যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী থেকে ট্রান্সজেন্ডারদের বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়ে নির্বাহী আদেশ জারি করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার সেই নির্বাহী আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন দেশটির আদালত। গতকাল মঙ্গলবার ফেডারেল বিচারক আনা রেয়েস ট্রাম্পের সেই নির্বাহী আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেন।
ওয়াশিংটনে মার্কিন জেলা বিচারক আনা রেয়েস বলেছেন, ট্রাম্প ২৭ জানুয়ারির আদেশটি জারি করেছিলেন।
সামরিক চাকরি থেকে ট্রান্সজেন্ডারদের বহিষ্কার করার এ আদেশটি তাদের সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করে।
ট্রাম্পের ডেমোক্র্যাটিক পূর্বসূরি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রেইসকে নিয়োগ করেছিলেন। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত প্রশাসনকে এ বিষয়ে আবেদনের সময় দিয়েছেন এই বিচারক।
এদিকে বাদীদের আইনজীবী জেনিফার লেভি এ বিষয়ে সিদ্ধান্তমূলক এবং দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আদালতের প্রশংসা করেছেন।
লেভি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আদালত পদ্ধতিগতভাবে এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। সাহসী ট্রান্সজেন্ডারা সম্মানের সঙ্গে তাদের দেশকে সেবা করতে চায়, এর বেশি কিছু চান না তারা।’
হোয়াইট হাউস এবং পেন্টাগনের প্রতিনিধিরা তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্যে করেনি। তবে ট্রাম্পের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ স্টিফেন মিলার বলেছেন, ‘বিচারকেরা এখন নিজেদের সেনাবাহিনীর সর্বেসর্বা মনে করছেন! এই উন্মাদনার কি শেষ নেই?’
এর আগে ট্রান্সজেন্ডারদের জন্য সরকারি নথিতে পৃথক লিঙ্গের ব্যবস্থা নিয়ে নীতি চালু করেছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
তবে ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসেই সমস্ত নীতি বদলে ফেলতে উদ্যোগী হন। ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণার প্রায় ৫০ শতাংশ ছিল সমকামী ও ট্রান্সজেন্ডারদের বিরুদ্ধে প্রচার।
তাই ক্ষমতায় এসে প্রথমেই ট্রান্সজেন্ডারদের নিয়ে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেন ট্রাম্প। ২৭ জানুয়ারির ওই আদেশে বলা হয়, একজন ব্যক্তির ‘লিঙ্গপরিচয়’ নিয়ে ‘দ্বন্দ্ব’ থাকলে তা কখনওই সামরিক বাহিনীর জন্য প্রয়োজনীয় কঠোর মান পূরণ করতে পারে না!
এরপর গত ১১ ফেব্রুয়ারি সামরিক বাহিনী জানিয়েছিল, তারা ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিদের সেনাবাহিনীতে যোগদানের অনুমতি দেবে না এবং লিঙ্গ পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রক্রিয়াগুলো সম্পাদন বা সহজতর করা বন্ধ করবে। সেই মাসের শেষের দিকেই সামরিক বাহিনী জানায় তারা ট্রান্সজেন্ডার সদস্যদের বহিষ্কার করা শুরু করবে।
রেয়েস তার রায়ে বলেন, ‘সরকার স্বীকার করেছে বাদীরা চমৎকার সেনা। ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিরাও যুদ্ধের নীতি, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য, নিঃস্বার্থতা, সম্মান, সততা এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পারেন, যাতে সামরিক উৎকর্ষতা নিশ্চিত করা যায়। তাহলে কেন তাদের এবং অন্যান্য সম্মানিত সেনাদের অব্যাহতি দেওয়া হবে?’
সূত্র : রয়টার্স, এপি