বাংলা সিনেমার কিংবদন্তী তুল্য অভিনেত্রী ববিতা এবার সিনেমাকে বিদায় জানাতে যাচ্ছেন। নতুন করে তিনি আর কোন সিনেমাতে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছেননা। হাতে থাকা কয়েকটি সিনেমাও ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে প্রায় ৩০০ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই অভিনেত্রী। শিশুশিল্পী হিসেবে ‘সংসার’ চলচ্চিত্র দিয়ে তার অভিনয় জীবনের শুরু হয়েছিল। সর্বশেষ কাজ করেছেন ‘পুত্র এখন পয়সাওয়ালা’ ছবিতে। তাও প্রায় বছর তিনেক আগে। এরপর আরও কয়েকটি ছবিতে অভিনয়েরর জন্য চুক্তিবদ্ধ হলেও পরে সাইনিং মানি ফেরত দিয়ে দিয়েছেন।
সেই হিসাবে ‘পুত্র এখন পয়সাওয়ালা’কেই তাঁর অভিনয়জীবনের শেষ ছবি হিসেবে চাচ্ছেন তিনি। তিনি বলেন, মনে হচ্ছে এটাই আমার জীবনের শেষ ছবি। কারণ এর পর আরও কয়েকটি ছবিতে অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হলেও পরে তা ছেড়ে দিই।
কিন্তু কেন? এ প্রশ্নের উত্তরে ববিতা বলেন, ‘এখন আর আগের মতো ছবিতে কাজ করে আনন্দ পাই না। ছবির গল্প ও অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছি না। পাশের দেশের দিকে তাকালেও দেখি, সেখানে অভিনয় শিল্পীদের কেন্দ্র করে যেভাবে ছবি নির্মাণ করা হচ্ছে আমাদের এখানে তা একেবারে নেই। ডিজিটালের নামে যেসব ছবিও হচ্ছে তা আসলে কী হচ্ছে, সেটাও বুঝতে পারছি না!
অবশ্য ডিজিটাল ফরম্যাটে নির্মিত চার-পাঁচটি ছবিতে কাজ করেছেন ববিতা। এর পরও কেন এ ধরনের ছবির প্রতি অনীহা তা জানতে চাইলে ববিতা বলেন, ‘শুরুতে আমি অবশ্য না বুঝে ডিজিটাল ফরম্যাটের ছবিতে চার-পাঁচটি কাজ করেছি। কোনোটিরই অভিজ্ঞতা আমার জন্য সুখকর ছিল না।
তিনি বলেন, পুতুল খেলার বয়স থেকে আমি চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেছি। আমাদের সময় কাজের ধরন ছিল একেবারেই অন্য রকম। এখন সেই চিত্র একেবারে ভিন্ন। ডিজিটাল ফরম্যাটে নির্মিত ছবিকে আমার না মনে হয় নাটক, না টেলিফিল্ম, না সিনেমা। কোন নামে যে এসব ছবিকে সংজ্ঞায়িত করব, তাও ভেবে পাই না। এটাও বলা যেতে পারে, ডিজিটাল ছবির সঙ্গে আমি নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছি না।
ববিতা-ভক্তরা কিছুটা আশাবাদী হতে পারেন। কারণ তিনি গত পাঁচ বছর ধরে একটি সিনেমা নির্মাণের পরিকল্পনা করছেন। আর এই ছবির বিষয়বস্তু হবে অটিজম নিয়ে । বললেন, ‘আমার একটা স্বপ্নই বলতে পারেন, অটিজম নিয়ে ছবি নির্মাণ। মনের মধ্যে লালন করে যাচ্ছি। কিন্তু সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সাহসটাও খুব একটা পাচ্ছি না। এখন দেখা যাক কী হয়।