আদালত থেকে হাসতে হাসতে বেরিয়ে গেলেন আমোস ই প্যাং স্যাং৷ আদালত তার জামিন দিয়েছে৷ তার বাবার মুখে তারপরও হাসি নেই৷ সাংবাদিকদের তিনি বললেন, ‘‘ছেলের হয়ে আমি ক্ষমা চাই৷ প্রধানমন্ত্রীর কাছে ক্ষমা চাই আমি!”
১৬ বছর বয়সি আমোস ই প্যাং স্যাং-এর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো বেশ মারাত্মক৷ একই সঙ্গে সাধারণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়া, আধুনিক সিঙ্গাপুরের প্রতিষ্ঠাতা লি কুয়ান ইউ-এর অবমাননা এবং অশ্লীলতার অভিযোগে মামলা হয়েছে তার বিরুদ্ধে৷ সম্প্রতি ৮ মিনিটের এক ভিডিও তৈরি করে ইউটিউবে ছেড়ে দেন তিনি৷ ভিডিওচিত্রের নাম দিয়েছেন, ‘অবশেষে মারা গেলেন লি কুয়ান ইউ’৷ ভিডিওচিত্রে তিনি সদ্য প্রয়াত লি কুয়ান ইউ-কে তীর্যক ভাষায় কটাক্ষ করেন৷
১৯৫৯ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী থেকে সিঙ্গাপুরকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়া লি কুয়ানকে যীশু খ্রিষ্টের সঙ্গে তুলনা করে আমোস বলেছেন, ‘‘তারা দুজনই ক্ষমতালিপ্সু৷” যীশু এবং লি কুয়ান দুজনই অত্যাচারী হয়েও নিজেকে সবার কাছে মহান হিসেবে তুলে ধরেছেন বলেও মন্তব্য করেছেন আমোস৷
গত ২৩ মার্চ ৯১ বছর বয়সে মারা যান আধুনিক সিঙ্গাপুরের স্থপতি হিসেবে সারা বিশ্বে পরিচিত লি কুয়ান ইউ৷ তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে দেশে৷ লক্ষাধিক মানুষ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে তাকে শেষ বিদায় জানান৷ সরকারি হিসাব অনুযায়ী ৫৫ লক্ষ মানুষের দেশ সিঙ্গাপুরের অন্তত ৪ লক্ষ ৫৪ হাজার ৬৮৭ জন মানুষ প্রয়াত রাষ্ট্রনায়ককে শ্রদ্ধাভরে বিদায় জানিয়েছেন৷
সামোন উ প্যাং স্যাং ঠিক লি কুয়ানের মৃত্যুর পরই ‘অবশেষে মারা গেলেন লি কুয়ান ইউ’ শীর্ষক ভিডিও প্রচার করে বিতর্কের জন্ম দেন৷ ভিডিওতে সিঙ্গাপুরের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী লি লুং-এর বিরুদ্ধেও ‘উসকানিমূলক’ বক্তব্য ছিল সেখানে৷ প্রধানমন্ত্রী চাইলে তার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন- এমন কথাও ভিডিওতে বলেছেন আমোস৷
লি কুয়ানের অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়ার দিনই গ্রেপ্তার হন আমোস৷ গত রোববার আদালতে হাজির করা হয়েছিল তাকে৷ তার পক্ষের উকিল জামিন আবেদন করায় সে আবেদন মঞ্জুর করে আদালত৷ পাশাপাশি ইউটিউব, নিজের ব্লগ বা অন্য কোনো ইন্টারনেট মাধ্যমে কোনো কিছু লেখা, কোনো ভিডিও বা অডিও প্রচার করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশও দেয়া হয়৷ ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হলে ৩ বছরের জেল এবং জরিমানা অথবা উভয় শাস্তি এবং অশ্লীলতার অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিন মাসের জেল, জরিমানা বা উভয় শাস্তিই হতে পারে আমোস ই-র৷
আমোস ই প্যাং স্যাংয়ের বিরুদ্ধে অশ্লীলতার অভিযোগ উঠেছে বৃটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের সঙ্গে লি কুয়ানের একটি কার্টুনের কারণে৷- ডিডব্লিউ