সুখিতেই সুখী জীবনের স্বাচ্ছন্দ খুঁজে পেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া অঞ্চলের মহিলারা।
শুধু ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকাতেই নয়, সুখি আজ ঢুকে পড়েছে সীমান্ত পেরিয়ে কলকাতা ও তার আশ-পাশের শহরতলীতে। সুখি আসলে বাংলাদেশে তৈরি মহিলাদের জন্ম নিয়ন্ত্রণ ট্যাবলেট। যে ট্যাবলেটে ম্যানুফ্যাকচারং ডেট থেকে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার তারিখ কিছুই লেখা থাকে না। থাকে না কী কী উপকরণ দিয়ে এই ট্যাবলেট তৈরি তার বিবরণীও। তবুও সুখির চাহিদা তুঙ্গে।
ভারতীয় রুপিতে মাত্র পাঁচ টাকা ফেললেই আজ হাতে মিলে যাচ্ছে সুখি ট্যাবলেটের পাতা। পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত সংলগ্ন বহু দোকানেই আজ গোপনে বিক্রি হচ্ছে এই বাংলাদেশী সুখি ট্যাবলেট। বাংলাদেশের সুখিতেই আজ সুখ খুঁজে নিয়েছেন ভারতের মধ্যবিত্ত ঘরের মহিলারা।
মূলত সীমান্তের চোরাকারবারীদের হাত ধরে সীমান্ত পেরিয়ে এই ট্যাবলেট এখন নির্বিধায় ঢুকে যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। তারপর তা ছড়িয়ে পড়ছে কলকাতা শহর এবং শহরতলী থেকে সুদূর গ্রামে-গঞ্জে।
এমনকি সীমান্ত লাগোয়া প্রত্যন্ত গ্রাম-গঞ্জে পাড়ার চা দোকানেও দেদার বিকোচ্ছে সুখি। ভারতীয় মহিলারা বাড়ির কাছে হাতের নাগালে এই সুখি পেয়ে যাওয়ায় ভারতীয় জন্মনিয়ন্ত্রন ট্যাবলেট ছেড়ে তারা স্বাভাবিকভাবেই ঝুঁকছেন বাংলাদেশী সুখির দিকে।
ভারতীয় চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ভারতের ‘মালা ডি’ কিংবা বেসরকারি বিভিন্ন জন্মনিয়ন্ত্রণ ট্যাবলেটে যে মাত্রায় ইস্ট্রোজেন পেজেস্ট্রনের মাত্রা থাকে সেই মাত্রা অনেক বেশি থাকে সুখিতে। কারণ একটাই, জন্ম নিয়ন্ত্রণকে বেশি করে সুনিশ্চিত করা। ফলে অনেক ক্ষেত্রে জন্ম নিয়ন্ত্রণ আটকানো গেলেও আটকানো যায় না পাশ্বপ্রতিক্রিয়া। তবে সেই প্রতিক্রিয়ার ধার না ধরে মূলত জন্ম নিয়ন্ত্রণকে সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে গ্রাম-বাংলার মহিলাদের কাছে আজ সবথেকে পছন্দের হলো বাংলাদেশী সুখি ট্যাবলেট।
তার ওপর সামান্য দামে হাতের কাছে সুখি পেয়ে যাওয়ায় মূলত সুখিতেই সুখ খুঁজে পেয়েছেন ভারতীয় মহিলারা। তবে বাংলাদেশের সুখি ট্যাবলেটের এই বাড়বাড়ন্তের কথা অজানা নয় পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সরকারি স্বাস্থ্য আধিকারীকদের। এমনকি রাজ্যের স্বাস্থ্যপ্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য্যকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিভিন্ন ব্লক ভিত্তিক স্বাস্থ্য দফতরের অনেকেই। তবুও সুখির দাপট কমানো যায়নি।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য আইএমএ (চিকিতসক সংগঠন) সদস্য ডা, পঙ্কজ কুমার অধিকারি জানান, এই বিষয়ে মহিলাদের সচেতনতা ছাড়া সমাধান সম্ভব নয়। কিন্ত হাতের কাছে পাওয়া সস্তায় নির্ভরযোগ্য জন্মনিয়ন্ত্রন ট্যাবলেটের কাছে সচেতনতার মূল্য কতোটুকু?