বাণিজ্য যুদ্ধ নিরসনে শনিবার বৈঠকে বসছে যুক্তরাষ্ট্র-চীন

SHARE

বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অস্থিরতা ও বাণিজ্য যুদ্ধ নিরসনের পদক্ষেপ হিসেবে আগামী শনিবার (১০ মে) সুইজারল্যান্ডে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের শীর্ষ কর্মকর্তারা। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট এবং প্রধান বাণিজ্য আলোচক জেমিসন গ্রিয়ারের সঙ্গে জেনেভায় বৈঠক করবেন চীনের অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারক হে লিফেং।

ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার (৬ মে) রাতে এ বৈঠকের ঘোষণা আসার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের ইকুইটি ইনডেক্স ফিউচারের মূল্য বেড়ে যায়। চীন ও হংকংয়ের শেয়ারবাজারেও বুধবার সকালে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যায়।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মধ্যে পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়, যার ফলে পণ্যে আমদানি শুল্ক ১০০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। এই পরিস্থিতিকে ‘প্রায় বাণিজ্য অবরোধের’ সমতুল্য বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি বেসেন্ট।

জেনেভায় অনুষ্ঠেয় আলোচনায় শুল্ক হ্রাস, নির্দিষ্ট পণ্যের উপর শুল্ক এবং যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক নানা ইস্যুতে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

বৈঠকের ঘোষণা দেওয়ার পর ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বেসেন্ট বলেন, ‘আমার মনে হয় এই বৈঠকের মূল লক্ষ্য হবে উত্তেজনা কমানো।

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে বৈঠকে বসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এক বিবৃতিতে চীন বলেছে, ‘বিশ্বের প্রত্যাশা, চীনের স্বার্থ এবং যুক্তরাষ্ট্রের শিল্প ও ভোক্তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে চীন আলোচনায় বসতে সম্মত হয়েছে।’

তবে চীন সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ‘প্রাচীন চীনা প্রবাদে আছে, কী বলা হলো তা শোনা জরুরি, কিন্তু কী করা হলো তা দেখা আরও জরুরি। যুক্তরাষ্ট্র যদি একরকম বলে আর অন্যদিকে ভিন্ন কাজ করে বা আলোচনার আড়ালে চাপ সৃষ্টি ও ব্ল্যাকমেইল করে, তাহলে চীন কখনোই তাতে রাজি হবে না।

চীনের রফতানি নির্ভর কারখানা খাত এখন বড় ধরনের চাপে রয়েছে। অনেক বিশ্লেষক ২০২৫ সালের জন্য চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস কমিয়ে দিয়েছেন। জাপানি বিনিয়োগ ব্যাংক নোমুরা সতর্ক করেছে যে, বাণিজ্য যুদ্ধের ফলে চীনে ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।

চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বুধবার নতুন আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছে, যার মধ্যে রয়েছে সুদের হার কমানো ও ব্যাংকিং ব্যবস্থায় নগদ অর্থ প্রবাহ বাড়ানো। বিশ্লেষকরা এটিকে কৌশলগত ও পরিমিত পদক্ষেপ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন।