানিয়েছে, রায়ের ‘সার্টিফায়েড কপি’ না পাওয়ায় দু’দিনের অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ৮ মে।
২০০২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ভোররাতে বান্দ্রার হিল রোডে আমেরিকান এক্সপ্রেস বেকারির সামনে সালমানের টয়োটা ল্যান্ডক্রুজার গাড়ির চাপায় মৃত্যু হয় এক পথচারীর। আহত হন ফুটপাতে ঘুমিয়ে থাকা আরও চারজন। এর দায়ে তাকে পাঁচ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। তবে মৃত কিংবা আহত ব্যক্তিদেরকে কোনো ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়নি।
সালমানের বিরুদ্ধে শাস্তিযোগ্য অনিচ্ছাকৃত হত্যার ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ পার্ট ২ ধারা, বেপরোয়া গাড়ি চালানোর দায়ে ২৭৯ ধারা, প্রাণঘাতী হতে পারে এমন আঘাতের কারণে ৩৩৭ ধারা, গুরুতর আহত করার জন্য ৩৩৮ ধারা, কুকর্ম করে সম্পত্তি নষ্টের দায়ে ৪২৭ ধারা, আইন ভেঙে এবং মদ্যপান করে গাড়ি চালানোর দায়ে পরিবহন আইনের তিনটি ধারা এবং মদ্যপান করে গাড়ি চালানোর কারণে মুম্বাই প্রোহিবিশন অ্যাক্টের দু’টি ধারা অনুযায়ী পাঁচ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে।
তবে সালমানের শাস্তি সর্বোচ্চ ১০ বছর হতে পারতো। তবে মুম্বাইয়ের সেশন্স আদালতের দায়রা বিচারক ডি ডব্লিউ দেশপাণ্ডে পাঁচ বছরের সাজার সিদ্ধান্ত দেন। আইনজীবীদের একাংশের মতে, বিইং হিউম্যান ফাউন্ডেশন গড়ে সামাজিক কর্মকান্ডে অবদান এবং অসুস্থতার দিকটি হয়তো বিচারক বিবেচনা করেছেন।
গত ৬ মে সকালে সালমান আদালতে পৌঁছানোর পর কাঠগড়ায় দাঁড়ালেন বিচারক দেশপান্ডে তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনি গাড়ি চালাচ্ছিলেন। মদ্যপ ছিলেন। আপনার বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে ফুটপাথবাসীর মৃত্যু হয়েছিলো। আপনার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। আপনার কিছু বলার আছে?’ উত্তরে ৪৯ বছর বয়সী এই অভিনেতা বলেন, ‘আমি গাড়ি চালাচ্ছিলাম না। তবে আপনার রায়কে সম্মান জানাচ্ছি এবং মেনে নিচ্ছি। আমার তরফে আইনজীবী কথা বলবেন।’
এই মামলায় সালমানের প্রধান আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছেন শ্রীকান্ত শিভাড়ে। তবে রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ আইনজীবী প্রদীপ ঘারাটের কাছে হার মানতে হয়েছে তাকে। এরপর বলিউডের এই সুপারস্টারের জামিনের জন্য মুম্বাই উচ্চ আদালতে যান আরেক আইনজীবী হারিষ সালভে।