মাগুরার ইয়াবা ব্যবসায়ী ও গোল্ড স্মাগলার ফারুক, ৫ বছরেই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ

SHARE

মাগুরা প্রতিনিধিঃ পাঁচ বছরে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন মাগুরার মাদক ও গোল্ড স্মাগলার ফারুক খান তাজ। ফারুকের বাবা মৃত মকবুল সিকদার ৫ বছর আগেও ভাঙ্গা টিনের ঘর থাকতেন। আর ফারুক ছিলেন জুয়েলারীর সামান্য একজন কর্মচারী।একাধিক সুত্রের দাবি, মাগুরা সদর থানার সাবেক ওসি আজমলের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলে মাদক সম্রাট বনে যান ফারুক খান তাজ।
এ সময় ওসি আজমল সুন্দরী মেয়ে নিয়ে প্রায়ই তার গ্রামের বাড়ীতে যাতায়াত করতেন বলে গ্রামের মানুষ নিশ্চিত করেছেন।
মাগুরা পৌরসভার কাউন্সিলার তুহিন জানান, মাগুরার সাবেক ওসি ও বর্তমানে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি থানার ওসি আজমল এর সাথে ফারুকের খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বহুদিন ধরে। ফারুকের বাড়িতে ওসি আজমলের একটি ফ্ল্যাটও রয়েছে। সেখানে আজমলের এক হিন্দু বউ থাকে বলে প্রচার রয়েছে।
তুহিন আরো জানান , ফারুক একজন মাদকসেবী।
আওয়ামী লীগের দলীয় কোন পদ পদবী না থাকলেও তিনি প্রভাবশালী নেতাদের মতই চলাফেরা করতেন। তার সাথে অনেক প্রভাবশালী নেতার ছবিও পাওয়াগেছে।
সামান্য কর্মচারী থেকে কিভাবে ফারুক মাগুরা শহরে ৪ টি ফ্ল্যাট, ২ টি বহুতলা বাড়ী,২ টি জুয়েলারী শো রুম, ৫ খানা বাইক ও গাড়ীসহ ১০/১৫ বিঘা জমির মালিক হয়েছেন সেটাই কারো বোধগম্য নয়।

তবে তার কাছের কিছু মানুষের সাথে কথা বলে জানাগেছে, ফারুক নানা প্রকার অবৈধ কারবারে জড়িত হয়ে এসব সম্পদ অর্জন করেছেন।
সরকারি কোন সংস্থা বা দুদক তদন্ত করলে তিনি নিশ্চিত ধরা খাবেন বলে তারা মন্তব্য করেন।
ফারুকের মাদক ও গোল্ড সিন্ডিকেটের সাথে মাগুরা শহরতলীর ৭/৮ জন যুবক ও নারী জড়িত আছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
তাদের মাধ্যমে গোটা জেলায় ইয়াবা বিক্রয় করা হয়।
ফারুক তার প্রাইভেট কার, মাইক্রো ও বাইকে করে কক্সবাজার, টেকনাফ ও ভারত থেকে মাদক এনে মাগুরা ও ফরিদপুর জেলায় সাপ্লাই দেন বলেও গুঞ্জন রয়েছে।
তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞেস করলেই অন্যান্যদের নাম ঠিকানা পাওয়া যাবে।
উল্লেখ্য যে গতকাল ৭ মে, বৃহস্পতিবার বেলা আনুমানিক সাড়ে ১১ টার সময় মাগুরা শহরের নতুন বাজারস্থ ফ্ল্যাট থেকে ইয়াবাসহ তাকে গ্রেপ্তার করেন ডিবি কর্মকর্তা নাসির আহমেদ। ফারুক খান তাজের মাগুরা সোনাপট্রিতে নিউ জুয়েলারি ও তাজ জুয়েলারি নামে দুইটা বিশাল সোনার দোকান আছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাগুরার কিছু স্বর্ণ ব্যবসায়ী জানান “এই ব্যবসা করে কর্মচারীদের বেতন দিয়ে ঠিকমতো সংসার চালাতে আমাদের যেখানে কষ্ট হয়, সেখানে এত অল্প সময়ে ফারুক কিভাবে কোটি কোটি টাকার মালিক হলো, সেটা সত্যি বিস্ময়!”
ফারুক খান তাজ টাকার গরমে ইতিমধ্যে ৪টা বিয়ে করেছেন এবং ৪ জনকে নিয়েই দিব্যি সংসার করছেন। এর মধ্যে দু’জন বিবাহিত মহিলাকে বিয়ে করে পরে তাদের স্বামীদের ডিভোর্স করিয়ে নেন।

ডিবি পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল তার মাগুরার নতুন বাজারের সিটি টাওয়ার থেকে ১৫ পিস ইয়াবাসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়। ডিবি পরিদর্শক নাসির জানান,যদিও তার প্রকাশ্যে স্বর্ণের ব্যবসা আছে এর অন্তরালে মাদক ব্যবসার বিশাল সিন্ডিকেট পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। গতকাল এই মাদক সম্রাটকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলা নং ১২,তারিখ ০৭/০৫/২০২০ ইং। ধারা: ২০১৮সনের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ৩৬ (১), টেবিলের ১০(ক) ধারা। করোনার কারণে আদালত বন্ধ থাকায় ফারুককে পুলিশ হেফাজতে নেয়া সম্ভব হয়নি।
তার গডফাদার ও সিন্ডিকেট সদস্যদের বিরুদ্ধে একইরুপ ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবি তুলেছেন মাগুরা শহরের সচেতন সমাজ।