মাশরাফি-তাসকিন বক্ষড্যান্সের রহস্য

SHARE

bdc courterবিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে ইংল্যান্ডকে হারানোর পর টাইগারদের মনোবল তুঙ্গে ছিল। কোয়ার্টারে জয়ের প্রত্যয়ে মুখোমুখি হয় শক্তিশালী ভারতের। সেই ম্যাচে প্রথম দিকে বা আগ থেকেও অবিচল ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। কারণ তাদের হারানোর কিছু ছিল না। যত ভয় ছিল ভারতের। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নেরা যদি ২০০৭ সালের পুনরাবৃত্তি ঘটায়। কোয়ার্টারের ম্যাচে আম্পায়ারদের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে প্রতিটি খেলোয়াড়ের ছিল মন খারাপ। ভারত শক্তিশালী বলেই কি তাদের পক্ষে সব রায়? ওই সময়ে টাইগার অধিনায়কের উত্তেজিত চেহারা ধরা পড়ল ক্যামেরায়। মাশরাফি এমনিতেই ঠাণ্ডা মাথার খেলোয়াড়। কিন্তু ওই দিন তাসকিনের সাথে তার আচরণ ও বক্ষ ড্যান্স নিয়ে ভক্তদের আগ্রহ ছিল অন্যরকম।
অনেকেরই জানতে ইচ্ছে করেছে, আসলে কী ঘটেছে ওই দিন? বাংলাদেশের তরুণ পেসার তাসকিন আহমেদ স্বাভাবিক হাসি দিয়েই বললেন, ‘কিছুই হয়নি। সবাই যা ভাবছে ঘটনা তা নয়। আমি স্লগ ওভারে ইয়র্কার ভালো করতে পারি। কিন্তু ওই সময় ইয়র্কার না দিয়ে শর্ট বল কিংবা স্লোয়ার ডেলিভারি দিচ্ছিলাম। ওরকম পরিস্থিতিতে কখনো পড়িনি। তাই কনসেনট্রেশন নষ্ট হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত ইয়র্কার দিয়েই সফল হয়েছি। এটাই মাশরাফি ভাই জোরে বলছিলেন। আসলে মাশরাফি ভাইয়ের সাথে আমাদের সবার সম্পর্ক মধুর। উইকেট পাওয়ার পর মাশরাফি ভাই বলেছেন, আমি এ জন্যই বলেছিলাম ইয়র্কার করো। উনি আগ থেকেই বলছিলেন। ক্রাউডের কারণে একটু দূর থেকেও উনার কথা শুনতে পারছিলাম না। উনি সবসময়ই আমাদের টিপস দিয়েছেন। হয়তো ওই সময়ের ব্যাপারটি অনেকের কাছে খারাপ লেগেছে। কিন্তু আমি মনে করি ওটি খেলারই একটি অংশ।’
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অর্জন ও ব্যক্তিগত অর্জন নিয়ে তাসকিন আরো বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। আমরা কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছি এটা অনেক বড় প্রাপ্তি। জীবনের প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে গিয়েই কোয়ার্টার ফাইনাল খেলতে পেরেছি। হয়তো অদূর ভবিষ্যতে সেমিফাইনাল-ফাইনাল খেলব ইনশাআল্লাহ। যাওয়ার আগে বলেছি সেরা দশে থাকার চেষ্টা করব। কিন্তু হয়নি। তবে চেষ্টার ত্রুটি করিনি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভাগ্যের সহায়তা পাইনি। ভবিষ্যতে আরো ভালো করার চেষ্টা করব। যে সব জায়গায় ত্রুটি আছে সেগুলো শুধরে নেব। দেশের হয়ে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি উইকেট পেয়েছি। আমার টিমমেটরা আমাকে খুব সাহায্য করেছেন। প্রথম উইকেট পাওয়ার পর অনুভূতির কথা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। প্রত্যেকটা উইকেটই আমার জন্য বিশেষ কিছু। প্রত্যেক ম্যাচের আগে খেলোয়াড়ের ওপর ভিডিও বিশ্লেষণ দেখতাম। সবার দুর্বলতা জানা ছিল। রোহিত শর্মা ও ধোনিকে দুর্বল জায়গায় বল করেই আউট করেছি। তবে সবসময় সঠিক জায়গায় বল ফেলতে পারিনি। এটি আমার ব্যর্থতাও বলতে পারেন। ফিল্ডিংয়ে দুর্বলতা ছিল। হ্যালস্যালের সমাধানে ফিল্ডিংয়ে অনেক উন্নতি হয়েছে। দলে সবচেয়ে জুনিয়র খেলোয়াড় আমি। কোনো ভুল করলে শাসনের দ্বিগুণ আদরও পেয়েছি।’
রোহিতের উইকেট নেয়ার পর মাশরাফির সাথে বক্ষ ড্যান্সের রহস্য কী ছিল? দ্বিতীয়বারে কি ধাক্কা খেয়েই পড়ে গিয়েছেন নাকি গ্যালারি শো। ‘আসলে ওটা ছিল ভিন্ন ধরনের এক্সসাইটমেন্টের বহিঃপ্রকাশ। এর আগে ভারতের বিপে ম্যাচেও আমি এটা করেছি। হুট করেই মাশরাফি ভাইয়ের সাথে রোহিতের উইকেটের উদযাপনটা ওভাবে করেছি। মজার বিষয় হলো দ্বিতীয় বার করতে গিয়ে পড়ে গেছি। অবশ্য দুইজনেই মাটিতে পড়ে যাওয়ায় মনে হয়েছে এটা অন্যরকম সেলিব্রেশন।
বিমানবন্দরে ‘ম্যারি মি তাসকিন’ লেখা প্লাকার্ড দেখে একটা কথা বলতে পারি, ভক্তরা আছে বলেই কিন্তু আমরা ক্রিকেটার। তাদের সাপোর্ট সব সময় আশা করি। ক্রিকেটের পাশে যেন তারা সব সময় থাকেন। ক্যানবেরায় আমাদের মনেই হয়নি আমরা অন দেশে খেলছি। বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স সামনের সিরিজগুলাতে ভালো খেলার প্রেরণা দিবে।’