ভারতকে ‘প্রকৃত বন্ধু’ হিসেবে মন্তব্য করে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, অনেকেই অভিযোগ করেন যে আওয়ামী লীগ ভারতের দালাল। এটা ঠিক নয়।
নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে ‘খাবার বাড়ি পালকী সেন্টারে’ শনিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের এক আলোচনা সভায় এই মন্তব্য করেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানের কথা তুলে ধরে আমু বলেন, আওয়ামী লীগ স্বার্থপর নয় বলেই একাত্তুরের স্বাধীনতাযুদ্ধে ভারতের অবদান ভুলে যায়নি। ভারতের সাথে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক থাকলেও দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাদের ছাড় দেইনি। যার বড় প্রমাণ আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে সমুদ্র বিজয় অর্জন করা। তাই ভারতের কাছ থেকে প্রাপ্য নিয়ে আমাদের কোন ছাড় থাকবে না। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে তাদের অবদান ভুলে যাওয়াটা হবে স্বার্থপরতা।
বিএনপি-জামায়াতের হরতাল-অবরোধের কড়া সমালোচনাও করেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘একটি সাংবিধানিক সরকারকে ধ্বংস করতেই অবরোধ-হরতালের নামে পেট্রোলবোমা মেরে ৭১-এর মতোই নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বিএনপি-জামায়াত জোট।
একই কায়দায় ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে বানচাল করতে তারা নির্বাচনী কেন্দ্রগুলোতে পৈশাচিক কায়দায় হামলা চালিয়েছে। যারা পেট্রোলবোমা মেরে মানুষ হত্যা করে তারা হচ্ছে ডাকাত। ডাকাতের সাথে কীসের আলোচনা, মন্তব্য করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর এই সদস্য আরও বলেন, বিএনপি-জামায়াত অতীতেও অনেক চক্রান্ত করেছে। বিএনপি নেত্রী যে কতটা স্বাধীনতাবিরোধী তার প্রমাণ তিনি নিজেই দিয়েছেন।
তাদের আন্দোলন আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নয়। তাদের আন্দোলন হচ্ছে স্বাধীনতা বিরোধীদের রক্ষায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে, অভিযোগ করেন আমু।
তিনি আরও বলেন, আপনারা জানেন ২০০৪ সালে শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে খালেদা ও তারেক। কিন্তু আল্লাহর রহমতে শেখ হাসিনা বেঁচে যান। আমি বিশ্বাস করি বঙ্গবন্ধু পরিবারের ওপর আল্লাহর রহমত আছে বলেই একাত্তুরের পর থেকে পুরো পরিবারকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেও তারা সফল হয়নি। আপনারা দেখেছেন শিশু শেখ রাসেলকেও কীভাবে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে বাংলাদেশকে রক্ষার জন্য শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বেঁচে আছেন। তারাই আগামীতে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। শত চেষ্টা করেও স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে ধ্বংস করা যাবে না।
বিএনপি জামায়াত জোট আন্দোলনের নামে দেশকে সাংবিধানিক সঙ্কটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে অভিযোগ করে আমু বলেন, এখন বাংলাদেশ আগের অবস্থানে নেই। পেট্রোলবোমার মত মানুষ হত্যা করে সংলাপে বসার স্বপ্ন দেখবে এটা বাস্তবায়ন হবে না। যারা মানুষ হত্যাকারী তারা ডাকাত। ডাকাতের সাথে কোন সংলাপ নয়।
প্রবাসী নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, আপনারা অতীতে যেভাবে সরকারবিরোধীদের অপপ্রচার বিদেশের মাটিতে প্রতিহত করছেন আগামীতেও তা অব্যাহত রাখবেন।
আওয়ামী লীগের যুক্তরাষ্ট্র শাখা সভাপতি ডা. সিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদের সঞ্চালনায় এতে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতারাও বক্তব্য রাখেন।