অভাবনীয় বিজয়ের পর দিল্লিতে সরকার গঠনের একমাসও হয়নি আম আদমি পার্টির (এএপি)। এরইমধ্যে ঘরের আগুনে পুড়তে শুরু করেছে দলটি। দলের প্রধান ও মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে সরিয়ে দিতে দুই প্রতিষ্ঠাতা সদস্য যোগেন্দ্র যাদব ও প্রশান্ত ভূষণের চিঠি চালাচালির বিষয় ফাঁস এখন দিল্লিতে মুখরোচক সংবাদে পরিণত হয়েছে।
‘কেজরিওয়াল একক সিদ্ধান্তে দল চালাচ্ছেন’ এমন অভিযোগে তাকে এএপির জাতীয় আহ্বায়কের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন দলটির মুখপাত্র সঞ্জয় সিং। এতে যারপরনাই ‘ব্যথিত’ হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল।
মঙ্গলবার এএপি কার্যালয়ে কেজরিওয়াল দলের সাম্প্রতিক ঘটনাবলীতে খুবই ‘মর্মাহত হয়েছেন’ বলে মন্তব্য করেন। নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা এক বার্তায় তিনি লিখেন, ‘দিল্লিবাসী আমাদের প্রতি যে বিশ্বাস স্থাপন করেছে এটি তার প্রতি বিশ্বাস ঘাতকতা। আমি এই নোংরা যুদ্ধে জড়িত হতে চাইনা। আমি শুধু দিল্লি শাসন বিষয়েই মনোযোগী হতে চাই।’
তবে কেজরিওয়াল না চাইলেও এএপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য থেকে শুরু করে কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা বিষয়টি দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠকে তুলতে চান।
কেজরিওয়ালের এমন মন্তব্যের কিছুক্ষণ আগে এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এএপির অপর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য প্রশান্ত ভূষণ কেজরিওয়ালের কঠোর সমালোচনা করেন। দল যেভাবে চলছে তাতে তিনি একেবারেই একমত নন বলে জানান।
এএপি নেতাদের অভিযোগ কেজরিওয়ালের একক কর্তৃত্বে দল ‘ওয়ানম্যান শো’ হয়ে যাচ্ছে; যা অন্য আর দশটা দলের মতোই। কিন্তু তারা এমন চাননি।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি যোগেন্দ্র ও প্রশান্ত এক যৌথ বিবৃতিতে দল পরিচালনায় কেজরিওয়ালের ‘একক কর্তৃত্ব’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা এএপিতে নৈতিকতা বিষয়ক কমিটি করার উপরও জোর দেন।
দলের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী নিয়ে আলোচনার জন্য আগামী আগামীকাল বুধবার এএপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠক হবে। এতে যোগেন্দ্র ও প্রশান্তকে দলের ‘হাইকমান্ড’থেকে সরানোর সদ্ধিান্ত হতে পারে বলে গতকাল সোমবার এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
এএপির এহেন দুর্দিনে জ্যেষ্ঠ নেতাদের একের পর এক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ বিষয়ে ‘খোলামেলা মতামত প্রকাশে’ বর্তমান সংকট ঘনীভূত হবে বলে মনে করছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।