ঢাকা আইনজীবী সমিতির ২০১৫-১৬ মেয়াদের নিবাচনে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত নীল প্যানেল সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছে। অন্যদিকে ভরাডুবি হয়েছে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেলের।
ঢাকা আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে শুক্রবার রাত আড়াইটার দিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি এস এম আলতাফ হোসেন এ ফলাফল ঘোষণা করেন।
এ নির্বাচনে সম্পাদকীয় ১০টি পদের মধ্যে নীল প্যানেল ৮টিতে এবং সদস্য ১৫টি পদের মধ্যে ১২টিতে জয়লাভ করে।
সভাপতি পদে নীল প্যানেলের এ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার ৪৫৬২ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাদা প্যানেলের এ্যাডভোকেট সাইদুর রহমান মানিক পেয়েছেন ৪৩৩২ ভোট।
সাধারণ সম্পাদক পদে নীল প্যানেলের এ্যাডভোকেট ওমর ফারুক ৪৬৪৩ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী সাদা প্যানেলের এ্যাডভোকেট আয়ুবুর রহমান পেয়েছেন ৪০৫৭ ভোট।
এ ছাড়া সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে সাদা প্যানেলের মোশাররফ হোসেন ৪৪৭৩ ও নীল প্যানেলের আফরোজা বেগম শেলী পেয়েছেন ৪৪৫০ ভোট।
সহ-সভাপতি পদে নীল প্যানেলে হারুন রশিদ খান ৪৫৭৭ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাদা প্যানেলের তারিক হোসেন পেয়েছেন ৪২৬৩ ভোট।
ট্রেজারার পদে সাদা প্যানেলের মকবুল হোসেন পেয়েছেন ৪৪৪৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নীল প্যানেলের আবু বক্কর সিদ্দিকী পেয়েছেন ৪৪১২ ভোট।
সিনিয়র সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে নীল প্যানেলের হাফিজুর রহমান হাফিজ পেয়েছেন ৪৪২৪ ভোট ও সাদা প্যানেলের আব্দুস সালাম খান পেয়েছেন ৪২৯৮ ভোট।
সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে নীল প্যানেলের তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ ৪৮১৬ পেয়ে জয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাদা প্যানেলের শাহাদাৎ হোসেন ভূঁইয়া পেয়েছেন ৪০১৩ ভোট।
লাইব্রেরি সম্পাদক পদে নীল প্যানেলের মাজেদুর রহমান মামুন পেয়েছেন ৪৮৯২ ভোট ও সাদা প্যানেলের আলী আহমেদ পেয়েছেন ৩৯৪৮ ভোট।
সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে নীল প্যানেলের আকলিমা আক্তার আলো ৪৩৬৬ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাদা প্যানেলের আফরোজা ফারহানা আহমেদ অরেঞ্জ পেয়েছেন ৪২৮৫ ভোট।
দফতর সম্পাদক পদে নীল প্যানেলের শেখ আলাউদ্দিন ৪৬৩৫ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাদা প্যানেলের আব্দুল হাই মামুন পেয়েছেন ৩৯৩১ ভোট।
১৫টি সদস্য পদের মধ্যে ১২টি পদে নীল প্যানেলের প্রার্থীরা জয়ী হন। জয়ীরা হলেন- ফাতিমা ইয়াসমিন, রেহানা পারভীন, শাহনাজ পারভীন জোসনা, মিজানুর রহমান মিজান, মজিবর রহমান, মোস্তফা কামাল, শাহ আলম, মোহাম্মাদ কামাল হোসেন, মোহাম্মাদ বিল্লাল হোসেন, মোহাম্মাদ আব্দুল হান্নান খন্দকার, মোহাম্মাদ আবুল কাশেম ও শফিকুল ইসলাম।
অন্যদিকে বাকি তিনটি সদস্য পদে সাদা প্যানেল জয়ী হয়। সাদা প্যানেলের জয়ীরা হলেন- ফাতেমাতুজ জহুরা মনি, লিলিয়া আক্তার লিলি ও তপো গোপাল ঘোষ।
এ নির্বাচনে মোট তিনটি প্যানেল থেকে প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা, বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত নীল এবং দলনিরপেক্ষ সবুজ প্যানেলের ব্যানারে প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ নেন।
২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে মাঝে এক ঘণ্টার বিরতি দিয়ে দুপুর ২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত চলে।
এবারের নির্বাচনে মোট ১৫ হাজার ৩৭২ ভোটারের মধ্যে ৯ হাজার ৯২ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এর মধ্যে প্রথম দিনে ৩ হাজার ৯১১ জন এবং দ্বিতীয় দিনে ৫ হাজার ১৮১ জন ভোট দেন।
এ নির্বাচনে ২৫টি পদে মোট ৬১ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে ১০টি সম্পাদকীয় পদের বিপরীতে ২৬ জন এবং ১৫টি সদস্য পদের বিপরীতে ৩৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
এবারের নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি এস এম আলতাফ হোসেন। কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন- এ্যাডভোকেট রেজাউল করিম হিরন, এ্যাডভোকেট হাজী মো. মোহসীন, এ্যাডভোকেট আহমদ উল্লাহ আমান, এ্যাডভোকেট মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর, মো. শামসুজ্জামান ও মো. মতিউর রহমান ভূঁইয়া।
গত ২০১৪ ও ২০১৫ বর্ষের নির্বাচনে সভাপতি ও সম্পাদকীয় পদে ১০টিসহ বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত নীল প্যানেল ১৯টি পদে জয়লাভ করে।। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেল ২৫টি পদের বিপরীতে মাত্র ৬টি সদস্য পদ পায়।