মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর ক্যারোলিনাতে একই পরিবারের তিনজন তরুণ মুসলিমকে তাদের নিজ বাড়িতে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশের তথ্য মতে, হত্যাকা-ের শিকার হওয়া তিনজনের নাম ২৩ বছর বয়সী দিয়াহ শাদি বরকত, তার স্ত্রী ২১ বছর বয়সী ইউসুর মোহাম্মদ এবং তার বোন ১৯ বছর বয়সী রাজন মোহাম্মদ আবু সালহা।
চ্যাপেল হিলের সামারওয়াক সার্কেল নামে পরিচিত আবাসিক এলাকার বাসিন্দাদের বেশির ভাগই শিক্ষাবিদ ও তরুণ পেশাদার। সেখানকারই একটি অ্যাপার্টমেন্টে এ হত্যাকা-ের খবর সন্ধ্যা ৫টা ১১ মিনিটে কর্মকর্তাদের জানানো হয়।
হত্যাকা-ের শিকার ব্যক্তিদের ঘটনাস্থলে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ওই এলাকায় বসবাসকারী কিছু মানুষ বলছিলেন তারা পুলিশ আসার আগে ঘটনার ব্যাপারে জানতেনই না। সন্দেহভাজন খুনি হিসেবে ৪৬ বছর বয়সী ক্রেইগ স্টিফেন হিকস নামে এক ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেছে।
এ হত্যাকা- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে। সেখানে তারা হত্যাকা-ের শিকার তিনজনের অধ্যয়নরত ও বাস্কেটবল খেলারত ছবি প্রকাশ করে বলেছে, তারা পরিকল্পিত হত্যাকা-ের শিকার।
কেউ কেউ এ ঘটনাকে প্যারিসের শার্লি এবদু’র ঘটনার সাথে তুলনা করতে চাচ্ছেন এবং অন্যরা এ ঘটনার নিন্দা জানাতে বারাক ওবামা ও ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। আমেরিকান ফুটবল ও বাস্কেটবলের ভক্ত শাদি বরকত উত্তর ক্যারোলিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দন্ত বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন এবং তিনি ফিলিস্তিনের শিশুদের জরুরি দন্ত চিকিৎসা প্রদানের কার্যক্রমে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতেন। তিনি টুইটারে নিয়মিত মতামত প্রকাশ করতেন। তিনি জানুয়ারিতে লেখেন, মানুষকে এটা বলতে শুনে খুবই হতাশা লাগে যে, আমাদের উচিত ‘ইহুদিদের হত্যা করা’ বা ‘ফিলিস্তিনিদের হত্যা’ করা। যেন এর মাধ্যমে কোনো কিছু সমাধান হবে।
রাজানের স্নাতক ডিগ্রি গ্রহণ অনুষ্ঠানে একত্রে ছবি তোলেন ভাই-ভাবিসহ তিনজন। রাজান চিত্রকলা ও অঙ্কনের প্রতি আগ্রহ থেকে একটি ব্লগ চালাতেন। তিনি গত গ্রীষ্মে উত্তর ক্যারোলিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপত্য এবং পরিবেশ নকশা বিষয়ে ডিগ্রি শুরু করেন। তিনি টুইটারে তার সম্পর্কে বলেন, আমি ভবন এবং আনুষঙ্গিক বিষয় পছন্দ করি। হত্যাকা-ের শিকার তিনজনের স্মৃতি হিসেবে একটি ফেসবুক পেজ খোলা হয়েছে, যার নাম দেয়া হয়েছে ‘আমাদের তিন বিজেতা’। পেজটি মানুষকে তাদের সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছে এবং বলেছে তারা ‘আনুষ্ঠানিক ঘোষণা’ প্রদান অব্যাহত রাখবে। তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি যে, তাদের পরিবারের সদস্যরা এটা তৈরি করেছে কি না। তারা বলেছে, চিকিৎসকের কাছ থেকে সবশেষ রিপোর্ট পাওয়ার পর দাফনের ব্যবস্থা করা হবে।