করোনার ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তি লাপাত্তা, আতঙ্কে ভর্তি হচ্ছেন অন্যরা

SHARE

হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কথা নয়, তিনি এসে ভর্তি হয়েছেন। আবার যার অন্তত ১৪ দিন চিকিৎসকদের নজরদারিতে থাকার কথা, তিনি লাপাত্তা। নির্দেশনা অনুযায়ী অন্তত ‘হোম আইসোলেশনের’ জন্য তার যে-তথ্য স্বাস্থ্য ভবনে থাকা উচিত ছিল, তা কলকাতা হাসপাতালে থাকল না!

করোনাভাইরাসের (এনসিওভি) সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে গতকাল সোমবার আইডি হাসপাতালে চীন-ফেরত যাত্রীদের ভর্তি নিয়ে এমনই ডামাডোল চলল দিনভর।

কলকাতারই রামগড়ের এক বাসিন্দা বেলা ৩টা নাগাদ আইডি-র জরুরি বিভাগে গিয়ে জানান, চীনের উত্তর-পূর্ব রাজ্য থেকে ২৯ জানুয়ারি ফিরেছেন তিনি। তার কথায়, আমার করোনাভাইরাসের লক্ষণ নেই। নিশ্চিত হতে আইডি-তে এসেছিলাম। কিন্তু ওরা বলছে, পরীক্ষার জন্য ভর্তি হতে হবে। তাই বাড়ি চলে যাচ্ছি।

রাত পর্যন্ত রামগড়ের এমন কোনো বাসিন্দার তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মকর্তারা। আইডি-র সুপার আশিস মান্না অবশ্য বলেন, স্ক্রিনিংয়ের (স্বাস্থ্যপরীক্ষা) পরেই তাকে ছাড়া হয়েছে। কেউ অধরা থেকে গেছেন ভাবলে ভুল হবে।

এক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানান, নির্দেশনা অনুযায়ী ওই ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহের দরকার নেই। প্রয়োজনে উনি হেল্পলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।

ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম ব্যক্তির সঙ্গে একই বিমানে ফিরেছিলেন কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গের আট জন। তাদের মধ্যে তিন জন চীন এবং এক জন দিল্লি চলে গেছেন। বাকি চার জনকে ‘হোম আইসোলেশনে’ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল স্বাস্থ্য ভবন।

২৩ জানুয়ারি এক বিমানে আসা কেরালার আরেক যাত্রী আক্রান্ত হওয়ার পর চার জনকেই হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখতে বলে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ঠিক করা হয়, কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা এবং জঙ্গলমহলের একটি জেলার বাসিন্দার ঠিকানা হবে বেলেঘাটার আইডি। ওই তিন জনের লালারসে করোনাভাইরাস মেলেনি। উত্তরবঙ্গের তরুণী ভর্তি হচ্ছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে।

গতকাল সকালে অ্যাম্বুল্যান্সে আইডি হাসপাতালে আসেন জঙ্গলমহলের একটি জেলার বাসিন্দা। তাকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। কলকাতার গাঙ্গুলিবাগানের বাসিন্দাও ভর্তি হতে আসেন। উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দার আগমনের পর শুরু হয় ডামাডোল। তার সঙ্গে হাজির হন স্বাস্থ্য দপ্তরের তালিকা-বহির্ভূত এক জন। তিনি একই বিমানে ছিলেন।

প্রথম সংক্রমিত ভারতীয়ের বিমানের আসন ধরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় স্ক্রিনিংয়ের যে-তালিকা করেছিল, তা থেকে তিনি বাদ পড়ে যান। বন্ধু ডাক পেয়েছেন শুনে আতঙ্কিত হয়ে তিনিও চলে আসেন। বিকেলেই অবশ্য তাকে ছেড়ে দেন আইডি-কর্তৃপক্ষ।

এক জন ছাড়া পেলেও তালিকায় নাম না-থাকা হুগলির এক বাসিন্দাকে ভর্তির বিষয়টি পরে সামনে আসে। ২৮ জানুয়ারি তিনি চীন থেকে ফিরেছেন এবং কাশি হচ্ছে, এই তথ্য পেয়ে তাকে আইডি-তে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করে স্বাস্থ্য দফতর।

পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, মোট চার জন বেলেঘাটা আইডি-তে ভর্তি হয়েছেন। উত্তরবঙ্গের তরুণীর সঙ্গে কথা গেছে।