এক সময় ‘কাটার’ দিয়ে আলোড়ন তুলেছিলেন ক্রিকেটবিশ্বে। তবে সাম্প্রতিককালে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানের বদলে মুস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে ভাবনায় তাঁর দল বাংলাদেশ। ইনজুরি কাটিয়ে উঠেছেন, কিন্তু সেই ফর্ম অনিয়মিত। উল্টো গতি কমিয়ে প্রায়ই মাঠে দুঃসময় দেখে ফেলেন বাঁহাতি এ পেসার। তবে কার্ডিফে ভারতের বিপক্ষে গতির সঙ্গে লাইন-লেংথ খুঁজে পাওয়া ‘দ্য ফিজ’কে ঘিরে গতকাল আশার কথাই শুনিয়েছেন বাংলাদেশ দলের বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশ, সেখানে উপস্থিত ছিলেন কালের কণ্ঠর প্রতিনিধিও—
প্রশ্ন : ইংল্যান্ডে খেলা বলেই পেসারদের ঘিরে প্রত্যাশা বেশি। আপনার শিষ্যরা কেমন আছেন? অনেকেরই চোট আছে বলে শুনছি।
কোর্টনি ওয়ালশ : আমাদের হাতে রবিবার পর্যন্ত সময় আছে। তাতে কিছুটা সময় পাচ্ছি। আগের ম্যাচে (ভারতের বিপক্ষে) ব্যথা অনুভব করায় সাইফ উদ্দিনকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। ও সেরেও উঠছে। দেখি কাল (আজ) ফিজিও কী বলে। ম্যাশেরও (মাশরাফি বিন মর্তুজা) ব্যথা আছে। আজ তাই প্র্যাকটিসে বেশি কিছু করছে না। তবে ফিজের সমস্যা অত বড় নয়, এটা নিয়ে বোলিং করতে পারবে। আজকে বোলিংও করেছে। কালও করবে হয়তো। রবিবারের ম্যাচের আগে পুরো ফিট করে তুলতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা আমার নেব।
প্রশ্ন : ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে মুস্তাফিজের বোলিং আপনাকে কতটা আশাবাদী করছে? গতি বাড়িয়ে দারুণ জায়গায় বোলিং করেছিলেন তিনি।
ওয়ালশ : আমারও তাই মনে হয়েছে। ফিজ চোট পাওয়ার প্রথম দিন থেকেই বলে আসছি যে এ অবস্থা থেকে ম্যাচ ফিট হতে সময় লাগবে। ওর যতটা উন্নতি হচ্ছে তাতে আমি আশা করি সে সঠিক পথেই এগোচ্ছে। অনেককেই বলতে শুনি ফিজ আর আগের মতো বোলিং করতে পারবে না। তাদের জন্য বলছি, ক্রিকেটারের জীবনে ভালোর সঙ্গে মন্দ দিনও আসবে। ইনজুরির পর মানসিক এবং শারীরিকভাবে আগের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে ও। এর সঙ্গে আত্মবিশ্বাসও ফিরে আসবে। মনে রাখবেন, ফিজের ওটা মামুলি কোনো চোট ছিল না। তবে ভালো লাগছে যে ও ঠিক পথেই এগোচ্ছে। আমি আশাবাদী বিশ্বকাপ যত এগোবে, ততই উন্নতি করবে ফিজ।
প্রশ্ন : বিশ্বকাপ তো সব ক্রিকেটারের জন্যই অনুপ্রেরণা। মুস্তাফিজের সামনে তো দারুণ সুযোগ বিশ্বকে আরেকবার জোর ঝাঁকুনি দেওয়ার।
ওয়ালশ : বিশ্বকাপে ফিজ যদি নিজের সেরাটা দিতে পারে তবে সেটা দলের এবং ওর নিজের জন্যও দারুণ ব্যাপার হবে। হালকা চোট আছে। ও ৯০-৯৫ ভাগ ফিট হলেও আমি খুশি। কারণ ওর বোলিংয়ের উন্নতি অবিশ্বাস্য গতিতে হচ্ছে। কঠোর পরিশ্রম করছে। উন্নতির জন্য ও যেকোনো কিছু করতে তৈরি। ওর সুসময়ে ফেরা দেখে খুব ভালো লাগছে।
প্রশ্ন : পেস বোলিং র্যাংকে মাশরাফির সঙ্গে মুস্তাফিজ নিশ্চিত। কিন্তু তৃতীয় পেসার হবেন কে, রুবেল হোসেন নাকি সাইফ উদ্দিন?
ওয়ালশ : বিশ্বকাপে আসার আগে খুব বেশি ম্যাচ খেলেনি রুবেল। আমার মনে হয় তিন পেসার নিয়ে খেললে তাদেরই প্রাধান্য দেওয়া হবে যারা সাম্প্রতিককালে বেশি ম্যাচ খেলেছে। তবে সাইফ উদ্দিন চোটে পড়েছে। ম্যাচে ফিট খেলোয়াড় নামানো জরুরি। অবশ্য এটা নির্বাচকদের ব্যাপার। আমার কাজ হলো সব পেসারকে তৈরি রাখা। তবে এটা তো দারুণ ব্যাপার যে বোলিংয়েও আমাদের হাতে বিকল্প রয়েছে।
প্রশ্ন : আয়ারল্যান্ড সফর মিলিয়ে এক মাস হলো প্রস্তুতিতে আছে বাংলাদেশ, ত্রিদেশীয় সিরিজ জিতে আত্মবিশ্বাসীও এখন। সব মিলিয়ে বিশ্বকাপ প্রস্তুতি নিয়ে আপনি কতটা সন্তুষ্ট?
ওয়ালশ : আগেভাগে এখানে এসে পড়ার প্রধান কারণ ছিল ঠাণ্ডার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া। আয়ারল্যান্ডে আমরা ক্রিকেটটাও খুব ভালো খেলেছি। কার্ডিফে বাজে আবহাওয়ার কারণে খুব বেশি কিছু করা হয়নি, দুটির জায়গায় মাত্র একটি ম্যাচ খেলতে পেরেছি। এরপর দল বিশ্রামও পেয়েছে। আমার তো মনে হয় আমাদের ওয়ার্ল্ড কাপ বিল্ডআপটা খুব ভালো হয়েছে।
