দলীয় ৫৮ রানের মধ্যে দুই ওপেনার আউট হলেও ইউনিস খান ও আজহার আলীর ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় পাকিস্তান। এই দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের পার্টনারশিপে ভর করে বড় সংগ্রহর পথে এগোচ্ছে সফরকারীরা। দু’জনই শতক হাঁকিয়ে ব্যাট করছেন।
ইউনিস ১৪২ বল মোকাবেলায় ৯টি চার ও এক ছক্কায় টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৯তম সেঞ্চুরি পূরণ করেন। অন্যদিকে, ১০টি চারের সাহায্যে আজহারের শতকটি আসে ২১২ বল থেকে।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৭২.২ ওভার শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ দুই ইউকেটে ২৫০ রান। ইউনিস (১১০*) ও আজহার (১০৫*) ১৯১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ব্যাট করছেন।
শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে ফিল্ডিংয়ে নামে স্বাগতিক বাংলাদেশ। টস জিতে এ ম্যাচে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন টাইগার দলপতি মুশফিকুর রহিম।
মোহাম্মদ শহীদ নিজের দ্বিতীয় ওভারেই পাকিস্তান শিবিরে আঘাত হানেন। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের তৃতীয় বলে মুশফিকের তালুবন্দি হয়ে সাজঘরে ফেরেন প্রথম টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরিয়ান মোহাম্মদ হাফিজ (৮ রান)। এর আগে আরেক পেস বোলার শাহাদাত চোটের কারণে মাঠের বাইরে চলে যান। তবে, প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা পর মাঠে ফেরেন শাহাদাত। তবে, মধ্যাহ্ন বিরতির সময় অনুশীলন করতে গেলে আবারো চোট পান তিনি।
দিনের শুরুতে হাফিজকে হারিয়ে বেশ বড় ধাক্কা খায় সফরকারী পাকিস্তান। দলীয় ৯ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারানো পাকিস্তানকে আরেকবার কাঁপিয়ে দেন মোহাম্মদ শহীদ। নিজের ষষ্ঠ ওভারে থার্ড স্লিপে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন আজহারকে। তবে, ‘নো বল’ হওয়ায় এ যাত্রায় বেঁচে যান আজহার।
খুলনা টেস্টের ৬ উইকেট পাওয়া বাংলাদেশের সফল বোলার তাইজুলের শিকারে দলীয় ৫৮ রানের মাথায় সাজঘরে ফেরেন সামি আসলাম। চোটের কারণে বাইরে থাকা শাহদাত মাঠে ফিরলে তার হাতেই ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নেন ব্যক্তিগত ১৯ রান করা সামি আসলাম।
প্রথম সেশনের ২৮ ওভার ব্যাট করে পাকিস্তান মাত্র ৭০ রান তোলে। সেটিও দুই উইকেট হারিয়ে। কিন্তু, দ্বিতীয় সেশনে কোনো উইকেট না হারিয়ে আরও ১২৬ রান স্কোরবোর্ডে জমা করে সফরকারীরা। আর সেটি মাত্র ৩১ ওভার ব্যাট চালিয়ে। দিনের শেষ সেশনে ব্যাট করতে নামেন অপরাজিত থাকা আজহার আলি এবং ইউনিস খান।
দিনের শুরুতে বাংলাদেশের হয়ে বোলিং সূচনা করতে আসেন শাহাদাত হোসেন। আর পাকিস্তানের ব্যাটিং উদ্বোধন করতে ক্রিজে আসেন গত টেস্টের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান মোহাম্মদ হাফিজ এবং সামি আসলাম।
বাংলাদেশের হয়ে ইনজুরির কারণে মাঠে নামতে পারেন নি রুবেল হোসেন। তার জায়গায় দলে এসেছেন শাহাদাত হোসেন। শাহাদাতের সঙ্গে পেস বোলিংয়ে জুটি বাঁধবেন খুলনা টেস্টে অভিষিক্ত মোহাম্মদ শহীদ। অন্যদিকে পাকিস্তান জুলফিকার বাবরের পরিবর্তে ইমরান খানকে দলে নিয়েছে।
আগেই ওয়ানডে সিরিজ ও টি-টোয়েন্টির একমাত্র ম্যাচটি জেতা হয়েছে বাংলাদেশ দলের। খুলনা টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২৯৬ রানে পিছিয়ে থেকেও প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ ড্র করে টাইগাররা। তাই, এ টেস্ট ম্যাচটিকে ‘ফাইনাল’ মানছেন বাংলাদেশ দলপতি মুশফিকুর রহিম।
প্রথমবারের মতো পাকিস্তানকে টেস্ট ক্রিকেটে হারানো ও সিরিজ জয়ের দারুণ এক সুযোগ বাংলাদেশের সামনে। ক্রিকেটাররাও মুখিয়ে আছেন শেষ টেস্টে দেশ ও দলকে ভালো কিছু উপহার দিতে।
অন্যদিকে পাকিস্তান দলের আত্মবিশ্বাস তলানীতে। খুলনা টেস্টের প্রথম ইনিংসে প্রায় তিন’শ রানের লিড নিয়েও বাংলাদেশকে হারাতে পারেনি সফরকারীরা।
বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, মুমিনুল হক, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান, তাইজুল ইসলাম, সৌম্য সরকার, শুভাগত হোম, শাহাদাত হোসেন, ও মোহাম্মদ শহীদ।
পাকিস্তান একাদশ: সামি আসলাম, মোহাম্মদ হাফিজ, আজহার আলি, ইউনিস খান, মিসবাহ-উল-হক (অধিনায়ক), আসাদ শফিক, সরফরাজ আহমেদ, ওয়াহাব রিয়াজ, জুনায়েদ খান, ইয়াসির শাহ ও ইমরান খান।