ক’দিন পর ওই প্রতিযোগীরাই আমার সহকর্মী হবে, আমি কেন অপমান করবো তাদের?

SHARE

আমি কেন অপমান করবো প্রতিযোগিদের? আজ আমি যাদের বিচারক হয়ে এসেছি কাল তারা আমার সহকর্মী হবে। এক্ষেত্রে আমি কেন তাদের অপমান করবো- এতোটা বোকামি আমি কীভাবে করতে পারি?

কথাগুলো বলছিলেন কে হবেন মাসুদ রানার একজন বিচারক শবনম ফারিয়া। বুধবার রাতে কালের কণ্ঠের সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন, ‘সেখানে সব বিচারক একা আমিই ছিলাম না, আমি শুধু ব্যক্তিগতভাবে বলতে পারি আমি কাউকে অপমান করিনি। আপনারা ভিডিওগুলো খেয়াল করলে বিষয়টি ধরতে পারবেন। এক শ্রেণি শুধু স্টিল ইমেজ ছড়িয়ে বিচারকদের বিরুদ্ধে সবাইকে ক্ষেপিয়ে তোলার চেষ্টা করছে। আমি বলবো আপনারা বোঝার চেষ্টা করুন, আসলে কী ঘটেছে।’

শবনম ফারিয়া সংশ্লিষ্ট প্রশ্নই করেছেন দাবি করে বলেন, ‘আমার প্রশ্ন ছিল মাসুদ রানা নিয়ে। মাসুদ রানা নিয়ে তাদের ভিজুয়ালাইজেশন কী, মাসুদ রানাকে তারা আত্মস্থ কতটুকু করতে পেরেছে। মাসুদ রানা সিরিজের কয়টা বই পড়া হয়েছে। মাসুদ রানা সিরিজের মাসুদ রানা ছাড়া কোনো কোন চরিত্র ভালো লেগেছে, কেন ভালো লেগেছে, ইত্যাদি। আমি ওভার-অল বেশিরভাগ মাসুদ রানাকে নিয়েই ও পড়াশোনা নিয়ে প্রশ্ন করেছি।’

জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী বলেন, ‘প্রসঙ্গ ক্রমে অন্য প্রশ্ন করেছি। তবে আমি মনে করি না যে সেটা মাত্রা ছাড়িয়েছে। কিন্তু কিছু কিছু ব্যক্তি যারা একদমই অপরিচিত আমার, এরা মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। হয়রানি করে আমার ব্যক্তিগত জীবন অতিষ্ট করে তুলেছে। বাধ্য হয়ে আমি সাধারণ ডায়েরি করেছি। এরা আমার নম্বর ছড়িয়ে দিয়েছে ফেসবুকে। যার ফলে ক্রমাগত ফোন আসছিল আমার। তারা কি এতোটুকু বোঝে না, আমি একটি পরিবারে বাস করি, আমার একটি জীবন আছে?’

শবনম ফারিয়া বলেন, আমি তো কোনো প্রতিযোগিকে এমন কোনো প্রশ্ন করিনি, এমন কোনো আচরণ করিনি যে তার ব্যক্তিগত জীবনে সে ক্ষতিগ্রস্থ। এমন তো কেউ বলতে পারবে না। আর এটা আমি করতে পারবো না। আমার একটা এক্সেপটেন্স (গ্রহণযোগ্যতা) আছে। সেটা আমি যেচে নষ্ট করবো কেন? আমি বলবো না যে বিচারকার্য ঠিক হয়েছে। আমি মানছি কোনো কোনো বিচারক অনুষ্ঠান কর্তাদের নির্দেশনা রাখতে গিয়ে বেশি করে ফেলেছেন। যেটা আমাদের দেশের, আমাদের সমাজের মানুষদের গ্রহণ করার মতো মানসিক শক্তি তৈরি হয়নি। যেটা হয়নি, সেটা করাও ঠিক হয়নি। নির্দেশনা ছিল মাসুদ রানার জন্য ‘মেন্টাল স্ট্রেংথ’ যাচাই করতে হবে। কিন্তু এটা করতে গিয়ে এমন কাণ্ড কারখানা হয়ে যাবে তা ভাবিনি।

এদিকে, মাসুদ রানার প্রকল্পের অধিকর্তা ইবনে হাসান খান বলছেন, ‘পুরো বাছাই পর্বটি ছিল সাজানো। তিনি বলছেন, ‘প্রথমেই বলে নেই, এই বিচারকদের কোনো দোষ নেই। তারা প্রত্যেকেই একটি পরিকল্পিত স্ক্রিপ্টের মধ্যে (চিত্রনাট্য) থেকেই কথা বলেছেন। প্রতিযোগীদের সঙ্গে কোনো দুর্ব্যবহার করা হয়নি। কারণ, এখনও পর্যন্ত কোনো সাংবাদিক কিংবা গণমাধ্যমের কাছে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া কোনো ছেলে অভিযোগ দেয়নি। তো এই অভিযোগটা কোথা থেকে আসলো? এটা এসেছে ফেসবুক থেকে।’

ইবনে হাসান গণমাধ্যমকে বলছেন, ‘বাছাই পর্বে যা দেখেছেন, তার পুরোটাই ছিল সাজানো, চিত্রনাট্য নির্ভর। এই প্রকল্প অধিকর্তা হিসেবে বলছি, পুরোটাই চ্যানেল আইয়ের ক্রিয়েটিভ টিম, ইউনিলিভারের ক্রিয়েটিভ টিম, অ্যাডকম ক্রিয়েটিভ টিম থেকে সাজানো হয়েছে। বিচারক যারা ছিলেন তাদের উপর দ্বায় চাপানো বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। যারা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন, তাদের কাছ থেকে যদি নির্দিষ্টভাবে কোনো অভিযোগ আসে, প্রকল্প অধিকর্তা হিসেবে আমি অবশ্যই যা করণীয় হবে সেই ব্যবস্থা নেব। তারা তো কেউ বলছে না যে তারা অপমানিত হয়েছেন, অস্বস্তিবোধ করেছেন! এমন কোনো অভিযোগই তো আমি পাইনি।’

সম্প্রতি কে হবেন মাসুদ রানার বিভিন্ন এপিসোডের ভিডিও ক্লিপস সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই শুরু হয় বিচারকদের সমালোচনা।