জম্মু ও কাশ্মীরের কুপওয়ারা, বারামুলা, উরি ও আখনুর সীমান্ত এলাকায় মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার (৭-৮ মে) ভোর পর্যন্ত গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে বলে এনডিটিভর প্রতিবেদনে বালা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, এই হামলায় অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে চার শিশু ও একজন সেনা সদস্য রয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৮ মে) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
ভারতের সেনাবাহিনীও এ খবর নিশ্চিত করেছে বলেও এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘৭-৮ মে রাতের মধ্যে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ছোট অস্ত্র ও আর্টিলারি গান দিয়ে কুপওয়ারা, বারামুলা, উরি ও আখনুরের বিপরীত দিকে বিনা উসকানিতে হামলা চালায়। ভারতীয় সেনাবাহিনী উপযুক্ত জবাব দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ৭ মে ভোরে শুরু হওয়া ‘অপারেশন সিন্দুর’ অভিযানে ভারত পাকিস্তানের ৯টি স্থানে ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এসব ঘাঁটি ছিল পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে অবস্থিত, যেখানে ‘লস্কর-ই-তইয়্যেবা, জইশ-ই-মোহাম্মদ ও হিজবুল মুজাহিদিন’-এর সদস্যরা আশ্রয় নিয়েছিল।
রাত ১টা ৫ মিনিটে শুরু হওয়া ‘অপারেশন সিন্দুর’ ২৫ মিনিট ধরে চলে। এতে প্রায় ৭০ জন ‘সন্ত্রাসী’ নিহত ও ৬০ জন আহত হয় বলে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে।
এই অভিযানের প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী কাশ্মীর সীমান্তে বছরের অন্যতম তীব্র আর্টিলারি ও মর্টার গোলাবর্ষণ শুরু করে। জম্মুর পুঞ্চ এলাকায় গুলিতে নিহত হন হরিয়ানার সেনা দিনেশ কুমার শর্মা।
হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী নাইয়াব সাইনি তার মৃত্যুর খবর জানিয়ে বলেন, ‘আপনার এই আত্মত্যাগ দেশের প্রতিটি নাগরিকের গর্ব। দেশ কখনো আপনাকে ভুলবে না।’
গত ২২ এপ্রিল ‘মিনি সুইজারল্যান্ড’ নামে পরিচিত পর্যটন এলাকা কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসীরা গুলি চালালে অন্তত ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন, যাদের মধ্যে একজন নেপালি পর্যটকও ছিলেন। এরপরই ভারত ইন্দাস পানি চুক্তি স্থগিত করে এবং সীমান্তে উত্তেজনা শুরু হয়। পাল্টা-পাল্টি হামলার পর পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তজুড়ে।