আত্মহত্যা করতে যাওয়া নারীকে উদ্ধার করে বাঁচাল পুলিশ

SHARE

পুলিশের পরিচালিত জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ সব ধরনের সমস্যায় পরেই সাধারণ মানুষ ফোন করছেন। পুলিশ, অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের সেবা সরাসরি দেয় এই হটলাইন থেকে। তবে অন্য বিপদেও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে সহায়তা করা হয়। কখনো কখনো বিপদে পরা মানুষের ফোন থেকে বিচিত্র সমস্যা ও এর সমাধান করার ঘটনাও ঘটে। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে শুক্রবার রাতে।

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর এলাকা থেকে এক গৃহবধু ফোন করে দাম্পত্য কলহে চরম হতাশার কথা বলেন ৯৯৯-এ। এক পর্যায়ে তিনি নিজেকে আইনজীবী বলে জানান। গর্ভপাত ও শ্বশুড়বাড়ীর লোকজনের নির্যাতনে দিশেহারা নারীর কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন ৯৯৯-এর কলটেকার (ফোনে আলাপনকারী) পুলিশ সদস্য। অস্বাভাবিক কথার সূত্র ধরে তিনি জেনে ফেলেন নারী অনেকগুলো ঘুমের ওষুধ সেবন করেছেন। তবে কোনোমতেই নারী তার ঠিকানা জানাতে চাইছিলেন না। পুলিশ প্রযুক্তির ব্যবহার করে কৌশলে তার ঠিকানা বের করছে এবং শনিবার ভোরে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, পাকস্থলি পরিষ্কার করার পরে ওই নারী এখন শঙ্কামুক্ত আছেন।

৯৯৯-এর পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ার সাত্তার বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাত ২টায় ‘জাতীয় জরুরী সেবা’৯৯৯ নম্বরে এক নারী কলার ফোন করে জানান, কিছুদিন পূর্বে গর্ভপাত হয়ে তার একটি সন্তান নষ্ট হয়ে যায়, এ নিয়ে স্বামীর সাথে তার মনোমালিন্য হয়। আজ (শুক্রবার) তাকে তার স্বামী ও স্বামীর ভাবী অনেক গালিগালাজ করেছে ও মারধর করেছে। কলার আরো জানান, তার সাত বছরের একটি সন্তান রয়েছে এবং তিনি একজন আইনজীবী।

নারী কলার বলেন, তিনি মানসিকভাবে অত্যন্ত বিপর্যস্ত, তিনি আর বেঁচে থাকতে চাননা। তিনি ২০টি ঘুমের ট্যাবলেট খেয়েছেন। তিনি মরতে চলেছেন! তার এই মৃত্যুর জন্য তার স্বামী আর স্বামীর ভাবী দায়ী। কলার তার অবস্থান জানাতে অনীহা প্রকাশ করলেও ৯৯৯ কৌশলে তার অবস্থানটি জেনে নেয়। এক পর্যায়ে কলার তার ফোন সংযোগ কেটে দেন। ৯৯৯ থেকে তাকে ফোন করা হলেও তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি।

পরিদর্শক আনোয়ার সাত্তার জানান, ৯৯৯ তাৎক্ষনিকভাবে বিষয়টি কামরাঙ্গীরচর থানার ওসি ও ডিউটি অফিসারকে জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানায়।খবর পেয়ে কামরাঙ্গীরচর থানা পুলিশের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। পরে ভোর পৌনে ৪টায় কামরাঙ্গীরচর থানার এস আই মোর্শেদ ৯৯৯ কে জানান, তারা ঘটনাস্থল থেকে অচেতন অবস্থায় গৃহবধূকে উদ্ধার করে পুলিশের টহল গাড়িতে করে দ্রুত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান । হাসপাতালের ডাক্তার এবং চিকিৎসা কর্মীরা দ্রুততার সাথে ভিক্টিমের পাকস্থলি পরিষ্কার করেন। ভিকটিম বর্তমানে শঙ্কামুক্ত অবস্থায় আছেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে।