সোমবার সকালে ঢাকার তেজগাঁয়ে সন্ত্রাসীদের চুরিকাঘাতে ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান তুষার বাবু ওরফে ওয়াশিক বাবু নিহত হওয়ার একদিন পর মঙ্গলবার সকাল সাড়ে নয়টায় তার নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
তিনি রামগঞ্জ উপজেলার ৫নং চন্ডিপুর ইউনিয়নের উত্তর হাজীপুর গ্রামের নোয়াবাড়ির টিপু সুলতানের একমাত্র ছেলে।
নিহত ওয়াশিকের ভগ্নিপতি মনির হোসেন মাসুদ জানান, ওয়াশিক খুন হওয়ার পর তার জাতীয় পরিচয় সূত্র ধরে তেজগাঁ থানা পুলিশ সকাল সাড়ে ১১টায় তাদেরকে খবর দেন। খবর পেয়ে দ্রুত ছুটে যান থানায়। সেখান থেকে পুলিশি কার্যক্রম সম্পন্ন করে রাত সাড়ে ১১টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে পুলিশের উপস্থিতিতে তার লাশ গ্রহণ করেন পরিবারের লোকজন। ভোর চারটায় গ্রামের বাড়িতে তার লাশ নিয়ে আসার পর সকাল সাড়ে নয়টায় স্থানীয় দাইগড়া জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আবুল কালাম জানাজায় ইমামতি করেন। পরে ৫ নম্বর চন্ডিপুর ইউনিয়নের আবদুল করীম হাজী বাড়ীর (নোয়াবাড়ী) পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় নিহতের ভগ্নিপতি মনির হোসেন মাসুদ জানান, আমরা যতদূর জানতে পেরেছি, মূলত লেখালেখির কারণেই তাকে হত্যা করা হয়েছে।
একমাত্র বোন আসরাফী সুলতানা সিমু কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের জানান, ২০ বছর আগে আমরা মা হারাই, বাবা আমাদের ভাই-বোন দুজনকে কোলেপিঠে অনেক কষ্টে মানুষ করেছেন।
ছোট বেলা থেকেই তার ভাই ওয়াশিক বাবু খুবই মেধাবী ও শান্ত স্বভাবের ছিল। সে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত ছিল না, শুনেছি ব্লগে একটু লেখালেখি করত, এজন্য জঙ্গি সংগঠনের কেউ এ হত্যা করতে পারে। এ ছাড়া আমার ভাইয়ের কোন শত্রু ছিল না।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, ওয়াশিকুর রহমান ২০০৪ইং সালে রামগঞ্জ উপজেলার ৫নম্বর চন্ডিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে থেকে এসএসসি, তেজগাঁও কলেজ থেকে এইচ এস সি, জাতীয় বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে অনার্স ও মাষ্টার্স পাশ করে ঢাকাস্থ মতিঝিল ফারইস্ট ট্রাভেলস অ্যাভিয়েশনে কর্মরত ছিলেন। তার আচরণ খুব ভালো ছিল, তার সঙ্গে কখনও কারো মতনৈক্য হয়নি। এ রকম ছেলেকে মেরে ফেলা মেনে নেয়া কষ্টকর।