‘তোরা আমার ছেলের আদর্শ কেড়ে নিতে পারিসনি’

SHARE

ojoyযুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী লেখক অভিজিৎ রায়কে নৃশংসভাবে হত্যার পরপরই তার বাবা অধ্যাপক অজয় রায়কে ফোনে হুমকি দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। অজ্ঞাত মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করে বলা হয়, ‘তোর ছেলের পরিণতি দেখেছিস। তুইও ভালো হয়ে যা।’ অভিজিৎকে কাপুরুষের মতো হত্যার পর দুর্বৃত্তদের হুমকিতে ভীত না হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষক পাল্টা জবাব দেন, ‘তোরা আমার ছেলেকে খুন করেছিস; কিন্তু ছেলের আদর্শ ও সৃষ্টি কেড়ে নিতে পারিসনি।’ এর পরই অজয় রায় মোবাইল ফোনের লাইন কেটে দেন। নিহত অভিজিৎ রায়ের ছোট ভাই অরিজিৎ রায়ের স্ত্রী কেয়া বর্মণ গতকাল শুক্রবার বিকেলে সমকালকে এ তথ্য জানান। কেয়া বর্মণ সমকালকে বলেন, অভিজিতের ওপর হামলার কিছু সময় পরই বাবাকেও অচেনা নম্বর থেকে হুমকি দেওয়া হয়। ফোনে তিনিও পাল্টা জবাব দিয়েছেন। এর আগেও বিভিন্ন সময় অভিজিৎকে কখনও মোবাইল ফোনে আবার কখনও ই-মেইলে হুমকি দেওয়া হতো। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। গত বছর অভিজিৎ ও তার স্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পেয়েছিলেন বলে জানান কেয়া বর্মণ।

শাহবাগ থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম সমকালকে বলেন, অজয় রায়কে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি জেনেছি। জড়িতদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে ইঙ্গিত করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গের সামনে অজয় রায় বলেন, এরাই বাসে আগুন দেয়, পেট্রোল বোমা হামলা চালায়। একজন হতভাগ্য পিতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তিনি খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও দাবি করেন।

শিক্ষাবিদ অজয় রায় বলেন, তার ছেলেকে হত্যায় জড়িত যারা, তাদের সবার তথ্য রয়েছে পুলিশের কাছে। তাদের ধরতে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় লাগার কথা নয়। এ জন্য প্রয়োজন সরকারের সহযোগিতা।আক্ষেপ করে তিনি বলেন, অভিজিৎকে দেশে আসতে বারণ করেছিলাম। বলেছিলাম, বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখন তোমার জন্য সুখকর নয়। কিন্তু সে তার মাকে দেখতে এবং এবারের বইমেলায় তার দুটি বই প্রকাশিত হওয়ায় দেশে আসে।অভিজিতের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী কেয়া বর্মণ আরও জানান, ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভিজিৎ দেশে এসেছিলেন। এবার বইমেলা উপলক্ষে আবার দেশে আসেন। তবে এবার দেশে ফেরার পর তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল কি-না, তা তার জানা নেই।