বিশ্বের ক্যাথলিক খ্রিস্টান ধর্মের সর্বোচ্চ নেতা পোপ ফ্রান্সিস আর নেই। সোমবার (২১ এপ্রিল) ৮৮ বছর বয়সে তিনি ভ্যাটিকানের কাসা সান্তা মার্তা বাসভবনে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
ভ্যাটিকান সূত্রে জানা গেছে, তিনি মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ (সেরিব্রাল স্ট্রোক) এবং হৃদযন্ত্রের ব্যর্থতায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। মৃত্যুর আগে তিনি কোমায় চলে যান বলে তার মৃত্যুসনদে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিবিসি ও আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, পোপ ফ্রান্সিস স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে মারা যান। ভ্যাটিকানের চিকিৎসক আন্দ্রেয়া আর্কাঞ্জেলি মৃত্যুসনদে তার মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করেন।
মৃত্যুর আগের দিনই পোপ তার শেষ বড় ধরনের প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে অংশ নেন। ইস্টার উপলক্ষে সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে উপস্থিত হাজারো অনুসারীর উদ্দেশ্যে তিনি একটি বার্তা দেন, যা একজন সহকারী পড়ে শোনান।
পোপ ফ্রান্সিস তার ১২ বছরের দায়িত্বকালে নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি ডাবল নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ফেব্রুয়ারি ও মার্চে রোমের জেমেলি ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে ৩৮ দিন ভর্তি ছিলেন।
তার মৃত্যুসনদে আরও উল্লেখ করা হয়, তিনি উচ্চ রক্তচাপ, বহুস্থানে ব্রঙ্কিয়েকটাসিস (ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা) এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন, যা আগে জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি।
পোপের মৃত্যুর পর ভ্যাটিকান তার আধ্যাত্মিক উইল প্রকাশ করেছে। সেখানে তিনি অনুরোধ করেছেন, যেন তাকে রোমের সেন্ট মেরি মেজর গির্জায় কবর দেওয়া হয়, যেখানে অতীতের অনেক পোপকে দাফন করা হয়নি। উইলে তিনি লেখেন, “আমি চাই মাটির নিচে, বিনা অলঙ্কারে একটি সাধারণ সমাধি হোক, শুধু ল্যাটিন ভাষায় ‘ফ্রান্সিসকাস’ (ফ্রান্সিস) নামের শিলালিপিসহ।”
এই উইলটি তিনি ২০২২ সালের ২৯ জুন লিখেছিলেন। পোপ আরও লেখেন, “আমি যখন আমার পৃথিবীর জীবনের শেষ সময় ঘনিয়ে আসা অনুভব করছি, তখন আমি শুধুমাত্র আমার সমাধির স্থান সংক্রান্ত ইচ্ছাগুলো ব্যক্ত করছি। যারা আমাকে ভালোবেসেছেন এবং আজও আমার জন্য প্রার্থনা করছেন, তাদের জন্য প্রভু যেন উপযুক্ত প্রতিদান দেন।”