অর্থপাচার দেশে কোনো প্রভাব ফেলবে না: পরিকল্পনামন্ত্রী

SHARE

বাংলাদেশ থেকে অর্থপাচারের বিষয়টি সরকারের নজরদারিতে আছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্ট্রিগ্রেটি-জিএফআই এর প্রতিবেদন নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী জানান, দেশের অর্থনীতিতে অর্থপাচার প্রভাব ফেলবে না। অর্থপাচার ঠেকাতে বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআর, দুদকের মত প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বমন্বিতভাবে কাজ করার পরামর্শ বিশ্লেষকদের।

সোমবার ওয়াশিংটন ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা জিএফআই ২০০৬ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ১৪৮ টি দেশের অর্থপাচারের প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালের এক বছরেই বাংলাদেশ থেকে পাচার হয় ৫ শ’ ৯০ কোটি মার্কিন ডলার বা প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। পাচারের অর্থের বেশিরভাগই গেছে আমদানি-রফতানির বাণিজ্যের আড়ালে । ১৫ সালের আগের এগারো বছরের পাচার হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৮৬ হাজার কোটি টাকা। যদিও ২০১৪ সালের তুলনায় ২০১৫ তে কিছুটা কমেছে।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানালেন, অর্থপাচার রোধে এরইমধ্যে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বিষয়টি আমাদের এটা নজরে আছে। আমার বিশ্বাস কর্তৃপক্ষ যারা আছেন তারা বিষয়টি দেখছেন। ট্র্যাকিং করার জন্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সসিয়াল ইন্টিলিজেন্ট ইউনিট রয়েছে। ব্যাংকগুলোর উপর নির্দেশনা আছে যে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকার চেক পেলে, জানতে চাইবেন কোথায় পেলেন ব্যাখ্যা দিন। নানা ভাবে আমরা এইগুলো করছি।

অর্থপাচারের এমন চিত্রে উদ্বেগ জানিয়েছে টিআইবি। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড.ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আমরা মনে করি যে সরকার যদি সক্রিয় উদ্যোগী হয়, যদি সৎ সাহস থাকে তাহলে অবশ্যই কোন ব্যক্তি পরিচয় বিষয় নয়। আর যদি অভিযান চালায় তাহলে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনাসহ এর সাথে জড়িত সবাইকে বিচারে আওতায় আনবে।’

জিএফআই এর এবারের প্রতিবেদন তৈরিতে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। বাংলাদেশের আমদানি বাণিজ্যে বড় অংশীদার ভারত ও চীনের মত উন্নয়নশীল দেশ। তাই এই প্রতিবেদনে সামগ্রিক চিত্র ফুটে ওঠেনি। তবে, নানাভাবে অর্থপাচার রোধে সতর্ক অবস্থানে থাকতে হবে বাংলাদেশকে।

অর্থনীতিবিদ তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘যে আমদানি আমরা করি তার প্রায় ৭০ শতাংশ মতো করি যেটাকে আমরা বলি ডেভেলপমেন্ট দেশের সাথে। ফলে এ ধরনের তথ্য কিন্ত এটার ভিতরে আসেনি। ফলে এক দিক থেকে আমি বলবো এটা একটা আংশিক হিসাব। যা সরকার অনেকগুলো এজেন্সি যুক্ত আছে। আর তাদের মধ্যে এক ধরনের সমন্বয় দরকার। আমাদের দুদক, কাস্টমস, বডারগার্ড, এনবিআরসহ অন্য সব প্রতিষ্ঠানকে সম্মিলিত ভাবে কাজ করার প্রবণতা থাকতে হবে।’

অর্থপাচার নিয়ে করা ওই প্রতিবেদনে দেখা যায়, এশিয়ার ৩০ টি দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ মালয়েশিয়া থেকে পাচার হয়েছে ৩ হাজার ৩শ’ কোটি ডলারের বেশি। প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে পাচার হয়েছে ৯শ’ ৮০ কোটি ডলার।