হরতাল বাড়লো ৪৮ ঘণ্টা

SHARE

hortal30বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকে সারাদেশে চলমান ৭২ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি আরো ৪৮ ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে। আগামীকাল বুধবার সকাল ৬টা থেকে আগামী শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এই হরতাল চলবে। মঙ্গলবার দুপুরে এক বিবৃতিতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ এই হরতালের ঘোষণা দেন।

বিবৃতিতে সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশব্যাপী ক্রসফায়ারের মাধ্যমে বিরোধী দলীয় অসংখ্য নেতাকর্মীকে গুলি করে হত্যা, পঙ্গু ও আহত, বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীসহ নিরীহ জনগণকে গণগ্রেফতার, বিচার ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ ও কুক্ষিগতকরণ, সাংবাদিক নির্যাতন ও সংবাদ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণের প্রতিবাদে, জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্র পুনঃরুদ্ধার, জনগণের মৌলিক ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ও সকল রাজবন্দীর মুক্তির দাবিতে এবং অবৈধ সরকার গণদাবির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন না করায় চলমান অবরোধ কর্মসূচির পাশাপাশি পূনরায় বুধবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত দেশব্যাপী চলমান সর্বাত্মক হরতাল কর্মসূচি বর্ধিত করা হলো।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের রাষ্ট্রক্ষমতার চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের নেশায় গোটা জাতি আজ চরম শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে নিপতিত। অবৈধ ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার ঘৃণ্য চক্রান্ত বাস্তবায়নে রাষ্ট্রযন্ত্রের চূড়ান্ত অপব্যবহারের এমন জঘণ্য নজির মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে।

সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোকে অবাধে হত্যার লাইসেন্স প্রদান করেও গণতন্ত্রকামী মানুষের ন্যায্য আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে ব্যর্থ হয়ে প্রধানমন্ত্রী এখন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিভিন্ন কায়দায় হত্যার ষড়যন্ত্র করছেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এককালের মোটরশ্রমিক ও চোখ উপড়ানো পার্টির সদস্য নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভায় প্রকাশ্য ঘোষণা দেন বেগম খালেদা জিয়ার আবাসস্থলের বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির লাইন কেটে দেয়ার এবং খাবার বন্ধ করে দেয়ার। জাতি অবাক বিস্ময়ে দেখলো তার প্রত্যেকটি কথার বাস্তবায়ন করেছে সরকার।

সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা বিস্মিত হয়েছি সোমবার সেই মন্ত্রীর নেতৃত্বে অবরুদ্ধ খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে হামলা করার মহড়া দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, সারাদেশের মতো আওয়ামী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে নিজেদের সমাবেশে নিজেরা বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তার দায় বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের ওপর চাপানোর অপচেষ্টা হচ্ছে।

সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, অবৈধ শাসকশ্রেণী হয়তো অনুধাবন করতে পারছে না-চলমান গণআন্দোলন গ্রাম-বাংলার ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে। বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের প্রত্যেক নেতাকর্মী আজ বেগম খালেদা জিয়ার চূড়ান্ত ত্যাগ স্বীকারের বার্তা পৌঁছে দিয়েছে কৃষাণীর উঠোন থেকে শুরু করে রাজধানীর গলিপথ পর্যন্ত।

তিনি প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের প্রতি হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, শহীদ জিয়ার দল বিএনপি কোনো ভূঁইফোড় সংগঠন নয়। বেগম খালেদা জিয়া এ দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী, ৩ বারের প্রধানমন্ত্রী, তাকে অপমানিত ও আক্রান্ত করার যেসমস্ত নাটক মঞ্চস্থ করা হচ্ছে তা যদি অবিলম্বে বন্ধ করা না হয়, তাহলে বিএনপির সারাদেশের নেতাকর্মীরা কেন্দ্রের নির্দেশের অপেক্ষায় থাকবে না। সারাদেশের আওয়ামী নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা বিধানের ক্ষমতাও আপনার পেটোয়া পুলিশ বাহিনীর থাকবে না। তাই আগুন নিয়ে খেলা বন্ধ করুন।

সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, রাষ্ট্রীয় নৈরাজ্যের প্রতিবাদে গড়ে ওঠা আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে জনগণ তাদের ব্যালটের অধিকার আদায় করবেই। গণতন্ত্র, মৌলিক ও মানবাধিকার পুনঃরুদ্ধার করবেই।

তিনি চলমান অবরোধ-হরতাল কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে বিএনপি ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন এবং ২০ দলীয় জোটের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ দেশবাসীকে বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে উদ্বাত্ত আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।