তিন বছর আগে খুন হওয়া সাংবাদিক দম্পত্তি গোলাম সারোয়ার সাগর ও মেহেরুন্নেসা রুনি ব্যবহৃত ল্যাপটপের সন্ধানে নেমেছে র্যাব। গত ২৫ নভেম্বর বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) কাছে ল্যাপটপের খোঁজ চেয়ে লিখিত আবেদন করেছে র্যাব।
আবেদনে ল্যাপটপের আইপি অ্যাড্রেস (১৭২.২০.৩৫.১০৭) এবং ম্যাক মাদারবোর্ড নম্বর (০০:২৪:৫৪:ই৬-এ৩-এ৪) উল্লেখ করা হয়েছে।
র্যাবের তদন্ত ও ফরেনসিক বিভাগের সহকারি পরিচালক ওয়ারেস আলী মিয়া বলেন, “সাংবাদিক দম্পতির ল্যাপটপের সন্ধান চেয়ে বিআরটিসি’র কাছে আমরা লিখিত আবেদন জানিয়েছি। এটি পাওয়া গেলে তদন্তে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হতে পারে।”
মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা ওয়ারেস বলেন, “আমরা আশা করছি ল্যাপটপটির সন্ধান পাওয়া গেলে নতুন অনেক তথ্য পাওয়া যেতে পারে।” কী ধরনের তথ্য পাওয়া যেতে পারে প্রশ্ন করা হলে এবিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ওই কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, “তদন্ত শেষ না হওয়ার আগে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা যাবে না।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিআরটিসি ইঞ্জিনিয়ারিং ও অপারেশন বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, গত মাসে আমরা র্যাবের চিঠি পেয়েছি।
ল্যাপটপ পাওয়ার বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করে তিনি বলেন, “ল্যাপটপ উদ্ধারে আমরা এখনো কোনো কাজ শুরু করতে পারিনি।”
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে নিজ বাসায় সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হন মাছরাঙা টেলিশিনের বার্তা সম্পাদক সাগর ও এটিএন বাংলার সিনিয়ির সাংবাদিক রুনি। খুনের পরই শেরে বাংলা থানায় একটি মামলা দাযের করেন নিহত রুনির ভাই নওশের আলম রোমান। খুনের চারদিন পর মামলাটি শেরে বাংলা থানার গোয়েন্দা বিভাগে হস্তান্তর করা হয়। দুই মাস তদন্ত করে ডিবি পুলিশের ব্যর্থতার পর মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় র্যাবকে। ১৮ এপ্রিল হাইকোর্টের নির্দেশে মামলাটি তদন্তের জন্য র্যাবকে দায়িত্ব দেয়া হয়।
মামলার অগ্রগতি বিষয়ে ওয়ারেস আলী বলেন, “মামলাটির তদন্তের অগ্রগতি মাঝামাঝি পর্যায়ে রয়েছে।”
তদন্তে কত সময় লাগতে পারে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তদন্তে কত সময় লাগবে তা ঠিক করে বলা যাবে না। তবে আমরা আশাবাদী।”
মামলার তদন্ত নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে সাগর-রুনি পরিবারের সদস্যরা। রুনির ভাই নওশের আলম রোমান বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে মামলাটির তদন্ত করছে র্যাব। কিন্তু এখনো দৃশ্যত কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।”
গত বছর মামলার অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে র্যাব।অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৩০ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত। গত ৯ নভেম্বর আদালত তারা আদেশে বলেন, মামলার তদন্তের বর্তমান পরিস্থিতি বিষয়ে জানা প্রয়োজন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য তদন্ত শেষের একটা সময় প্রয়োজন। আদালত তদন্তকারী কর্মকর্তাকে আগামী ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে তদন্তের বিস্তারিত ও সার-সংক্ষেপ উপস্থাপনের কথা বলা হয়েছে।–ঢাকা ট্রিবিউন।