হজযাত্রীর কোটা ১০ হাজার বাড়ল যেভাবে

SHARE

আগামী বছর থেকে বাংলাদেশি হজযাত্রীর কোটা ১০ হাজার বাড়িয়েছে সৌদি আরব সরকার। দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানানোর ধারাবাহিকতায় এ বছর হজচুক্তির আগে ধর্মমন্ত্রী আলহাজ শেখ মো. আব্দুল্লাহ কোটা বাড়ানোর প্রস্তাব তুলে ধরেন। এরই প্রেক্ষিতে হজযাত্রীর কোটা ১০ হাজার বাড়ানোর ঘোষণা দেয় সৌদি সরকার। এর ফলে আগামী বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ৩৭ হাজার জন পবিত্র হজ পালনের সুযোগ পাবেন। চলতি বছর এ কোটা ছিল এক লাখ ২৭ হাজার।

গত ৪ ডিসেম্বর সৌদি আরবের জেদ্দায় সৌদি হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশের ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আলহাজ অ্যাডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহ এবং সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রী ড. মোহাম্মদ বিন সালেহ তাহের বেনতেন-এর মধ্যে এ চুক্তি সম্পাদিত হয়।

ধর্মমন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী আগামী বছর ২০২০ সালের হজে বাংলাদেশের হজযাত্রীর সংখ্যা ১০হাজার বৃদ্ধি ছাড়াও এজেন্সিপ্রতি হজযাত্রীর সর্বনিম্ন সংখ্যা ১০০ এবং সর্বোচ্চ সংখ্যা ৩০০ বহাল থাকছে। চুক্তি অনুযায়ী (চট্টগ্রাম ও সিলেট বিমান বন্দর ব্যবহারকারী হজযাত্রী ছাড়া) শতভাগ হজযাত্রীর ইমিগ্রেশন সৌদি আরবের পরিবর্তে ঢাকায় সম্পন্ন করা হবে। মদিনা থেকে হজ ফ্লাইটের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। হজ এজেন্সীগুলোর জন্য এআইটিএ সনদ থাকার শর্তারোপ করা হচ্ছে না। প্রত্যেক হজযাত্রীর ইনস্যুরেন্স কভারেজ দিবে সৌদি সরকার। রুট টু মক্কার ন্যায় ফিরতি হজযাত্রীদের জন্য রুট টু ঢাকার সুবিধা চালু করার বিষয় প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া পরিবহন সুবিধা উন্নত ও বৃদ্ধি করার বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এবারও মিনায় দ্বিতল খাট না রাখার বিষয় উল্লেখ রয়েছে চুক্তিতে।

চুক্তির আগে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আলহাজ এডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল এবং সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ প্রতিমন্ত্রী ডক্টর আব্দুল ফাত্তাহ বিন সোলায়মান মাশাতের নেতৃত্বে সৌদি প্রতিনিধি দলের মধ্যে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

হজ চুক্তি-২০২০-এর বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর যত প্রস্তাব: হজ চুক্তিতে আলহাজ অ্যাডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহ যে সকল প্রস্তাব তুলে ধরেন সেগুলো হলো- বাংলাদেশের হজযাত্রীর কোটা বাড়ানো, রুট টু মক্কা ইনিশিয়েটিভের আওতায় শতভাগ হজযাত্রীর ইমিগ্রেশন বাংলাদেশে সম্পন্ন করা এবং হজ শেষে দেশে ফেরার সময় জেদ্দা ও মদিনা এয়ারপোর্টে হাজি সাহেবদের ইমিগ্রেশন সহজ করা, হজযাত্রীদের হজের সফরকাল ৪২ দিনের পরিবর্তে ৩০ দিন বা আরো কম সময় নির্ধারণ করা, ভিসা প্রসেসিং সহজ করা, খাওয়া-থাকাসহ সৌদি আরবে বাংলাদেশী হাজিদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো, কালো তালিকাভূক্ত বেসরকারি এজেন্সীর তালিকা দ্রুত প্রকাশ করা, হাজিগনের জন্য বাধ্যতামূলক খাবার সরবরাহের প্রথা বন্ধ করা এবং মিনায় উন্নতমানের বাংলাদেশী খাদ্য পরিবেশন ও উন্নতমানের আবাসনের ব্যবস্থা করা, হজের সময় বাংলাদেশের আইন লঙ্ঘন করে সৌদি এয়ারলাইন্সের টিকেট বিক্রির স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া, হজযাত্রী পরিবহনে বাস সার্ভিস উন্নত করা এবং বাংলাদেশী হাজিদের জন্য ট্রেন পরিবহন এর সুবিধা বৃদ্ধি করা।

চুক্তির সময় উপস্থিত বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যগণ হলেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: আনিছুর রহমান, সৌদিআরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসি, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো: মিজানুর রহমান, কাউন্সিলর (হজ), জেদ্দার মোঃ মাকসুদুর রহমান, পরিচালক, ঢাকা হজ অফিসের পরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলাম, হজ্জ এজেন্সীজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম প্রমুখ।