পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় গতকাল রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) ছিল দেশের চলতি মৌসুমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। নেমেছিল ৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তবে আজ কিছুটা বেড়েছে। আজ সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২৪ দশমিক ১ ডিগ্রি। একইদিন দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তা ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়।
এবার পৌষের শুরু থেকেই পঞ্চগড়ে জেঁকে বসে শীত। ঘন কুয়াশার পাশাপাশি উত্তুরে হিমালয় থেকে আসা ঠাণ্ডা বাতাসে জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে আসে। গত কয়েকদিন ধরে সূর্যের দেখা পাওয়ায় ক্ষণিকের স্বস্তি মিললেও সেই অর্থে শীতের তীব্রতা কমছে না। শীতের তীব্রতা বেশি থাকছে সকাল ও সন্ধ্যায়। দিনে তাপমাত্রা ২০ থেকে ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস উঠলেও বেলা ডোবার সাথে সাথে তাপমাত্রা কমতে থাকে। উত্তর পশ্চিম দিক থেকে ধেয়ে আসে ঠান্ডা বাতাস। মধ্য রাত ও ভোরে তাপমাত্রা শুন্যের দিকে নেমে আসে। এই সময় শীতের তীব্রতা থাকে সবচেয়ে বেশি।
বেশ কয়েকদিন থেকেই পঞ্চগড়ে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হচ্ছে। অনেকে এই আবহাওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন সর্দি, জ্বর, ডায়েরিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টসহ শীতজনিত রোগীর ভিড় বাড়ছে। বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বৃদ্ধরা।
এদিকে শীতের তীব্রতা বাড়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন জেলার নিম্ন আয়ের বিরাট অংশের মানুষ। সকাল সন্ধ্যা খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন তারা।
এবার জেলায় সরকারি বেসরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে ৪০ হাজার। তবে তা জেলার মোট দরিদ্র শীতার্তের তুলনায় খুবই কম। জানুয়ারিতে তাপমাত্রা আরো কমে আসার পাশাপাশি তীব্র শৈত্য প্রবাহের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
ঢাকার আবহাওয়া অফিস সূত্র আরো জানায়, গত কয়েক দিনের ধারাবাহিকতায় আজ সোমবারও দেশের উত্তরাঞ্চল দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাবে। টাঙ্গাইল, কুষ্টিয়া, শ্রীমঙ্গলের পাশাপাশি রাজশাহী, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন গতকাল বলেন, আগামী ২ জানুয়ারি থেকে দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বৃষ্টি হবে। পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাবে সৃষ্ট ওই বৃষ্টি দুই দিন থাকবে। তারপর ফের শৈত্যপ্রবাহ শুরু হবে।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গতকাল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে তাপমাত্রা ছিল দেশের বেশ কয়েকটি জেলায়। এর মধ্যে রয়েছে- রাজশাহীতে ৯.৫, পাবনায় ৮.৩ ও দিনাজপুরে ৬.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া চুয়াডাঙ্গা, মৌলভীবাজার, কুড়িগ্রামসহ কয়েকটি জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আজও তা অব্যাহত থাকবে।