ভারতের বর্ধমান রাজ্যের খাগড়াগড় বিস্ফোরণের ঘটনায় চার বাংলাদেশিসহ ২১ জনের নামে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ।
জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দিয়ে বাংলাদেশে নাশকতা ঘটানোই লক্ষ্য ছিল নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতুল মুজাহিদিন জঙ্গিগোষ্ঠীর। চার্জশিটে এমনটাই দাবি করা হয়েছে।
সোমবার আদালতে এ চার্জশিট দেয় এনআইএ। ঘটনার প্রায় ৬ মাসের মাথায় নগর দায়রা আদালতে ১৬৪ পাতার এ চার্জশিট দেয়া হলো।
অভিযুক্ত হিসেবে ৪ বাংলাদেশি-সহ ২১ জনের নাম রয়েছে। এদের মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছে ১৩ জন। ৮ জনকে পলাতক দেখানো হয়েছে। চার্জশিটে ৪০০ জন সাক্ষীর নাম রয়েছে।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বেআইনি কার্যকলাপ রোধ আইন বা ইউএপিএ’র পাশাপাশি দেশদ্রোহিতা, প্রতারণাসহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে এনআইএ। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক, অস্ত্র আইনেও মামলা রুজু হয়েছে।
এনআইএর দাবি, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করার উদ্দেশ্য নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও ঝাড়খণ্ডে একাধিক জঙ্গি প্রশিক্ষণকেন্দ্র খুলেছিল জামায়াতুল মুজাহিদিন। কারণ, লাগাতার জঙ্গিবিরোধী অভিযানের কারণে বাংলাদেশে প্রশিক্ষণ শিবির চালানো কঠিন হয়ে পড়েছিল।
গত বছর ২ অক্টোবর দুর্গাষ্টমীর দিন ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে বর্ধমান জেলার খাগড়াগড়। গৃহস্থ বাড়িতে ভাড়া নিয়ে চুপিসারে সেখানে বোমা ও রকেট বানানোর সময় আচমকা আইইডি (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোজিভ ডিভাইস) বিস্ফোরণ ঘটে।
তদন্তে নেমে বাংলাদেশি জঙ্গিগোষ্ঠী জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) মডিউল ও স্লিপার সেলের খোঁজ পাওয়ার দাবি করে এনআইএ। তারা আরো দাবি করে, শুধু বর্ধমান নয়, এরাজ্যের একাধিক জেলায় জঙ্গিরা আস্তানা খুলে রেখেছে।
এই ঘটনার তদন্তে নেমে এক-এক করে এরাজ্যে বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, মালদা, বীরভূম এবং অসমের বরপেটা, সাহিবগঞ্জ ও ঝাড়খণ্ডের পাকুরে জঙ্গি-নেটওয়ার্কের হদিস পান তদন্তকারীরা। তাঁরা জানান, এরাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ মাদ্রাসার আড়ালে সেখানে জেহাদি প্রশিক্ষণ শিবিরও চালাত জেএমবি। সেরকমই জঙ্গি-শিবিরের খোঁজ মেলে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা ও মোকামনগরে, বীরভূমের নানুরে এবং বর্ধমানের খাগড়াগড় ও শিমুলিয়াতে।