একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জাতীয় পার্টির সাবেক সাংসদ পলাতক আব্দুল জব্বারের বিরুদ্ধে মৃত্যুদ-ের রায় দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল-১ এ রায় ঘোষণা করেন।
২০১০ সালের ২৫ মার্চ যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর পর এটি সপ্তদশ রায়।
এর আগে বেলা ১১টা ৭ মিনিটে এজলাসে আসেন তিন বিচারপতি। ইনায়েতুর রহিমের সূচনা বক্তব্যের পর ১৪১ পৃষ্ঠার রায়ের সারসংক্ষেপ পড়া শুরু হয়।
মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা ছাড়াও ৩৬ জনকে হত্যা, ২০০ জনকে ধর্মান্তরিতকরণ, ৫৫৭টি বাড়িঘরে লুটপাট চালানো ও অগ্নিসংযোগের মতো পাঁচটি অভিযোগ রয়েছে মুসলিম লীগ নেতা জব্বারের বিরুদ্ধে।
মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচ ঘটনায় অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে গতবছর ১৪ অগাস্ট পলাতক জব্বারের বিচার শুরু হয়। দুই পক্ষের যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে গত ৩ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনাল মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রাখে।
শুনানির শেষ দিন জব্বারের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আবুল হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে সমাপনী যুক্তি উপস্থাপন করেন প্রসিকিউটর জাহিদ ইমাম ও তাপস কান্তি বল।
পিরোজপুরের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল জব্বারের বিরুদ্ধে পাঁচ ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ২০১৪ সালের গত ১ মে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন। এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে ট্রাইব্যুনাল গত ১২ মে জব্বারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
পাঁচ অভিযোগ:
প্রথম অভিযোগ: ইঞ্জিনিয়ার জব্বার ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার ফুলঝুড়িতে দুইজন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেন। এছাড়া নাথপাড়া ও কুলুপাড়ার শতাধিক বাড়িতে লুট করেন এবং অগ্নিসংযোগ করে।
দ্বিতীয় অভিযোগ: মুক্তিযুদ্ধের সময় জব্বার ফুলঝুড়িতে একজনকে হত্যা করেন এবং ৩৬০টি বাড়িঘরে লুটপাট চালান এবং অগ্নিসংযোগ করেন।
তৃতীয় অভিযোগ: নলীতে ১১ জনকে হত্যা ছাড়াও ৬০টি বাড়ির মালামাল লুণ্ঠন করেন এবং অগ্নিসংযোগ করেন জব্বার।
চতুর্থ অভিযোগ: ফুলঝুড়িতে প্রায় দু’শ নিরস্ত্র হিন্দু সম্প্রদায়ের লোককে জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করেন জব্বার।পঞ্চম অভিযোগ: আঙ্গুলকাটা এবং মঠবাড়ীয়া থেকে ৩৭ জনকে আটক, মালামাল লুণ্ঠন, অপহরণ, নির্যাতন, ১৫ জনকে গুরুতর জখম এবং ২২ জনকে হত্যা করেন জব্বার।