২৪ ঘণ্টায় আরো ৩৭ মৃত্যু, শনাক্ত ২৬৯৫

SHARE

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণে আরো ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন শনাক্ত হয়েছেন দুই হাজার ৬৯৫ জন। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৭৪৬ জনের। আর সব মিলিয়ে শনাক্ত হয়েছেন ৫৫ হাজার ১৪০ জন।

আজ বুধবার (৩ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে সরকারি বুলেটিনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বুলেটিন প্রকাশে অংশ নেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

ডা. নাসিমা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে দেশে আরো ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এঁরা ২৮ জন পুরুষ এবং ৯ জন নারী। এঁদের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে একজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে তিনজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে পাঁচজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১২ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১২ জন এবং ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে চারজন। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৭৪৬ জনের।

জানানো হয়, নতুন যে ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে তাঁরা ঢাকা বিভাগের ১৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ১৩ জন, সিলেট বিভাগের একজন, রংপুর বিভাগের দুইজন এবং খুলনা বিভাগের একজন। হাসপাতালে মারা গেছেন ৩১ জন, বাসায় পাঁচজন এবং মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয় একজনকে।

এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৪৭০ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১১ হাজার ৫৯০ জন।

ডা. নাসিমা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৫ হাজার ১০৩টি। পরীক্ষা হয়েছে ১২ হাজার ৫১০টি। এর মধ্যে করোনা রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে দুই হাজার ৬৯৫ জনকে। এ নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৫৫ হাজার ১৪০ জন। আর এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে তিন লাখ ৪৫ হাজার ৫৮৩টি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের ল্যাবে বিশেষ কারণে করোনা শনাক্তে আর নমুনা পরীক্ষা কার্যক্রম চালাবে না। এ ছাড়া জামালপুর শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজের ল্যাবে কারিগরি সমস্যার কারণে পরীক্ষা কার্যক্রম চালানো সম্ভব হয়নি। এ কারণে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের ৫০টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে বলে জানান ডা. নাসিমা।

আইসোলেশন প্রসঙ্গে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে আরো ৩৯৫ জনকে। একইসময় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১৩৭ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ছয় হাজার ৪৯৮ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন তিন হাজার ৫৪৪ জন।

বুলেটিনে জানানো হয়, ঢাকাসহ সারা দেশে মোট আইসোলেশন সংখ্যা ১৩ হাজার ২৮৪টি। বর্তমানে ঢাকা মহানগরীতে সাত হাজার ২৫০টি এবং ঢাকা সিটির বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে আইসোলেশন শয্যার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ৩৪টিতে। এ ছাড়া ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৫০০টি ও ময়মনসিংহ নার্সিং ডরমিটরিতে আরো ২০০টি আইসোলেশন শয্যা প্রস্তুতির কাজ চলছে।

এ ছাড়া রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) নির্মিত বসুন্ধরা করোনা হাসপাতালে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এখানে দুই হাজার শয্যা প্রস্তুত করা হয়েছে।

কোয়ারেন্টিন প্রসঙ্গেও তথ্য দেওয়া হয় বুলেটিনে। বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে এসেছেন দুই হাজার ৪২৮ জন। একইসময় কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন তিন হাজার ১৪৫ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে গেছেন মোট দুই লাখ ৯২ হাজার ৮১৩ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই লাখ ৩৪ হাজার ৯৮৫ জন। ছাড়ের পর বর্তমানে হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫৭ হাজার ৮২৮ জন।

সারা দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য প্রস্তুত ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে সেবা প্রদান যায় বলে জানানো হয় বুলেটিনে।

বুলেটিনে আরো জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য বাতায়ন এবং আইইডিসিআর’র হটলাইনে কল এসেছে এক লাখ ৭৭ হাজার ৬৬টি। এসব কলে সবাইকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে এ পর্যন্ত হটলাইনে ৯২ লাখ ৫০ হাজার ৫৭৭ জনকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সংখ্যা বেড়েছে আরো পাঁচজন। এ নিয়ে এখন মোট প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সংখ্যা দাঁড়াল ১৬ হাজার ২৫৮ জনে। এ ছাড়া বর্তমানে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে হটলাইনে চার হাজার ২১৭ জন চিকিৎসক স্বাস্থ্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানানো হয় বুলেটিনে।