জনগণকে ধোঁকা দিচ্ছে সরকার: রউফ

SHARE

digontoষমতাসীনরা জনগণকে ধোঁকা দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি আব্দুর রউফ। তিনি বলেছেন, “জনগণকে ক্ষমতার উৎস বললেও বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে তাদের ধোঁকা দেয়া হচ্ছে।”

বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘দিগন্ত টেলিভিশন সাময়িক সম্প্রচার নিষেধাজ্ঞার আঁধারে দুঃসহ দুই বছর’শীর্ষক এক প্রতিবাদী সংহতি সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

সভায় বক্তব্য দেন সম্মিলিত পেশাজীবী  পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রুহুল আমিন গাজী, সাংবাদিক কলামিস্ট মাহফুজ উল্লাহ, দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকার সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দীন, কলামিস্ট ও কবি ফরহাদ মজহার, জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ঢাবির শিক্ষক সুকোমল বড়ুয়া, ডিআরইউর সভাপতি  শাখাওয়াত হোসেন বাদশা, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস হোসেন, প্রেস ক্লাবের  যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ।

ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে রউফ বলেন, “আপনারা জনগণকে যেমন  বোকা ভাবেন, জনগণ তেমন বোকা নয়। তারা (জনগণ) যা বুঝে আপনারাই তা বোঝেন না। একদিন আপনাদের ক্ষমতায় থেকে তারাই নামাবে।”

সাবেক এই প্রধান নির্বাচন কমিশনার অভিযোগ করন, “সরকার সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের আড়ালে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে।” দেশের সংবিধান পরিবর্তন না করা পর্যযন্ত মিডিয়ার ওপর  অত্যাচার চলতে থাকবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

সম্মিলিত পেশাজীবী  পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রুহুল আমিন গাজী বলেন,  “কয়েক দিন হলো মুক্ত মিডিয়া দিবস  গেছে, সেখানে মিডিয়ার অনেক সমালোচনা করেছেন তথ্যমন্ত্রী। কিন্তু যেসব মিডিয়া বন্ধ আছে,  সে সম্পর্কে তিনি (ইনু) কোনো কথা বলেননি, এটা খুবই  দুঃখজনক।”

সাংবাদিক কলামিস্ট মাহফুজ উল্লাহ বলেন, “যে সমাজে ভিন্নমত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকে না, সে সমাজ বেশিদিন টেকে না। যারা টেবিলে বসে বক্তব্য দেয়, তারা কখনো বন্ধ গণমাধ্যম খুলতে পারে না।”

দিগন্ত টিভি বন্ধের কারণে তার কষ্টের কথা জানান মাহফুজ উল্লাহ, “দিগন্ত টেলিভিশন বন্ধের কারণে আমি দুই ধরনের কষ্টে আছি। প্রথমটি হলো সঠিক তথ্য থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে; দ্বিতীয়টি হলো যারা এখানে কাজ করেছে, তাদের পরিবারের নিদারুণ করুণ কাহিনী নিয়ে।”

দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকার সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দীন বলেন, “আমি ৫০ বছর ধরে সাংবাদিকতা করছি। মিডিয়ার ওপর এ রকম পরিস্থিতি কখনো দেখিনি। আজকে নয়াদিগন্ত  পত্রিকা অনেক জায়গাতে গোপনে পড়তে হয়।”

সরকার হিটলারকে অনুসরণ করছে্- এমন মন্তব্য করে মহিউদ্দীন বলেন, “হিটলার বলেছিল- দুটি জিনিস নিয়ন্ত্রণ করলে ক্ষমতায় থাকা যায়। একটি হলো গণমাধ্যম, অন্যটি ধর্ম। সরকার তা-ই করছে।”

ফরহাদ মজহার বলেন, “কিছু গণমাধ্যম সন্ত্রাসী মিডিয়া হিসেবে কাজ করছে। সাংবাদিক হয়েও যারা একটি দলের হয়ে কাজ করে, তারা সরকারি দলের ক্যাডার ছাড়া আর কিছু নয়।”

ফরহাদ মজহার বলেন, “দেশের মিডিয়া বন্ধের জন্য শুধু শেখ হাসিনাই দায়ী নন, এটা ফেলস্টেটের গভীর ষড়যন্ত্র।” বর্তমান ক্ষমতাসীনদের কপালে দুর্ভোগ আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি বাংলাদেশে শান্তি আসবে না। সামনে আরো কঠিন সময় অতিক্রম করতে হবে।”

ফরহাদ আরো বলেন,“বাংলাদেশে্ এখন এমন পরিস্থিতি বিরাজ করছে্- প্রিয় নবীর বিরুদ্ধে কথা বললে কিছু হয় না; অথচ বঙ্গবন্ধু ও হাসিনার বিরুদ্ধে কথা বললে খবর আছে।”