বাংলাদেশে জরুরি চিকিৎসা সেবা পেতে মোবাইল অ্যাপ

SHARE
road acciবাংলাদেশের মানুষ যাতে দুর্ঘটনা বা অন্য বিপদের সময় মোবাইল ফোন ব্যব্হার করে দ্রুত এবং সহজে জরুরি চিকিৎসা সেবা পেতে পারেন – তার জন্য জন্য একটি অ্যাপ তৈরি করেছেন একজন মার্কিন ডাক্তার।

‘ক্রিটিকালিংক’ নামের এই অ্যাপটি এখন পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক রিপোর্টে এ কথা বলা হয়।

বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হার খুবই উচ্চ, কিন্তু এখনো দেশটিতে এমন কোন সার্বজনীন জরুরি ফোন নম্বর নেই যাতে ফোন করে জরুরি চিকিৎসা সহায়তা পাওয়া যায়, বা অ্যাম্বুলেন্স ডাকা যায়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দা ডাক্তার জেনিফার ফ্যারেল হচ্ছেন ক্রিটিকালিংকের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী। এটিই হচ্ছে পৃথিবীর প্রথম মোবাইল অ্যাপ-নির্ভর জরুরি চিকিৎসা সহায়তা ব্যবস্থা।

তিনি বাংলাদেশে প্রথম কাজ করতে আসে ২০১২ সালে। সেসময় তিনি নিজেই বাংলাদেশের একটি মহাসড়কে দুর্ঘটনার শিকার হন।

“আমরা দেখতে পেলাম অনেকেই মোবাইল ফোনে তাদের ছবি তুলছে, ফেসবুকে তা পোস্ট করছে। মনে হলো, মোবাইল ফোনের ব্যবহার যদি এত ব্যাপক হয়, তাহলে তো এটা লোকে দুর্ঘটনার খবর দেয়া এবং লোককে চিকিৎসা সহায়তা দেবার জন্যও ব্যবহার করতে পারে !”

এই ভাবনা থেকেই তিনি মোবাইল অ্যাপটি তৈরির কাজে নামেন।

এর পদ্ধতিটি খুবই সরল। মোবাইল অ্যাপটি ব্যবহার করে একটি কলসেন্টারে ফোন করা বা এসএমএস করে দুর্ঘটনার খবর বা ছবি দেয়া যাবে। সেই কলসেন্টার থেকে একজন অপারেটর দুর্ঘটনাস্থলের কাছাকাছি যে স্বাস্থ্যকর্মী বা জরুরি সেবাপ্রদানকারী কর্মীরা আছেন – তাদের জানাবেন। সেই কর্মীরা অতি দ্রুত জেনে যাবেন যে দুর্ঘটনাটি কোথায় ঘটেছে, এবং হয়তো দুর্ঘটনাস্থলের ছবিও পেয়ে যাবেন।

জেনিফার ফ্যারেল শুধু যে অ্যাপটি তৈরি করছেন তা নয়, এই সেবাপ্রদানকারীদের দলও গড়ে তুলছেন। তিনি এ পর্যন্ত ৩ হাজার নারী ও পুরুষকে ট্রেনিং দিেয়ছেন – যাদের বয়স গড়ে ২১ বা ২২। এদের মধ্যে ৫০০ জন হচ্ছেন অবৈতনিক স্বেচ্ছাসেবী।

প্রকল্পটি এখনো পাইলট স্তরে – এর মধ্যে ১২৫ জন সার্টিফিকেট প্রাপ্ত কর্মী এসব পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।

জেনিফার ফ্যারেল আশা করছেন ২০১৫ সালের শেষের এই সেবা বাংলাদেশের অন্যান্য প্রান্তে পৌঁছে দেয়া যাবে।

বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিবছর বহু লোকের মৃত্যু হয়। এক পরিসংখ্যানে বলা হয় – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে পরিমাণ লোক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়, তার ৮০ গুণ মারা যায় বাংলাদেশে।

এর প্রায় অর্ধেকই হচ্ছে পথচারী। আর সড়ক দুর্ঘটনায় যারা আহত হন, তাদের ৮২ শতাংশই মারা যান ঘটনাস্থলের বা তার কাছাকাছি উপযুক্ত চিকিৎসা সেবা না পাবার কারণে।

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বলছে প্রায় ১৫ কোটি লোকের দেশ বাংলাদেশে যত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে তার মাত্র ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে এ্যাম্বুলেন্স সুবিধা পান দুর্ঘটনার শিকাররা।- বিবিসি