যে মুসলিম দেশগুলোতে তিন তালাক দেওয়া যায় না

SHARE

সম্প্রতি ভারতে মুসলিমদের তিন তালাকের বিধান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এক নিশ্বাসে তিনবার তালাক বলে বিবাহবিচ্ছেদ, ফোন বা হোয়াটসঅ্যাপে ‘তালাক, তালাক, তালাক’ বলে স্ত্রী-সন্তানের ভরণপোষণের দায়মুক্ত হওয়ার দিন শেষ ভারতে। গতকাল ভারতের রাজ্যসভায় তাৎক্ষণিক তিন তালাক বিল পাশ হয়েছে ৷ শুধু ভারত নয়, বিশ্বে ২০টিরও বেশি দেশে তিন তালাক নিষিদ্ধ রয়েছে ৷

ভারতে বিরোধী দলগুলো যখন তিন তালাককে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করার বিরোধিতা করছিলেন, তখন কেন্দ্রীয় সরকারের যুক্তি ছিল, মুসলিম প্রধান দেশে তিন তালাক নিষিদ্ধ থাকলে ভারতের মতো ধর্মনিরপেক্ষ দেশে তা নয় কেন?

মুসলিম প্রধান দেশগুলোর মধ্যে মিসরে সর্বপ্রথম নিষিদ্ধ হয়েছিল এই প্রথা। দেশটিতে ১৯২৯ সালে এই প্রথা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল ৷ অন্যদিকে, ‘মুসলিম নারী পরিবার অধ্যাদেশ, ১৯৬১’ -এর মাধ্যমে পাকিস্তানে এই প্রথা রদ করা হয়।

বাংলাদেশে তালাক পদ্ধতিটি চমকপ্রদ। মূলত তিন ধাপে এখানে স্বামী-স্ত্রী বিচ্ছেদ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয় ৷ প্রথমে লিখিত নোটিশ, তারপর বিশেষ সালিশি সভায় আলোচনা, তৃতীয় ধাপে নির্দিষ্ট সময়ের পর কার্যকর হবে বিচ্ছেদ ৷ আবার, তিউনিশিয়া, সিরিয়া, জর্ডান, মালয়েশিয়া, লিবিয়া, সুদান, লেবানন, সৌদি আরব,মরক্কো, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, সাইপ্রাস, ব্রুনেই, আফগানিস্তান, আলজেরিয়া, ইরাক, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক, বাংলাদেশে এই প্রথা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

মুসলিম দেশ না হলেও শ্রীলঙ্কাতে তিন তালাক প্রথা নিষিদ্ধ। মুসলিম সমাজে মূলত তিন রকমের তালাক প্রচলিত। তালাক-এ-এহসান, তালাক-এ-হাসান এবং তালাক-এ-বিদ্দত। প্রথম দুটি হয় নির্দিষ্ট সময়-কাঠামো এবং পদ্ধতি মেনে, যেখানে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত থেকে ফিরেও আসা যায়। তৃতীয় ক্ষেত্রে পরপর তিনবার তালাক বলেই নিকাহ ভেঙে দেওয়া হয়। শুধু তৃতীয় পথটির সাংবিধানিক বৈধতা নিয়েই বিতর্ক। সাম্প্রতিক অতীতে চিঠি, ফোন, এসএমএস বা ইন্টারনেটেও তিন তালাক দেওয়ার বহু ঘটনা সামনে এসেছে।

প্রসঙ্গত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশসহ বহু মুসলিম অধ্যুষিত দেশেই তিন তালাক নিষিদ্ধ থাকলেও এতদিন ভারতের মতো ধর্মনিরপেক্ষ দেশে এই প্রথা বলবৎ ছিল।

সূত্র : ইটিভি ভারত